নিয়ন্ত্রিত বাজারে মজুরি অসন্তোষের জেরে কাজ বন্ধ রাখা নিয়ে, চাপের মুখে পিছু হটল আইএনটিটিইউসি। রবিবার শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, সংগঠনের সব সদস্য আজ সোমবার থেকে কাজে যোগ দেবেন। তারা যে বন্ধ বিরোধী তাও এ দিন জানানো হয়েছে। গত ২২ জুলাই নিয়ন্ত্রিত বাজারের শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির নির্দেশ দেন বাজার কমিটির সভাপতি তথা শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া। তবে পণ্য ওঠানো এবং নামানোর ক্ষেত্রে এক ধাক্কায় ৮০ শতাংশ মজুরি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করে নানা ব্যবসায়ী সংগঠন মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হন। এর পরে গত ৩০ জুলাই ফের একটি নির্দেশ পাঠিয়ে মজুরি বৃদ্ধি আপাতত স্থগিত থাকার কথা জানানো হয়। আগামী মঙ্গলবার সকলকে নিয়ে বৈঠক ডেকে মজুরির নতুন হার স্থির করা হবে বলে মহকুমাশাসক জানান। এরপরেই বেঁকে বসে আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন। বর্ধিত হারে মজুরি না দিলে শ্রমিকরা কাজ করবে না বলে ঘোষণা করা হয়। এর জেরেই অচলাবস্থা তৈরি হয় নিয়ন্ত্রিত বাজারে।
এই ঘটনায় শাসক দলের শ্রমিক সংগঠনই সরকারি নির্দেশ মানছে না বলে অভিযোগ। সরকারি নির্দেশ মেনে যে ব্যবসায়ীরা পুরোনো হারে মজুরি দেন গত বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের পণ্য ওঠানো-নামানো বন্ধ হয়ে যায়। বাজারে শ্রমিক সংখ্যা আড়াই হাজার। এর সিংহ ভাগই আইএনটিটিইউসির সংগঠনে বলে জানা গিয়েছে। সিটু এবং ইনটাকও আন্দোলনে সামিল হয় বলে জানা গিয়েছে। সিটুর তরফে গত শনিবারই বাজারে বন্ধ হচ্ছে না বলে দাবি করা হয়। এ দিকে, চার দিন ধরে নিয়ন্ত্রিত বাজার বন্ধ থাকায় শিলিগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় পণ্যের জোগান কমে আসে। বাজারগুলিতে দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।
সংগঠনের জেলা সভাপতি অরূপ রতন ঘোষ এ দিন বলেন, “সোমবার থেকে সংগঠনের সকলে কাজে যাবেন। আমরা বন্ধের বিরোধী। আলোচনার মাধ্যমে মজুরি নিয়ে সমাধান চাই।” একই সঙ্গে অরূপবাবুর দাবি, “বাজারে বন্ধ হয়নি। একবার বেশি মজুরি পেয়ে পরে ফের কম হারে মজুরি কেউ নিতে চাইবে না এটাই স্বাভাবিক। অনেক শ্রমিক স্বেচ্ছায় কাজে যাননি। সংগঠনের তরফে কোনও নিষেধ বা নির্দেশ ছিল না।”
এ দিকে বাজারে কাজ বন্ধ থাকায় ট্রাকে বোঝাই আম, কলা সহ সব্জি পচে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। শিলিগুড়ির ফল ও সব্জি কমিশন এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর এক সদস্য পার্থ চক্রবর্তী বলেন, “প্রতিদিন ২৫০ টন আম শিলিগুড়ি বাজারে আসে। অন্য ফলও প্রচুর আসে। পচে যাওয়ার আশঙ্কায় বাড়তি মজুরি দিয়ে সেগুলি ট্রাক থেকে নামানো হয়েছে। দাম বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আদা ব্যবসায়ী সংগঠনের সদস্য গোবিন্দ সিংহ বলেন, “চার দিন ধরে স্বাভাবিক সরবরাহের অর্ধেকের কম পরিমাণে সরবরাহ হচ্ছে। দু’দিন এমন চললে আনাজ সঙ্কট দেখা যাবে।”
শ্রমিকদের দাবি, ২০১০ সালের পরে মজুরি বাড়েনি। জিনিসের দাম বাড়ায় তাঁদের সংসার চালাতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বর্তমানে যে হারে মজুরি মিলছে তাও সামান্য বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। মহকুমা প্রশাসন জানিয়েছে, সবপক্ষকে নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে, নতুন মজুরি হার স্থির করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy