Advertisement
E-Paper

দার্জিলিং থেকে পাচার বাড়ছে, বলছে সমীক্ষা

কাজের লোভ দেখিয়ে বা বিয়ের টোপ দিয়ে দার্জিলিং থেকে নাবালিকা এবং কিশোরী পাচারের প্রবণতা বাড়ছে বলে দাবি করল গোয়ার আর্জ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চার বছর ধরে চলা সংগঠনের সমীক্ষায় এমনই উঠে এসেছে বলে বার্ষিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০৩:০৯

কাজের লোভ দেখিয়ে বা বিয়ের টোপ দিয়ে দার্জিলিং থেকে নাবালিকা এবং কিশোরী পাচারের প্রবণতা বাড়ছে বলে দাবি করল গোয়ার আর্জ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চার বছর ধরে চলা সংগঠনের সমীক্ষায় এমনই উঠে এসেছে বলে বার্ষিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বছরে যত পাচার হয়ে আসা কিশোরী উদ্ধার হয়, তার ১১ শতাংশই দাির্জিলিঙের। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, কয়েক বছর আগেও নেপাল ছিল তালিকার শীর্ষে। তবে সেখানে সীমান্তে কড়াকড়ি হওয়ায় পাচারের প্রবণতা কমেছে। আর সেই পরিসরে দার্জিলিংকে পাচারের লক্ষ্য হিসেবে পাচারকারীরা বেছে নিয়েছে।

‘আর্জ’ নামে গোয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সেই রাজ্যের সরকার পাচার রুখতে এবং সচেতনতা প্রসারে ‘নোডাল এজেন্সি’ হিসেবে মনোনীত করেছেন। ওই সংগঠনের সমীক্ষা রিপোর্টেই দার্জিলিঙে পাচার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

শনিবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে গোয়া এবং দিল্লির দু’টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা পাচার প্রবণতা বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার আর্জি জানিয়েছে। তাদের সমীক্ষায় উঠে আসা সব তথ্য গোয়া প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্যকে সরকারি ভাবে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে কলকাতায় রাজ্য পুলিশের সদর দফতরেও সংগঠনের তরফে সব তথ্য জমা দিয়েছে বলে এ দিন জানানো হয়েছে।

দার্জিলিঙের জেলা পুলিশ সুপার অখিলেশ চর্তুবেদী বলেন, “আমাদের কাছে এমন কেউ নির্দিষ্ট অভিযোগ করেনি। তবে পাচার রুখতে জেলা পুলিশ সক্রিয় এবং নিয়মমিত প্রচার চালায়।”

নেপালকে পিছনে ফেলে দার্জিলিং তালিকার একেবারে উপরে উঠে আসার তথ্য পেয়ে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মকর্তারা সম্প্রতি দার্জিলিঙে এসে স্থানীয় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও ওই সমীক্ষায় সামিল হয়েছিল। ইতিমধ্যে দার্জিলিঙের একটি স্থানীয় সংগঠনের মাধ্যমে পাচার রোখার কাজও শুরু হয়েছে। দার্জিলিং এবং কালিম্পঙের মোট ৭টি স্কুলে ‘স্টুডেন্টস এগেন্সট ট্র্যাফিকিং’ নামে দল তৈরি করে স্কুলের ছাত্রী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। পাচারের সময় সাধারণত ভাড়া গাড়ি ব্যবহার করা হয় বলে বিভিন্ন ঘটনায় জানা গিয়েছে বলে দাবি করে। সব ধরণের গাড়ির চালকদের নিয়েও এমন আরেকটি দল তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। সংগঠনের দাবি, গাড়ির চালকদের সচেতন করা হবে, সন্দেহ হলেই কোন নম্বরে যোগাযোগ করবে তাও জানিয়ে দেবে সংগঠন। এর ফলে পাচারের প্রবণতা রোখা সম্ভব হবে বলে দাবি।

কিশোরী এবং নাবালিকাকে টোপ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দিল্লি এবং গোয়া পাচারচক্রের অন্যতম গন্তব্য। সংগঠনের দাবি দার্জিলিং থেকে সরাসরি গোয়া নিয়ে আসা হচ্ছে কিশোরীদের। গোয়ার কোনও হোটেল, বিউটি পার্লার, ডিস্ক, পানশালায় তাদের কাজের জন্য নিয়ে গিয়ে নানা ভাবে পীড়ন চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।

কেন দার্জিলিঙের নাম প্রথমে এসেছে?

‘আর্জ’-এর সভাপতি অরুণ পাণ্ডে দাবি করে বলেন, “নেপালে কড়াকাড়ি বেড়েছে। একসঙ্গে দু’তিন জন মেয়েকে নিয়ে নেপালের সীমান্ত পার হতে সমস্যা হচ্ছে পাচারকারীদের। সে কারণেই দার্জিলিংকে বেছে নিয়েছে চক্রটি। এখানে নজরদারি এবং সচেতনতা দুই-ই তুলনামুলক কম।” দিল্লির স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রকল্প ম্যানেজার সত্য প্রকাশের অভিযোগ, “আমরা সমীক্ষায় দেখেছি, উত্তরবঙ্গে বড় স্টেশন বা বাস স্ট্যান্ড এলাকাগুলিতে পাচার রুখতে তেমন নজরদারি নেই।”

siliguri darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy