Advertisement
০৬ মে ২০২৪

তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সভাপতির ইস্তফা

তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরতে চেয়ে ইস্তফা পত্র পাঠালেন দিব্যেন্দু সমাজদার। শুক্রবার রাতে তিনি সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্রের কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছেন। জেলায় শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও তার জেরে প্রাথমিক স্কুল সংসদের জারি করা শিক্ষকদের বদলির নির্দেশকে কেন্দ্র করে বির্তকের জেরেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৪ ০১:২৯
Share: Save:

তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরতে চেয়ে ইস্তফা পত্র পাঠালেন দিব্যেন্দু সমাজদার। শুক্রবার রাতে তিনি সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব এবং জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্রের কাছে ইস্তফা পত্র পাঠিয়েছেন।

জেলায় শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও তার জেরে প্রাথমিক স্কুল সংসদের জারি করা শিক্ষকদের বদলির নির্দেশকে কেন্দ্র করে বির্তকের জেরেই তিনি ইস্তফা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ দিন দিব্যেন্দুবাবু ব্যক্তিগত কারণেই সরে দাঁড়াতে চেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে ওই বদলির নির্দেশে কোনও অনিয়ম ছিল না বলেও এ দিন তিনি দাবি করেছেন। সম্প্রতি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে বদলির নির্দেশ ঘিরে জেলায় শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। গত মার্চ মাসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ৩১২ জন প্রাথমিক শিক্ষকের বদলির নির্দেশ জারি করে। লোকসভা ভোটের আচরণ বিধি চলতে থাকার কারণে সে সময়ে বদলির নির্দেশ সাময়িক স্থগিত রাখে জেলা প্রশাসন। এরপরে বদলি নিয়ে লেনদেনের অভিযোগ তোলেন খোদ জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লববাবু। দলীয় সূত্রের খবর, ওই অভিযোগের জেরেই জেলা প্রাথমিক স্কুল সংসদের চেয়ারম্যানের পদ থেকে তপনের তৃণমূল বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এই নির্দেশকে শাস্তিমূলক বলে দাবি করেন শাসক দলের জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠ নেতারা। এরপরে চলতি সপ্তাহে স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে নির্দেশ পাঠিয়ে বাচ্চুবাবুর সময়ে নেওয়া বদলির নির্দেশকে বাতিল করা হয়। রাজ্য থেকেই বদলি প্রক্রিয়া সারা হবে বলে জানানো হয়।

সে সময় অবশ্য বদলির নির্দেশে কোনওরকম লেনদেন জড়িত নয় বলে দাবি করে বাচ্চু হাঁসদার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দুবাবু। তার জেরেই একদা ‘ঘনিষ্ঠ’ দিব্যেন্দুবাবুর সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতির দূরত্ব তৈরি হতে শুরু করে বলে একাংশ নেতা মনে করেছেন। সে কারণে দিব্যেন্দুবাবুকে শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদ থেকেও সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয় বলে সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে। বিষয়টি টের পেয়ে আগেই ইস্তফা দিয়ে দিব্যেন্দুবাবু পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নিয়েছেন বলে অনেকের ধারণা। দিব্যেন্দুবাবু অবশ্য এর কোনওটাই স্বীকার করেননি। তাঁর কথায়। “দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে বিপ্লবদা’র (মিত্র) সঙ্গে সম্পর্ক। ব্যক্তিগত কারণেই ইস্তফা দিয়েছি।” শিক্ষক বদলি প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আইন মেনেই পদক্ষেপ হয়েছিল। সমিতিগত ভাবে বিপ্লবদা’র অনুমোদন নিয়েই ওই সময় শিক্ষকদের বদলির সিদ্ধান্ত সমর্থন করা হয়েছিল।”

বির্তক নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে চাননি জেলা সভাপতি বিপ্লববাবুও। তিনি বলেন, “শুক্রবার রাতে দিব্যেন্দুবাবুর ইস্তফা পেয়েছি। ব্যক্তিগত কারণে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। প্রদেশ নেতৃত্বের কাছেও তিনি ইস্তফা পাঠিয়েছেন। এ বিষয়ে যা করার সংগঠনের প্রদেশ নেতৃত্বই করবেন। তহে, শিক্ষক সমিতির কোনও কাজে দল বিড়াম্বনায় পড়ে এমন কাজ সমর্থন যোগ্য নয়।” অন্যদিকে বিধায়ক বাচ্চুবাবু জানিয়েছেন, তিনি চেয়ারম্যান থাকার সময়ে নেওয়া বদলির সিদ্ধান্তে লেনদেনের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। তৃণমূলের শিক্ষক সমিতির একাংশ নেতাদের দাবি, দিব্যেন্দুবাবুর নেতৃত্বে দক্ষিণ দিনাজপুরে গত এক বছরের মধ্যে ১৩০০ শিক্ষক সংগঠনে যোগ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

balurghat resign education association president
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE