Advertisement
E-Paper

খেলোয়াড়ের অভাবে ধুঁকছে ভলিবল

খেলোয়াড়ের অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে শিলিগুড়ির ভলিবল। ক্রিকেট-ফুটবলের দাপটে কোণঠাসা এই খেলাটিতে ইদানীং আর নতুন খেলোয়াড়ই আসছে না বলে আক্ষেপ ক্রীড়াপ্রেমীদের। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে গত মরসুমে খেলোয়াড় না থাকায় শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ আয়োজিত লিগের খেলাই বাতিল বলে ঘোষণা করতে বাধ্য হন ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃপক্ষ।

সংগ্রাম সিংহ রায়

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৪

খেলোয়াড়ের অভাবে বন্ধ হয়ে যেতে বসেছে শিলিগুড়ির ভলিবল। ক্রিকেট-ফুটবলের দাপটে কোণঠাসা এই খেলাটিতে ইদানীং আর নতুন খেলোয়াড়ই আসছে না বলে আক্ষেপ ক্রীড়াপ্রেমীদের। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে গত মরসুমে খেলোয়াড় না থাকায় শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ আয়োজিত লিগের খেলাই বাতিল বলে ঘোষণা করতে বাধ্য হন ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃপক্ষ।

দু’টির বেশি ক্লাব যোগই দিতে আসেননি। এবারও এখনও কোনও ক্লাব দল গুছিয়ে উঠতে পারেনি। তাই খেলা হবে কিনা তা বিশবাঁও জলে। অথচ ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে কেউ ভলিবল খেলতে চাইলে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। খেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখতে গ্রামাঞ্চল থেকে খেলোয়াড় সংগ্রহ করতে নেমেছে ক্রীড়া পরিষদ। এটাই এখন শেষ ভরসা ভলিবলপ্রেমীদের কাছে। এই উদ্যোগও ব্যর্থ হলে চিরতরে হারিয়ে যেতে পারে শিলিগুড়ির ভলিবল বলে আশঙ্কায় ক্রীড়াপ্রেমীরা।

শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ ভলিবল নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি পাড়া-গাঁয়ের শখের খেলোয়াড়দের নিয়ে এসে লিগে খেলাতে চাইছেন। তিনি বলেন, “শিলিগুড়ির গ্রামাঞ্চলের মানুষ স্টেডিয়াম চত্বরে আসতে দ্বিধা বোধ করে। তাঁদের কাছে গিয়ে খেলোয়াড় সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের নিয়ে এসে বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড় হিসেবে নথিভুক্ত করে খেলানো হবে।”

চলতি মরসুমে মাত্র দু’টি ক্লাব ভলিবল খেলতে চেয়ে নথিভুক্ত করেছে। শিলিগুড়ি কিশোর সঙ্ঘ ও ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ক্লাব। এছাড়া অন্যান্য বছর যোগ দেওয়া কোনও ক্লাবই এগিয়ে আসেনি। কিশোর সঙ্ঘের এক কর্মকর্তা রবীন মজুমদার বলেন, ‘ক্রিকেট ও ভলি খেলি। তাই খেলোয়াড় জোগাড়ের দায়িত্বও আমাদের। অন্য দলগুলি কেন খেলতে এল না তা বুঝতে পারছি না।”

তবে খেলার চল যে কমছে, তা স্বীকার করেছেন তিনি। ফ্রেন্ডস ইউনিয়নের সদস্য তথা ক্রীড়া পরিষদের ভলিবল সচিব স্বরাজ সূত্রধর বলেন, “আমাদের ভলির দল রয়েছে। কিন্তু অন্য ক্লাবগুলি সম্পর্কে বলা কঠিন। ভলি খেলার খরচও অনেক কম। তাই এতে সুবিধা রয়েছে। তবে প্রতিবার যোগ দেওয়া ক্লাব দাদাভাই স্পোর্টিংয়ের প্রতিনিধি অচিন্ত্য গুহ তাঁদের দলে খেলোয়াড় নেই বলে মানতে চাননি। তিনি বলেন, “ক্রীড়া পরিষদ খেলা চালায়নি। তাই অংশ নিইনি। পরিষদ খেলালেই খেলব।”

কিন্তু এইভাবে কি একটা খেলাকে বাঁচানো সম্ভব?

মানুষের মধ্যে উৎসাহ না থাকলে খেলা চালানো মুশকিল বলে প্রশ্ন তুলছেন শহরের ক্রীড়ামোদীরাই। তাঁদের মতে শহরে একটিও ভলিবল প্রশিক্ষণ শিবির নেই। পাড়ায় পাড়ায়, আগে সন্ধে হলেই ভলিবলের আসর বসত। এখন সেই জায়গা নিয়েছে ব্যাডমিন্টন। ক্রিকেট আর ফুটবলের দাপট তো রয়েইছে। এক ক্রীড়াপ্রেমী সম্বিত সরকার বলেন, “কিশোর-যুবকেরা যদি টিভি খুলে দেখে, দেশের হয়ে না খেলেও কাউকে কোনও দল ১৬ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নিচ্ছে, তাহলে অন্য খেলায় ঝুঁকবে তেন সে?

তবে ক্রীড়া পরিষদ সচিবের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন ভলিবল খেলোয়াড় সঞ্জীব পাল। তিনি বলেন, “অরূপবাবুর উদ্যোগ ভাল। এতে অনেকে নতুন করে খেলার উৎসাহ পাবে। তবে নিয়মিত খেলার চর্চার ব্যবস্থা করা দরকার।”

ক্রীড়া পরিষদ সচিব বলেন, “ক্রীড়া পরিষদের পক্ষ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম চত্বরে কোচ দিয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেব।” এখন শুধু খেলোয়াড়দের রাজি হওয়ার অপেক্ষা।

volleyball sangram singha roy siliguri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy