মঙ্গলবার সকালে কুয়াশা ঢাকা ছিল শিলিগুড়ি শহর। এ দিন দৃশ্যমানতা কম থাকায় বাগডোগরা বিমানবন্দরে পাঁচটি বিমান বাতিল হয়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
খারাপ আবহাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে নামতেই পারল না পাঁচটি বিমান। এর জেরে বুধবার বিপাকে পড়েন বাগডোগরা বিমানবন্দরের প্রায় শতাধিক বিমানযাত্রী। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এদিন বাগডোগরা থেকে ওঠানামা করার কথা ছিল ১৫টি বিমানের। তারমধ্যে ১০টি ঠিকঠাক ওঠানামা করলেও কম দৃশ্যমানতার জন্য পাঁচটি বিমান বাগডোগরায় নামতে পারেনি। এবারের শীতের মরশুমে এই প্রথমবার খারাপ আবহাওয়ার জন্য একসঙ্গে এতগুলি উড়ান বাতিল হল। এরমধ্যে মূলত দিল্লি, কলকাতা ও গুয়াহাটি থেকে বিমানগুলি আসার কথা ছিল। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা রাকেশ সহায় বলেন, “পাঁচটি উড়ান বাতিল হয়েছে। তবে এদিনের বাকি ১০টি বিমান সময়সূচি মেনেই চলেছে। মূলত খারাপ আবহাওয়ার জন্যই ঘটনাটি ঘটেছে।”
বুধবার সকাল সওয়া ১১টা নাগাদ স্পাইসজেটের প্রথম উড়ান ছিল বাগডোগরার। ওই উড়ানটি পরে বাতিল করে দেওয়া হয়। পরের দু’টি উড়ান মাঝ রাস্তা পর্যন্ত গিয়েও খারাপ আবহাওয়ার জন্য অবতরণ করতে পারেনি বাগডোগরায়। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বুধবার বেলা দেড়টা নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিমান রওনা দেয়। তবে, আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে মাঝ রাস্তা থেকেই ফের কলকাতা ফিরে আসে সেটি। অন্যদিকে, আড়াইটে নাগাদ যাত্রী নিয়ে একই গন্তব্যে রওনা দেয় ইন্ডিগোর একটি বিমান। একই কারণে সেটিও অবতরণ করতে পারেনি বাগডোগরায়। দৃশ্যমানতা অতিরিক্ত কম থাকায় ইন্ডিগোর পাইলট, বিমানের মুখ ঘুরিয়ে তা নিয়ে চলে যায় গুয়াহাটিতে।
তবে, সকালের দিকে কলকাতা থেকে বাগডোগরার উড়ান ঠিক মতোই পৌঁছয়। পরের দিকে দৃশ্যমানতা কমে যাওয়ায়, উড়ানগুলির ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। বাগডোগরা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সেখানে অবতরণ করার জন্য সর্বনিম্ন দৃশ্যমানতা ২০০০ মিটার হওয়ার দরকার। এ দিন বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকেই তা কমতে থাকে। তা নেমে যায় ২০০০ মিটারের নিচে।
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, বাগডোগরা বিমাবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলটি (এটিসি) বায়ুসেনার অধীনে রয়েছে। সেখান থেকেই বিমান ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বাগডোগরায় আইএলএস বা ইনস্ট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম না থাকায় আবহাওয়া খারাপ হলে বিমান ওঠানামায় সমস্যা দেখা দেয়। এদিনই একই ঘটনা ঘটেছে। কলকাতা থেকে একটি বিমানে শিলিগুড়ি ফেরার কথা ছিল সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যেরও। তিনি বলেন, “বিমানবন্দরে এসে দীর্ঘক্ষণ বসে বিমান বাতিল হওয়ায় ফিরতে হয়েছে। শিলিগুড়ি রওনা হয়েছি।”
অশোকবাবু’র মত শিলিগুড়িতেও সমস্যায় পড়েন বহু যাত্রী। বিমান বন্দর সূত্রের খবর, এয়ার ইন্ডিয়ার মত বিমান সংস্থার তরফে যাত্রীদের থাকার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বাকি বিমান সংস্থার যাত্রীদের অনেকেই ট্রেনে, বাসে তো বটেই গাড়ি ভাড়া করেও কলকাতা রওনা হয়েছেন। স্থানীয় যাত্রীরা বাড়ি ফিরে গেলেও কিছু যাত্রী হোটেলেও থেকে গিয়েছেন। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁরা অন্য বিমান ধরবেন। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, “বাগডোগরায় শীতকালের এই সমস্যা হয়েই থাকে। দ্রুত আইএলএস ব্যবস্থাটি বসানো প্রয়োজন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy