শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হলেন আলু ব্যবসায়ীরা। ভিন্ রাজ্যে আলু রফতানি বন্ধ করার সরকারি নির্দেশ জারি হওয়ার পরে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করেন আলু ব্যবসায়ীরা। অনির্দিষ্টকালের জন্য হিমঘর থেকে আলু বার না করার সিদ্ধান্ত নেন। বাজারে আলুর দাম ক্রমশ বাড়তে শুরু করে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব উত্তরকন্যায় বৈঠক করে আলুর দাম কমানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কড়া মনোভাবের কথা ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেন। এর পরে আন্দোলন বন্ধ করে সরকার নির্ধারিত ১৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করার লক্ষে স্থানীয় বাজারের চাহিদার থেকে বেশি পরিমাণে আলু বাজারে ছাড়ার কথা জানিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সংগঠন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকারকে এ কথা জানিয়ে দেন। বিকেলে ধূপগুড়িতে কয়েকজন আলু ব্যবসায়ী জানান, উত্তরবঙ্গের হিমঘরগুলিতে এখনও পর্যন্ত যত আলু রয়েছে, তার অর্ধেক আলু স্থানীয় চাহিদা পূরণ করবে। আগামী তিন মাস সরকারের সঙ্গে সংঘাত করা হলে আলোচনার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সে জন্য স্থানীয় বাজারে ১৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি শুরু করার পর সরকারকে ভিন রাজ্যে আলু রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হবে।
এ দিন পর্যন্ত ধূপগুড়ির বাজারে ২১ টাকা কিলো দরে আলু বিক্রি হয়েছে। চাহিদার তুলনায় আলুর জোগান কম থাকায় বেশি দামে খুচরো ব্যবসায়ীদের আলু কিনতে হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক দাস বলেছেন, “সরকার বাজারে যাতে কম দামে আলু বিক্রি হয় তা চাইছে। আমরা সমস্ত রকম বন্ধ তুলে দিয়ে হিমঘর থেকে স্থানীয় বাজারে আলু পাঠাব। তাতে আলুর দাম কমবে।” আলু ব্যবসায়ীদের অপর সংগঠন ধূপগুড়ি আলু ব্যবসায়ী সমিতি উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। গত কয়েক দিন ধরে তারা সরকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বললেও অপর সংগঠনের আন্দোলনের তীব্র বিরোধিতা করছিলেন। তবে তাঁরাও শনিবার থেকে ধূপগুড়ি বাজারে স্টল খুলে ১৪ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হবে বললে জানিয়ে দিয়েছেন।
ধূপগুড়ি আলু ব্যবসায়ী সমিতির নেতা স্বপন দত্তের বক্তব্য, “আমরা ছোট ব্যবসায়ী। সারা দেশে আলু উৎপাদন কম হওয়ায় এ বার দাম বাড়বে। রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করবে, তা অনুমান করে কিছু ব্যবসায়ী আগেই অসমে আলু মজুত করেন। সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারির পরে সরাসরি তাঁরা সংঘাতে যান। সমস্যা বাড়ে। এটা তাদের পূর্ব পরিকল্পিত আন্দোলন বলে আমাদের সন্দেহ।” কার্তিকবাবুরা দাবি করেছেন, অসমে আলু মজুত রাখা বা পূর্ব পরিকল্পিত আন্দোলন করার অভিযোগ ভিত্তিহীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy