চলছে খেলা। বৃহস্পতিবার নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।
কেউ চুড়িদারের উপরেই জার্সি গলিয়ে নিয়েছেন, কেউ বা ট্র্যাকস্যট-জার্সি। এক দলের নাম পিটি উষা তো অন্য দলটি সাইনা নেহওয়ালের নামে। বৃহস্পতিবার আলিপুর দুয়ার জংশনের রেল স্টেডিয়ামে বল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ালেন ওরা ৩৬ জন। প্রথমে রেলের তরফে জানানো হয়েছিল ৯ জনের দু’টি দল হবে। প্রস্তাব শুনেই শুরু হয়ে যায় সম্মিলিত প্রতিবাদ। খেলার মাঠে সকলের সুযোগ চাই, বল পায়ে নিজেদের দক্ষতা দেখাতে চান ওঁরা সকলেই। মহিলাদের একসঙ্গে প্রতিবাদে সিদ্ধান্ত বদল করতে কর্তৃপক্ষ এক রকম বাধ্য হন। সেই মতো এক একটি দলে রাখা হয় ১৬ জন, এবং সকলকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিলে খেলা শুরু হয়।
এঁদের কেউ রেলে করণিক, কেউ ট্র্যাক ম্যান বা কেউ মালবাহক। রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানরাও ছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনটা অন্যভাবেই কাটল ৩৬ জন মহিলা রেল কর্মীর। সকলেই উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের কর্মী। এ দিন ছিল রেল কর্মীদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। সেখানে আয়োজন ছিল মহিলা কর্মীদের ফুটবল ম্যাচ। রেলের আলিপুরদুয়ার বিভাগের ডিআরএম বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “এই প্রথম বার আলিপুদুয়ার ডিভিশনে রেল কর্মীর জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। মহিলার রেল কর্মীদের জন্য ক্রিকেটে ও ফুটবলের চিন্তা করা হয়। মহিলা কর্মীরাই ফুটবল বেছে নেয়। আগামী বছর এই খেলাকে আরও আকর্ষণীয় করা হবে।”
বিভাগীয় রেলের ক্রীড়া ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার চৌধুরী এই দিন বলেন, “কর্মীদের মনসংযোগ বাড়াতে নানা ধরনের খেলাধুলা করা প্রয়োজন। সেই চিন্তাভাবনা থেকেই এই খেলার আয়োজন করা হয়েছে।”
এই দিন রেলে করণিকের পদে কর্মরত শম্পা চৌধুরী, পূর্ণিমা বসু, রাখি রায়, লতিকা গুহ, পম্পা সেনরা জানান, কোনও দিন মাঠে নেমে গ্যালারি ভরা দর্শকের সামনে ফুটবল খেলবেন এমনটা তাঁরা কল্পনাতেও কখনও আনেননি। তবে তাঁদের রেলের আধিকারিকরা প্রস্তাব দিতেই প্রস্তুতি ছাড়াই এক কথায় রাজি হয়ে যান।
এ দিন অবশ্য খেলা শুরুর আগে মাঠে বেশ কিছুক্ষণ বল নিয়ে কসরত করেতে দেখা যায় রেলের ট্র্যাকম্যান তিথি মাহাত, অর্পিতা বিশ্বাস অলোকা সিংহদের। রেলার পরে রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান মীনা দাস বলেন, “প্রতিদিনের কাজ থেকে মাঠে নেমে সত্যি অন্যরকম লাগল।”
এই দিনের মহিলাদের ফুটবল খেলায় এক গোলে জিতে যায় সাইনা নেহেওয়াল দল। একমাত্র গোলটি করেন জ্যোতি চৌহ্বান। রেফারির দায়িত্বে ছিলেন রেল স্কুলের শিক্ষিকা শান্তা ঘোষ। হঠাত্ ফুটবল কেন, এই প্রশ্ন করতেই শম্পাদেবীরা বলে ওঠেন, “মেয়েরা অনেক এগিয়ে গিয়েছে। যে মেয়ে ট্রেন চালাতে পারে, সে ফুটবল খেলতে পারবে না কেন!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy