স্কুলের পরিচালন সমিতির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এবিটিএ ও বিরোধীদের বিবাদে রক্ত ঝরল প্রধানশিক্ষকের। প্রধানশিক্ষককে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে স্কুলেরই এবিটিএ-র তিন শিক্ষক নেতার বিরুদ্ধে। বুধবার বিকালে মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার ঘন্টা দু’য়েক বাদে ১২৫ বছর পেরোনো মালদহের চাঁচলের সিদ্ধেশ্বরী ইন্সটিটিউশনে প্রধানশিক্ষকের ঘরে তান্ডব চালানো হয় বলে অভিযোগ।
প্রধানশিক্ষককে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। ওই সময় আলমারির উপর পড়ে গিয়ে কাচ ভেঙে হাত কেটে রক্ত ঝরতে শুরু করে প্রধান শিক্ষকের। নিমেষে প্রধানশিক্ষককে মারধরের খবর রটতেই স্কুলে হাজির হয় স্কুলের প্রাক্তন ও বর্তমান কিছু ছাত্র সহ অভিভাবকদের একাংশ। এবিটিএর তিন শিক্ষক নেতাকে তারা পাল্টা মারধর করে বলেও অভিযোগ।
এই ঘটনার জেরে চাঁচল জুড়েই ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে। প্রধানশিক্ষকের অভিযোগ, এবিটিএ-র ওই তিন শিক্ষক মাধ্যমিকের খাতা লুঠ করে প্রধানশিক্ষকের বদনাম করতেই ফের বিকালে স্কুলে হাজির হয়েছিলেন বলে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তাঁদের উপর হামলার আশঙ্কায় দুই শিক্ষককে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক আশিস চৌধুরি (মাধ্যমিক) বলেন, “ঘটনার কথা এখনও কেউ আমাকে জানায়নি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুই শিক্ষককেও জেরা করা হচ্ছে।”
পুলিশ ও স্কুল সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার স্কুলে তিনজন শিক্ষক ও একজন অশিক্ষক প্রতিনিধির জন্য নির্বাচন হওয়ার কথা। চাঁচলে মাধ্যমিক পরীক্ষার মূল কেন্দ্র হয়েছে সিদ্ধেশ্বরী স্কুল। এর অধীনে রয়েছে আরও ৯টি পরীক্ষাকেন্দ্র। বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে উত্তরপত্র আসার সময় ঘটনাটি ঘটে। মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আসরারুল হক নিজের ঘরে বসে ব্যালটপত্র তৈরির কাজক্রম করছিলেন। ওই সময়েই ঘটনার সূত্রপাত হয়।
প্রধান শিক্ষক আসরারুল হক বলেন, “কীভাবে ব্যালট পত্র হবে সেজন্য আগের বছরের পুরনো ব্যলটপত্র দেখছিলাম। ওই সময় তিন শিক্ষক এসে প্রথমে গালাগালি করে ও পরে আমার উপরে চড়াও হন। সাড়ে তিনটায় স্কুল ছেড়ে চলে যান। পাশের ঘরেই মাধ্যমিকের খাতা ছিল। আমার সন্দেহ, খাতা লুঠ করে আমার বদনাম করতেই ফের স্কুলে এসেছিল।”
শিক্ষক প্রিয়জিত সরকার এবিটিএ-র চাঁচল জোনাল কমিটির সহ সম্পাদক। পার্থ সরকার ও দীপঙ্গর দাস মহকুমা কমিটির সক্রিয় সদস্য। প্রধান শিক্ষকও আগে এবিটিএর চাঁচল জোনের সভাপতি ছিলেন। এখনও তিনি ওই পদেই রয়েছেন বলে এবিটিএ-র দাবি। যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, শুধু এবিটিএ নয়, কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গেই তার কোনও সম্পর্ক নেই। এই পরিস্থিতিতে এবিটিএ ও এবিটিএ বিরোধীদের তরফে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে পৃথক তালিকা রয়েছে। প্রধান শিক্ষক রয়েছেন এবিটিএ বিরোধী পক্ষে। ভোট দেবেন ৩৯ জন শিক্ষক। পার্থ সরকার, প্রিয়জিত সরকারের দাবি, “প্রধান শিক্ষক আগের ব্যালট দেখে কে কাকে ভোট দিয়েছিলেন তা দেখছিলেন। আমরা তার প্রতিবাদ করেছিলাম। উত্তেজিত হয়ে আমাদেরকে বাইরে বের করে দেওয়ার সময় তিনি পড়ে গিয়ে চোট পান। আমরা দুষ্কৃতী নাকি যে মাধ্যমিকের খাতা লুঠ করতে যাব?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy