সিভিক ভলান্টিয়ারকে চড় মারার অভিযোগে আইনজীবীকে ধরেছিল পুলিশ। মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার পরে সভা করে থানার আইসি এবং ঘটনার তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে পাল্টা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিল জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার জরুরি সভা করে ওই সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাসোসিয়েশন। অভিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে গত শুক্রবার জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এদিন সভা শেষে বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা চড় মারার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে পাল্টা হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। শুধু তাই নয় তাঁদের আরও অভিযোগ, কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার ব্যাপারে শীর্ষ আদালত যে নিয়ম মানতে নির্দেশ দিয়েছে তা পুলিশ মানেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত গত শুক্রবার দুপুর নাগাদ শহরের বাবুপাড়ায় একটি স্কুলের সামনে বাইক দাঁড় করানো নিয়ে আইনজীবী দ্রুতি রায় এবং সিভিক ভলেনটিয়ার বিজয় মোহান্তর মধ্যে বচসা বাঁধে। দ্রুতিবাবুর সঙ্গে তাঁর পেশায় শিক্ষিকা স্ত্রী ছিলেন। অভিযোগ, ওই সময় তাঁরা সিভিক ভলেন্টিয়ার কর্মী বিজয়কে চড় মারেন। ঘটনার পরে বিজয় দুজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ আইনজীবী এবং তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দানের অভিযোগে ৩৫৩, ১৮৬, ৫০৬ এবং ৫৪ ধারায় মামলা রুজু করে। ওই দিন দুপুরের পরে অভিযুক্ত আইনজীবীকে থানায় ডেকে পাঠানো হয়। তিনি থানায় পৌঁছলে তাঁকে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা থানায় ছুটে যান। সংস্থার সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরীর দাবি, “কাউকে গ্রেফতারের নির্দিষ্ট পদ্ধতি আছে। কথা বলার জন্য থানায় ডেকে এনে গ্রেফতার করা যায় না। নোটিস দিতে হয়।”
কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শুক্রবার ‘বন্ড’ দিয়ে দ্রুতিবাবুকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ওই ঘটনা নিয়ে অভিযুক্ত আইনজীবী এবং অভিযোগকারী সিভিক ভলেনটিয়ার কর্মী বিজয় মোহন্ত মুখ খোলেননি। দ্রুতিবাবু বলেন, “যা বলার বার অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা বলবেন।” বিজয় বলেন, “পুলিশ কর্তারা সবই জানেন। তাঁরা বলবেন।”
বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অবশ্য অনেক কথাই জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন, “শুক্রবার থানার আইসি’র কথাবার্তা ছিল বিস্ময়কর। পুলিশ বর্বরোচিত আচরণ করেছে। সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মী আমাদের সংগঠনের সদস্যকে হেনস্থা করে পাল্টা মামলা করেছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ওঁকে আইন মেনে ছাড়িয়ে এনেছি।” তিনি জানান, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার তাঁরা আলোচনায় বসেন। সেখানে দুজন প্রবীণ আইনজীবীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, “শুধু একজন আইনজীবী নয় শহরে প্রতিদিন সাধারণ মানুষকে একই হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। ওই কারণে আলোচনায় বসে কোতোয়ালি থানার আইসি সহ দুজন অফিসারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোতোয়ালি থানার আইসি ওই বিষয়ে মুখ খোলেননি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “আইন মেনে সব কাজ হয়েছে। আইনজীবীদের সংগঠন থেকে বন্ড দিয়ে অভিযুক্তকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। এর পরে কেন আইন না মানার প্রশ্ন উঠছে? এখন আমরা চার্জশিট দেব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy