বাড়ির সামনে খগেন্দ্রনাথ কার্জি।
এক বছর আগে ইন্দিরা আবাসনের ঘর তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা মেলে। সেই অর্ধেক টাকা পেয়ে ধার দেনা করে টিন, কাঠ কিনে ঘর তৈরি করেন ফালাকাটা ব্লকের শালকুমার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা ৮০ বছরের প্রতিবন্ধী খগেন্দ্রনাথ কার্জি। মাসের পর মাস ঘুরলেও দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মেলায় মঙ্গলবার খগেন্দ্রনাথবাবুর বাড় চড়াও হন পাওনাদার। পাঁচ হাজার টাকা ধারের টাকা তুলতে বৃদ্ধের ঘরের টিন ও কাঠ খুলতে চাইলে প্রতিবেশীরা তাদের বাধা দেন। টাকা মিটিয়ে দেবার আশ্বাস দিলে শান্ত হন পাওনাদারেরা।
গুয়াবনগর পঞ্চায়েতর বাসিন্দা বিধবা নীলিমা বর্মন দিনমজুরি করে দিন কাটান। ঘরে দুই মেয়ে এক ছেলে। গত বছর নীলিমাদেবী ইন্দিরা আবাসের প্রথম কিস্তির ২২৫০০ টাকা পান। ঘর তৈরি করতে গিয়ে টাকা শেষ হয়। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না মহাজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে বেড়া দেন। আসল মহাজনের টাকা সুদ-সহ মেটাতে গিয়ে তিনি হিমসিম খাচ্ছেন। দ্বিতীয় কিস্তির টাকা তিনি এখনও পাননি।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ফালাকাটা ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েত এলাকার চার হাজার দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী লোকজনের অবস্থা ওই দুই জনের মতই। গত বছর মার্চ মাসে সাড়ে চার হাজার বাসিন্দা ইন্দিরা আবাসের প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পান। মাস তিনেক আগে ৫০০ জন হাতে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পেলেও বাকিরা সমস্যায়। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য থেকে প্রধানের দফতরের দিনের পর দিন যাতায়াত করেও টাকা মেলেনি বলে অভিযোগ। খগেন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “আমি চলতে পারি না। পাশে বোনের বাড়ি। ওই খাবার দেয়। ওই ঘরটুকু পাওনাদারেরা খুলে নীলে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।” শালকুমার পঞ্চায়েত এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য মাম্পি শৈব বলেছেন, “৩১ জন টাকা পায়নি। প্রধানের মাধ্যমে বিডিওকে কে বলা হয়েছে। তবে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না।” গুয়াবরনগর পঞ্চায়েত প্রধান সুভাষ রায় বলেন, “এক বছর আগে ইন্দিরা আবাসের ঘর তৈরির জন্য এক কিস্তির টাকা পেয়েছেন এমন ১০০ জন বাকি টাকা পাচ্ছেন না। প্রতিনিয়ত লোকজনকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ফেরাতে হচ্ছে।” জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের থেকে সময়মত টাকা না মেলায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানান ফালাকাটার বিডিও কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘কিছুদিন আগে ইন্দিরা আবাসের ২ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা এসেছিল। সে টাকা দেওয়া হয়েছে। ৩ কোটি ৫৫ অনুমোদন করেছে জেলা পরিষদ। তবে ব্যাঙ্কের থেকে এখন সে টাকা না আসায় দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া যাচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy