Advertisement
E-Paper

প্রচার নেই, আলু বিক্রি করতে এলেন না চাষিরা

চাষিরা দাম না পাওয়ায় আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। তবে প্রচারের অভাবে সেকথা জানতেই পারলেন না অনেকে। প্রশাসনের তরফে দাঁড়িপাল্লা লাগানো হলেও তা ফাঁকাই রইল দিনভর। সোমবার আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের ঘটনা। প্রায় একই অবস্থা আলিপুরদুয়ার জেলার অন্য ব্লকগুলিতেও। প্রশাসনের দাবি, উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় মাইকের মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার বিষয়টি প্রচার করা যায়নি।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৫ ০২:২১
হিমঘরে তালা দিয়ে বিক্ষোভ ফালাকাটায়। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

হিমঘরে তালা দিয়ে বিক্ষোভ ফালাকাটায়। সোমবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

চাষিরা দাম না পাওয়ায় আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছিল সরকার। তবে প্রচারের অভাবে সেকথা জানতেই পারলেন না অনেকে। প্রশাসনের তরফে দাঁড়িপাল্লা লাগানো হলেও তা ফাঁকাই রইল দিনভর।

সোমবার আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের ঘটনা। প্রায় একই অবস্থা আলিপুরদুয়ার জেলার অন্য ব্লকগুলিতেও। প্রশাসনের দাবি, উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় মাইকের মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে আলু কেনার বিষয়টি প্রচার করা যায়নি। আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, ১১টি পঞ্চায়েতের প্রতিটি থেকে ৮০ বস্তা (প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি) আলু কেনার কথা। সোম থেকে শুরু হয়ে বুধবার পর্যন্ত তিন দিন ধরে ওই আলু কেনা চলবে। এ দিন বিবেকানন্দ ১ ও ২ বঞ্চুকামারী ও তপসিখাতা পঞ্চায়েতের আলু চাষিদের ব্লকে গিয়ে আলু সহায়ক মূল্যে বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি প্রচার না থাকায় চাষিরা এ দিন ব্লক অফিসে যাননি। আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাড়ে পাঁচ টাকা করে সহায়ক মূল্যে আলু কিনে তা স্থানীয় মিড-ডে মিল ও আইসিডিএস কেন্দ্রে দেওয়ার কথা। সেই হিসেবে বিভিন্ন ব্লকে আলু কেনা শুরুর কথা ছিল। এ দিন ফালাকাটা ও আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকে কৃষকেরা আলু বিক্রি করলেও আলিপুরদুয়ার-১, কুমারগ্রাম, কালচিনি ব্লকে আলু কেনা শুরু হয়নি।

আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক সমীরন মণ্ডল বলেন, “উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা চলায় মাইকের মাধ্যমে প্রচার করা যায়নি। আজ, মঙ্গলবার ও বুধবার অন্য পঞ্চায়েত থেকে আলু কেনার কথা। তার পরে ফের ওই চারটি পঞ্চায়েতের কৃষকদের থেকে কীভাবে আলু কেনা হবে তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।” আলিপুরদুয়ার১-এর বিডিও অনিন্দিতা দে বলেন, “আলু কেনার বিষয় গ্রাম পঞ্চায়েতে জানানো হয়েছে। আলু কেনার জন্য প্রস্তুতিও শেষ। তবে কৃষকরা আসেননি।” কৃষকেরা ব্লক অফিসে আলু বিক্রির পর কীভাবে টাকা পাবেন জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।

তবে প্রশাসনের তরফে দাবি করা হলেও চাষিদের ক্ষোভ, প্রচার হয়নি। তপসিখাতা এলাকার আলু চাষি তথা আলুচাষি সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক খোকন রায় বলেন, “ব্লকে কয়েকশো চাষি রয়েছেন। অথচ সহায়ক মূল্যে আলু কেনার বিষয়ে কোনও প্রচার হয়নি।” এ ছাড়াও, চাষিদের থেকে কী পরিমাণ আলু কেনা হবে তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে। সোনাপুর এলাকার তৃণমূল নেতা তথা আলুচাষি দুলাল সাহা বলেন, “এক জন কৃষক ১০ বস্তার বেশি আলু বিক্রি করতে পারবে না। এক একটি পঞ্চায়েত থেকে ব্লক প্রশাসন মাত্র ৮০ বস্তা আলু কিনবে। তাহলে আট জন কৃষক আলু বিক্রি করলেই ওই পঞ্চায়েত থেকে আর আলু কেনা হবে না। তাহলে বাকি চাষিরা কী করবে?” মহকুমাশাসক সমীরনবাবু বলেন, “স্থানীয়ভাবে মিড-ডে মিল ও আইসিডিএস কেন্দ্রগুলির চাহিদা অনুযায়ী আলু কেনা হবে। একসঙ্গে বেশি আলু কিনলে তা নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রয়োজনে ফের আলু কেনা হবে।” কোচবিহারে কাল, বুধবার থেকে সরকারি দরে আলু কেনা শুরু হতে পারে বলে জানান কোচবিহারের জেলাসাশক পি উল্গানাথন।

হিমঘরে আলু রাখা নিয়েও ক্ষোভ চলছেই। এ দিন দিনহাটার বলরামপুর রোডে একটি হিমঘরের অফিসে ভাঙচুর চালান কৃষকেরা। আলু রাখার বন্ড না পেয়ে ওই ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। আলুচাষিরা পথে নামেন ফালাকাটাতেও। এ দিন সকালে ফালাকাটার খাড়াকদম গ্রামে সমবায় সমিতির হিমঘরে চাষিরা উপাদিত আলু মজুত রাখতে গেলে কর্তৃপক্ষ জায়গা নেই বলে চাষিদের জানিয়ে দেন। ক্ষুব্ধ চাষিরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ফালাকাটা-বীরপাড়া ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক এক ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ গিয়ে বুঝিয়ে সুঝিয়ে অবরোধ তোলানোর পর চাষিরা ওই হিমঘরের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিনভর বিক্ষোভ দেখান। রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়ের কথায়, “জায়গা না থাকলে হিমঘর কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। কী ভাবে সমস্যার সমাধান করা যায় তা দেখা হচ্ছে।”

agitation cold storage subsidized potato
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy