Advertisement
১৯ মে ২০২৪

দুর্নীতি রুখতে অনলাইন ব্যবস্থা এসজেডিএ-র

দুর্নীতি রুখে দ্রুত পরিষেবা দিতে অনলাইনে ‘ল্যান্ড ইউজ কমপ্যাটেবিলিটি সার্টিফিকেট (এলইউসিসি) দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করল শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। সোমবার এসজেডিএ কার্যালয়ে ওই পরিষেবার উদ্বোধন করেন এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৫৬
Share: Save:

দুর্নীতি রুখে দ্রুত পরিষেবা দিতে অনলাইনে ‘ল্যান্ড ইউজ কমপ্যাটেবিলিটি সার্টিফিকেট (এলইউসিসি) দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করল শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)। সোমবার এসজেডিএ কার্যালয়ে ওই পরিষেবার উদ্বোধন করেন এসজেডিএ-এর চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

এসজেডিএ কর্তৃপক্ষের দাবি, এখন থেকে এলইউসিসি পেতে দিনের পর দিন এসজেডিএ দফতরে ছোটাছুটি করতে হবে না। তা নিয়ে বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ ওঠার রাস্তাও বন্ধ হবে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় সময় ও পরিশ্রম বাঁচবে। এলইউসিসি পেতে জুতোর সুকতলা ক্ষয়ে যায়, এমন গল্প আর হাওয়ায় উড়বে না।” সেই সঙ্গে মন্ত্রীর দাবি, রাজ্যে যতগুলি বিধিবদ্ধ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রয়েছে, তাদের মধ্যে এসজেডিএ-ই প্রথম অনলাইনে এলইউসিসি দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করল।

এলইউসিসি পাওয়া নিয়ে এসজেডিএ-এর একাংশের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ পৌঁছেছে সরকারি মহলে। এসজেডিএ-র আওতায় থাকা এলাকায় যে কোনও নির্মাণের আগে জমির চরিত্র যাচাই করা বাধ্যতামূলক। একটা সময়ে বেশির ভাগ জমিই কৃষিজমি ছিল। সে জন্য জমির চরিত্র বদল করাও দরকার। সে জন্য সরকারি হারে ফি দিতে হয়। ওই জমিটি বসতবাড়ি কিংবা বাণিজ্যিক ভবন তৈরির জন্য উপযুক্ত কি না, তা এসজেডিএ ঠিক করে।

যাবতীয় নথিপত্র খতিয়ে দেখে এসজেডিএ যে সার্টিফিকেট দেয় সেটিই হল ‘এলইউসিসি।’ ওই সার্টিফিকেট থাকলে পুরসভায় কিংবা পঞ্চায়েত এলাকায় নকশা জমা দিলে অনুমোদন পেতে খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। সে জন্য এলইউসিসি দিতেই এসজেডিএ-এর অফিসার-কর্মীদের একাংশ টালবাহানা করতেন বলে অভিযোগ। এমনকী, আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফি-এর হার কমানো-বাড়ানোর কাজও একটি চক্র করেছে বলে অতীতে অভিযোগ পৌঁছেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর দফতরে।

এই অবস্থায়, এসজেডিএ-এর ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে বেশ কিছুদিন ধরেই চেষ্টা চালাচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তৃণমূল সূত্রের খবর, বহু কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমতি-সাপেক্ষে মামলা করে দলের একাংশের সমালোচনার মুখেও পড়েছেন মন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রীর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী চিরদিনই স্বচ্ছতার পক্ষে। সে জন্যই স্বচ্ছতার উপরে জোর দেওয়াই আমার লক্ষ্য। আগামী দিনে শিলিগুড়ি পুরসভায় অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স ও বাড়ির নকশা জমা নিয়ে অনুমোদনের প্রক্রিয়া চালু করা হবে। সেটা চলতি মাসেই করতে চাইছি।”

এসজেডিএ সূত্রের খবর, এলইউসিসি-র জন্য অনলাইনে আবেদন করলেও দুটি ব্যাপারে আবেদনকারীকে স্বয়ং উপস্থিত থাকতে হবে। প্রথমত সব ব্যবস্থা চূড়ান্ত হলে মূল নথিগুলি জমা দিতে যেতে হবে এসজেডিএ কার্যালয়ে। দ্বিতীয়ত, যেখানে নির্মাণ হবে, সেই জায়গাটি এসজেডিএর প্রতিনিধি দল সরেজমিনে দেখতে যাওয়ার সময় আবেদনকারীকে থাকতে হবে।

প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা প্রাক্তন এসজেডিএর চেয়ারম্যান অশোক ভট্টাচার্য অনলাইন ব্যবস্থায় কতটা স্বচ্ছতা আসবে, তা নিয়ে সন্দিহান। তিনি বলেন, “অনলাইনে সমস্ত কাজ হলে তা মানুষের পক্ষেই মঙ্গল। কিন্তু তা কতটা কার্যকর হবে, তা কিছুদিন পরেই বোঝা যাবে।” বিজেপির পক্ষ থেকে অবশ্য এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসুর দাবি, “মানুষকে সুবিধা তো দিতেই হবে। কিন্তু তার আগে এসজেডিএ-র বহু কোটি টাকার দুর্নীতির তদন্তের কী অবস্থা তা প্রকাশ করুক রাজ্য সরকার।” জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুবীন ভৌমিক অবশ্য বলেন, “এতে দুর্নীতি কতটা কমবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সাইবার অপরাধ তো নতুন কিছু নয়!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

sjda online siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE