Advertisement
E-Paper

টাকা দিয়েও বিদ্যুৎ নেই, ক্ষুব্ধ চাষিরা

প্রায়ই কৃষি দফতরের অফিসে সাত সকালে হাজির হয়ে যাচ্ছেন ফাঁসিদেওয়ার খুনিয়াপুকুরের নয়ন মোহন্ত বা খড়িবাড়ির দুলাল জোতের তিমিলাল সিংহরা। আবার কোনও দিন চলে আসছেন খড়িবাড়ির ভজনপুরের ললিত সিংহ বা অধিকারির ফুলচান রায়। দফতরের আধিকারিকদের কাছে তাঁদের প্রশ্ন, “স্যার কবে সেচের জন্য বিদ্যুতের সংযোগ পাব? মিটার ঘর তৈরি হলেও সংযোগ দিচ্ছে না বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির লোকেরা। আপনারা একটু দেখুন। আর ২-৩ মাসের মধ্যেই তো শুখার দিন শুরু হয়ে যাবে। নইলে আবার সমস্যায় পড়তে হবে।’’ এরই মধ্যে কয়েক দফায় এলাকার ফামার্স ক্লাব বা জয়েন্ট লায়েবিলিটি গ্রুপের সদস্যরা দফতরে হইচইও করছেন।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৪ ০২:২৩

প্রায়ই কৃষি দফতরের অফিসে সাত সকালে হাজির হয়ে যাচ্ছেন ফাঁসিদেওয়ার খুনিয়াপুকুরের নয়ন মোহন্ত বা খড়িবাড়ির দুলাল জোতের তিমিলাল সিংহরা। আবার কোনও দিন চলে আসছেন খড়িবাড়ির ভজনপুরের ললিত সিংহ বা অধিকারির ফুলচান রায়। দফতরের আধিকারিকদের কাছে তাঁদের প্রশ্ন, “স্যার কবে সেচের জন্য বিদ্যুতের সংযোগ পাব? মিটার ঘর তৈরি হলেও সংযোগ দিচ্ছে না বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির লোকেরা। আপনারা একটু দেখুন। আর ২-৩ মাসের মধ্যেই তো শুখার দিন শুরু হয়ে যাবে। নইলে আবার সমস্যায় পড়তে হবে।’’ এরই মধ্যে কয়েক দফায় এলাকার ফামার্স ক্লাব বা জয়েন্ট লায়েবিলিটি গ্রুপের সদস্যরা দফতরে হইচইও করছেন।

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ২০১০ সালে চাষিরা একাকালীন ৩১৪৪ টাকা জমা করলেই সেচের জন্য ওই সংযোগ পেতেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে রাজ্য সরকার নতুন নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেয়, সংযোগের জন্য এবার থেকে সব টাকা দেবে কৃষি দফতর। আবেদনকারীর জমির নথিপত্র খতিয়ে দেখে কৃষি দফতর বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানিতে নামের তালিকা এবং মাথা পিছু ৮ হাজার টাকা করে জমা করলেই মিলবে সংযোগ। তবে চাষিদের কেবলমাত্র মিটার ঘর এবং মেইন সুইচের ব্যবস্থা করে রাখতে হবে। সেই মতন ওই দুই ব্লকের আবেদনকারী ১৯৪ জনের মধ্যে ১১৯ জনের টাকা গত জানুয়ারি মাসেই কৃষি দফতর জমা করে দেয়। কিন্তু এখনও সংযোগ মিলিছে মাত্র ১৯ জনের।

দার্জিলিং জেলার ওই দুই ব্লকের সহ কৃষি অধিকর্তা মেহফুজ আহমেদ বলেন, “১৭ জুলাই বিদ্যুৎ বন্টন দফতরে ফের চিঠি দিয়ে সব জানানো হয়েছে। আশা করি, সংস্থার কর্তারা বিষয়টি দেখবেন।” এই প্রসঙ্গে বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির শিলিগুড়ির জোনাল ম্যানেজার অশোক কুমার সিংহ বলেন, “কিছু সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে মিটার ঘর তৈরি না হওয়ার মত কিছু সমস্যাও রয়েছে। সেগুলি আমরা জানিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, দ্রুত সংযোগ দেওয়ার কাজ হবে।”

চাষিদের অবশ্য অভিযোগ, “বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির একাংশ অফিসার কর্মীদের গাফিলতির জন্যই দুই ব্লক জুড়ে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এলাকায় ঠিকমত না ঘুরেই নানা অছিলায় সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। মিটার ঘর তৈরি হলেও তা না দেখেই নেই বলা হয়েছে। এ ছাড়া কোথাও কোথায় তার, পিলার ফেলে রেখেও কাজ করা হয়নি।” দুই ব্লকের চাষিরা জানান, বোরো ধান চাষে এ বার সেচের জন্য মিলবে আশা করা হয়েছিল। তা মেলেনি। আবার নভেম্বর থেকে শুখার মরসুম। আমন ধান লাগানো হচ্ছে। এখনও সেচের সমাধান হল না। আবার কয়েকটি সংযোগ দেওয়া হলেও নির্দিষ্ট হারে বিল না নেওয়ার মতো অভিযোগও চাষিরা তুলেছেন। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি শিলিগুড়ি সাব আর্বান ডিভিশনের কর্তারা মনে হচ্ছে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না বলে এলাকার চাষিদের অভিযোগ।

কৃষি দফতরের চাষিদের নিয়ে তৈরি খড়িবাড়ি ব্লক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান অনাদি ভূষণ বর্মন বলেন, “আমি সংযোগের পর একটি বিলও পেয়েছি। কিন্তু তা দেখে মনে হচ্ছে ইউনিট প্রতি বেশি বিল নেওয়া হয়েছে। কৃষি দফতরের কর্তারা বন্টন কোম্পানিতে যোগাযোগ করতে বলেছেন।” এই সংযোগে প্রতি ইউনিট পিছু ৪ টাকা করে ধার্য করার কথা বন্টন কোম্পানির। কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ধান, পাট, চা, আনারস, সব্জি মিলিয়ে খড়িবাড়ি ব্লকে ১২ হাজার হেক্টর এবং ফাঁসিদেওয়া ব্লকে ১৮ হাজার হেক্টরে চাষাবাদ হয়। এরমধ্যে মাত্র পাঁচ শতাংশ জমি কেবলমাত্র সেচের আওতায় রয়েছে।

no electricity electricity bill paid farmers angry kaushik chowdhury fashidaoa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy