জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের ছবিটি তুলেছেন রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সন্ধ্যা ৬টার পরে অনুসন্ধান কেন্দ্র বন্ধ। একটি কাউন্টার থেকে সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত দুই টিকিট দেওয়া হয়। প্ল্যাটফর্মে সাধারণের শৌচাগার নেই। এ অবস্থা জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের। বিভাগীয় সদর জলপাইগুড়িতে দু’টি স্টেশন রয়েছে। এর মধ্যে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশন থেকেই উত্তর, উত্তরপূর্ব এবং দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে যোগাযোগ করতে হয়। এই স্টেশনের এমন বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ যাত্রী থেকে বাসিন্দারা। রেল দফতরকে একাধিক বার স্টেশন সম্পর্কে ক্ষোভ জানানো হলেও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুর দুয়ারের বিভাগীয় আধিকারিক বীরেন্দ্র কুমার বলেন, “জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের পরিষেবার উন্নতির বিষয়ে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।”
দু’টি প্ল্যাটফর্মেই সাধারণের জন্য শৌচাগার নেই বলে অভিযোগ। উচ্চ শ্রেণির প্রতীক্ষালয়ে শৌচাগার রয়েছে। যদিও সে প্রতীক্ষালয় অধিকাংশ সময় তালাবন্ধ থাকে। সকাল থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত স্টেশনের অনুসন্ধান কেন্দ্র খোলা থাকে। সন্ধের পরে এই স্টেশনে গৌহাটিগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও অওয়ধ অসম এক্সপ্রেস থামে। দিল্লিগামী ব্রহ্মপুত্র মেল এবং অওয়ধ অসম এক্সপ্রেসও রাত এবং ভোরে স্টেশনে আসে। স্বভাবতই ওই সময়ে অনুসন্ধান কেন্দ্র বন্ধ থাকায় ট্রেনের খবর পেতে সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুসন্ধান কেন্দ্র সামলানোর দায়িত্বে স্থায়ী কর্মী নেই। স্টেশনের দু’জন টিকিট পরীক্ষককে দিয়ে কাজ চালানো হত। বর্তমানে এক জনকে অন্যত্র পাঠানোয় অনুসন্ধান কেন্দ্র সন্ধ্যার পরে বন্ধ রাখা হয়।
একটি কাউন্টার থেকে দুই ধরনের টিকিট নিতেও নাকাল হতে হয় বলে অভিযোগ। নিয়মানুযায়ী এক জানালা হলে কেউ অসংরক্ষিত টিকিট চাইলে তাকে আগে দিতে হয়। ফলে সংরক্ষিত টিকিট কাটতে যেমনন সমস্যা হয়, তেমনিই বচসাও রুটিন ঘটনা বলে নিত্যযাত্রীরা অভিযোগ করেন। সমস্যা হয় তত্কাল টিকিট সংরক্ষণ করতে গিয়েও। আটটায় সংরক্ষিত কাউন্টার খুললেও সে সময় অসংরক্ষিত টিকিট চাহিদা বেশি থাকায় তত্কাল পরিষেবা বিঘ্নিত হয়। শুধু স্টেশনের আভ্যন্তরীণ পরিকাঠামো নয়, ডেঙ্গুয়াঝাড় রেলগেট থেকে স্টেশন পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার লম্বা রাস্তাটির অবস্থা পুরোপুরি বেহাল অভিযোগ। পিচ উঠে গিয়েছে। সংস্কার না হওয়ায় নাকাল হতে হয় যাত্রীদের। স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানান, সাপ্তাহিক এবং নিয়মিত ট্রেন মিলে এই স্টেশন দিয়ে ৩৭ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করে। তার মধ্যে ১২ জোড়া ট্রেন এই স্টেশনে দাঁড়ায়। জলপাইগুড়ি জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার বলেন, “পরিষেবা বৃদ্ধি এবং উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতগামী ট্রেনগুলির স্টপের জন্য রেল দফতরে বহু দাবি জানিয়েছি। ফের আন্দোলনে নামা হবে।” তৃণমূল জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “দলনেত্রী বা দলের নেতারা রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এখানে কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছিল। পরিষেবা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়াও হয়েছিল। তার পরে সব কিছু এখন ধামাচাপা পড়ে গিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy