দেওয়াল লিখনের বদলে এবার লোকসভা ভোটে ব্যানার, হোর্ডিং, ফ্লেক্স, এসএমএস আর বাড়ি বাড়ি প্রচারে জোর দিচ্ছে কোচবিহারের যুযুধান রাজনৈতিক দলগুলি। ডান-বাম দুই শিবিরের নেতারাই জানাচ্ছেন, নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী সরকারি ভবনের দেওয়াল তো নয়ই,ব্যক্তিগত মালিকাধীন দেওয়ালে লেখার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গৃহকর্তার অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। রাজনৈতিক ডামাডোলে গোলমালে জড়াতে চান না বলে সাধারণ বাসিন্দাদের অনেকেই নির্দিষ্ট একপক্ষকে দেওয়াল লেখার অনুমতি দিয়ে অন্যদের বিরাগভাজন হতে চান না। তার ওপর দেওয়াল লিখনের চেয়ে ব্যানার, হোর্ডিং, ফ্লেক্স প্রচারে অপেক্ষাকৃত ভাবে খরচ কম। সবমিলিয়েই প্রচার কৌশলে সব শিবিরেই দেওয়াল লিখনে আগ্রহ কমেছে।
কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল, বামফ্রন্ট, বিজেপি ও গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন ইতিমধ্যে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। দেওয়াল লিখন শুরু না হলেও গ্রামগঞ্জে মিছিল, কর্মীসভা শুরু হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের কথায়, “সারা বছর এলাকায় জনসংযোগ আমাদের রয়েছে। ভোটের নিয়ম মেনে প্রয়োজনমত সার্বিক প্রচার হবে।”
নিজেদের দখলে থাকা আসন ধরে রাখতে মরিয়া বামেরা অবশ্য জোর প্রচারে নেমে পড়েছেন বামফ্রন্ট। ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী দীপক রায়ের সমর্থনে খোল্টায় বৃহস্পতিবার ফ্রন্টগত ভাবে প্রথম জনসভা হয়। শুক্রবার কোচবিহারে পথসভা করেছেন ফ্রন্ট নেতারা। মাথাভাঙায় জনসভা, তুফানগঞ্জে রোডশো’র পাশাপাশি প্রচার পরিকল্পনায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবেদন জানানোর বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “দেওয়াল লিখন নিয়ে বিধিনিষেধ রয়েছে। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছানোর কথা বলা হয়েছে কর্মীদের।”
নিজেদের মত প্রচারে নেমেছেন বিজেপি, গ্রেটার কোচবিহার পিপলস পার্টির সমর্থকরাও। বিজেপির জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মনকে এবার প্রার্থী হয়েছে। প্রার্থীর সমর্থনে এসএমএস পাঠিয়ে ইতিমধ্যে প্রচার শুরু করেছেন তারা। ব্যানার, হোর্ডিং, ফ্লেক্স দিয়ে এলাকা মুড়ে ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক নিখিল দে বলেন, “বাসিন্দারা অনেকেই দেওয়াল লেখা নিয়ে অনুমতি দিতে বিরক্ত বোধ করেন। তাছাড়া হোর্ডিং, ফ্লেক্স, ব্যানার লাগানো অনেক সোজা। খরচ কম।” গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রার্থী বংশীবদন বর্মন আবার ‘ঘরোয়া বৈঠকে’ জোর দিচ্ছেন। বংশীবাবুর কথায়, “ব্যক্তিগত মালিকাধীন দেওয়াল লেখার অনুমতি দিতে আগ্রহীর সংখ্যা কম বলে পোস্টার, ব্যানারে জোর দিচ্ছি। বাদ্যযন্ত্র নিয়ে মিছিল করেও প্রচার হবে।”
প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত না হলেও বসে নেই কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেস সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “প্রচারে সিপিএম ও তৃণমূল জমানার ধর্ষণ থেকে খুনের উদাহরণ দিয়ে দুই শাসকের রুপ যে আসলে এক সেটা তুলে ধরা হবে। দলীয় অফিস, নির্দিষ্ট দেওয়ালে লেখা হবে। আমরা নিয়ম মেনেই প্রচারে নেমেছি।” দেওয়াল লিখন নিয়ে বাড়তি সতর্ক প্রশাসন। জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “ব্যক্তিগত মালিকাধীন দেওয়াল লেখা নিয়ে কারও অভিযোগ পেলেই অনুমতির কপি চাওয়া হবে। বিষয়টি সর্বদল বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy