বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কয়লার গাড়ি আটকে মামলা রুজু করছে বলে অভিযোগে উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিমের দ্বারস্থ হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের অভিযোগ, কোচবিহার জেলার বক্সিরহাট সীমান্ত চেকপোস্টে দিয়ে কয়লার গাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছে। অসম কোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, বক্সিরহাট সীমান্তে তাঁদের সমস্ত বৈধ কাগজপত্র তল্লাশির নাম করে ছিনিয়ে নিচ্ছে পুলিশ। এর পরে সমস্ত কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলছে তাঁরা বলেও অভিযোগ। তখন তাঁদের পাঠানো কয়লা বৈধ কি না তা প্রমাণ করতে দেরি হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের আইজি জাভেদ শামিম বলেন, “বৈধ কাগজপত্র থাকলে তা আটকানো হবে কেন? নথি ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ আমার কাছে নেই। তবে অভিযোগ সম্পর্কে আমি এসপিকে বলেছি, অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে।”
তবে পুলিশের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, একশ্রেণির ব্যবসায়ী রাজস্ব ফাঁকি দিতে পুলিশের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশে ভুয়ো নথি দিয়ে কয়লা পাচার করছেন। কয়েকজন পদস্থ পুলিশ অফিসারের মদতেই ওই পাচার চক্র সক্রিয় বলে পুলিশের অন্দরেই অভিযোগ রয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজির দফতরেও সেই অভিযোগ পৌঁছেছে। অতীতে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় পাচার চক্রে পুলিশের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় একাধিক পদস্থ কর্তাকে সতর্কও করে দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, রাজ্য পুলিশের সদর দফতর থেকে ফের উত্তরবঙ্গে কয়লা পাচার চক্র রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে কোচবিহারে বাড়তি কড়াকড়ি করায় সমস্যা হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখছেন রাজ্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
তবে অসম কোল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সঞ্জয় সরকার জানিয়েছেন, তাঁরা নথিপত্র দিয়ে ব্যবসা করেন। নিয়মিত রাজস্বও দেন। তাঁর প্রশ্ন, “মেঘালয় থেকে সমস্ত কাগজপত্র তৈরি করে অসম ও বাংলার বিক্রয় কর মিটিয়ে দিচ্ছি। ফাঁকিবাজ ব্যবসায়ীদের মতো আমরা কোনও ভুয়ো নথি বানাচ্ছি না। তার পরেও আমরা বক্সিরহাট দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে পারছি না। কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলে মামলা করে ফাঁসিয়ে দিচ্ছে।” ওই ব্যবসায়ীরা জানান, আলিপুরদুয়ারের মধ্যে দিয়ে গাড়ি নিয়ে যেতে সমস্যা হচ্ছে না।
পুরো বিষয়টি নিয়ে তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন। জেলাশাসক বলেন, “কাগজপত্র ঠিক থাকার পরেও কিছু গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগটি শুনেছি। বক্সিরহাটের ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। ঘটনা খতিয়ে দেখতে তুফানগঞ্জের মহকুমা শাসককেও বলেছি। অভিযোগের সত্যতা থাকলে এসপির সঙ্গে কথা বলব।”
কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব অবশ্য এমন কোনও অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এমন কোনও অভিযোগ আমার কাছে কেউ করেননি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। আইন বিরুদ্ধ কোনও কাজ বরদাস্ত হবে না।” কাগজপত্রে অসঙ্গতি থাকলেই মামলা করা হয় বলে তিনি জানান। গত এক মাসে এরকম অন্তত ৩০ টি মামলা করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy