তিনমাস ধরে বিল বাবদ বকেয়া মিলছে না অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। তাই শিশুদের জন্য বরাদ্দ সব্জি, ডিম, ও বিস্কুট সরবরাহ বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে কোচবিহার জেলায়। এরই প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার জেলাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির সদস্যরা। গত কয়েক মাস ধরে তাঁদের ভাতাও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সমস্ত বরাদ্দ ইন্টারনেটের (ই প্রদান) মাধ্যমে করার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। এই কারণেই তাঁদের বকেয়া মেটাতে দেরি হচ্ছে।
আইসিডিএস সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় প্রায় চার হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলিতে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের খাওয়ানোর জন্য প্রকল্প চালু রয়েছে। আগে শুধুমাত্র খিচুরি দেওয়া হত। পরবর্তী কালে তাঁদের জন্য ডিম, সব্জি এবং বিস্কুট বরাদ্দ করা হয়। প্রতি শিশুর জন্য বরাদ্দ অর্ধেক ডিম। তার জন্য দৈনিক ২ টাকা ২৫ পয়সা করে দেওয়া হয়। সব্জির ক্ষেত্রে গর্ভবতী মায়েদের জন্য দৈনিক ১ টাকা এবং শিশুদের জন্য ৪৫ পয়সা করে বরাদ্দ রয়েছে। বিস্কুটের জন্য শিশুপ্রতি দৈনিক ৮০ পয়সা করে বরাদ্দ রয়েছে। একই ভাবে খিচুড়ি ও জ্বালানির জন্যেও বরাদ্দ রয়েছে। ৩০ জনের রান্নার জন্য দিনপ্রতি ১৬ টাকা ও ৫০ জনের রান্নার জন্য দিনপ্রতি ১৮ টাকা করে জ্বালানী খরচ দেওয়া হয়।
চলতি প্রথা অনুযায়ী বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দোকানে বাকি রেখে সারা মাসের খরচ চালান আইসিডিএস কর্মীরা। মাসের শুরুতে বিল করে টাকা পেয়ে যান তাঁরা। কিন্তু গত তিন মাস ধরে টাকা না মেলায় রীতিমত বেকায়দায় পড়েছেন জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কয়েকজন জানান, তিন মাস ধরে খরচ চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। টাকা কবে দেওয়া হবে সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না। জ্বালানি খরচ না পেলে খিচুড়ি রান্নাও বন্ধ হয়ে যাবে। রাজ্য আইসিডিএস কর্মী সমিতির কোচবিহার জেলা সম্পাদক শিবানী সাহা বলেন, “অনেক আন্দোলনের পরে আমরা শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের খাওয়ানোর জন্য বরাদ্দ পেয়েছি। তিন মাস ধরে ওই বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে না। এর প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনের ডাক দিয়েছি।”
শিবানী দেবী জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে তিন হাজার টাকা ও রাজ্য সরকারের তরফে ১৩৫০ টাকা অর্থাত্ সবমিলিয়ে তাঁরা মাসে ৪ হাজার ৩৫০ টাকা করে পান। গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে ওই টাকাও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে। আগে ১০ মার্চের মধ্যে টাকা পাওয়া যেত তা এখন তা হাতে পেতে মাস শেষ হয়ে যাচ্ছে। সংগঠনের কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের নেত্রী মিনতি সান্যাল বলেন, “খুব কষ্ট করে আমরা কেন্দ্রগুলি চালাচ্ছি। ওই সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে হবে।
কোচবিহারের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “ই-প্রদান ব্যবস্থা সদ্য চালু হয়েছে। সে কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। আগামী এক মাসের মধ্যে পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।”জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক দেবযানী ভট্টাচার্যও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy