বাসিন্দাদের মন বুঝতে কনভেনশন করার সিদ্ধান্ত নিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। শিলিগুড়ি পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরোনোর পরে, প্রশাসক বসায় রাজ্য সরকার। সরকারি আধিকারিকরা প্রশাসক বোর্ডে থাকলেও, বিরোধীদের অভিযোগ, বকলমে পুরসভা চালাচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। সামনেই শিলিগুড়ি পুরসভার ভোট। ভোটকে সামনে রেখে নানা প্রকল্প হাতে নিলেও, শাসক দলকে ভাবাচ্ছে সারদা কাণ্ডও। মন্ত্রী মদন মিত্র গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি সহ সারদা কাণ্ডে একের পর এক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর নাম জড়িয়ে পড়ায়, বিরোধীদের প্রচারে শিলিগুড়িতেও অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে শাসক দলকে। এই পরিস্থিতিতেই আগামী জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত শিলিগুড়িতে পরপর সাতটি নাগরিক কনভেনশন করবেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু।
প্রতিটি কনভেনশনেই পুরসভা, এসজেডিএ এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাজের ফিরিস্তি দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
পুরসভার এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে মঙ্গলবার উত্তরকন্যায় পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন মন্ত্রী। বৈঠকে পুরসভার বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ কতটা এগিয়েছে তা আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে সব কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি মাসে উত্তরবঙ্গ উত্সব উদ্বোধন করতে মুখ্যমন্ত্রীর শিলিগুড়িতে আসার কথা। সে সময় বেশ কিছু প্রকল্পের উদ্বোধন হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে তার আগে থেকেই শুরু হচ্ছে মন্ত্রীর নাগরিক কনভেনশন। মন্ত্রী এ দিন বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে একের পর এক উন্নয়নের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ির প্রধান রাস্তাগুলিতে এলইডি আলো বসানো থেকে, পার্ক সৌন্দর্যায়ন, রাস্তা সংস্কার, ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শিলিগুড়ি তোরণ তৈরির মতো হাজারো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। বিরোধীরা তবু রাজনৈতিক কারণে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। সরকার কী ভাবছে, কী করছে তা জানাতেই নাগরিক কনভেনশন হবে। বাসিন্দাদের মতামতও শোনা হবে কনভেনশনে।” মন্ত্রী জানিয়েছেন, একই ভাবে জলপাইগুড়িতেও বছরখানেক আগে কনভেনশন করেছিলেন তিনি।
পুরসভায় প্রশাসক বসিয়ে রাজ্য সরকারের হাতেই নিয়ন্ত্রণ থাকলেও, নানা ঘটনায় শাসক দলের অন্দরে সংশয় তৈরি হয়েছে। রামঘাট কাণ্ড বা বিধানমার্কেটের সংস্কার না হওয়ার কাটা বিঁধছে তৃণমূলের শিলিগুড়ির নেতা-নেত্রীদের। রামঘাট শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লির কাজ শুরু করেও, স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধায় রামঘাটে পিছিয়ে আসতে হয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরকে। বিধান মার্কেট সংস্কার করার আশ্বাস দিলেও সে কাজও শুরু হয়নি। মন্ত্রীর কথায়, “জায়গা না পাওয়ায় বিধান মার্কেট সংস্কারের কাজ শুরু করা যায়নি। সে কথাও বাসিন্দাদের জানাতে হবে। কেন রামঘাটে কাজ বন্ধ রয়েছে তাও বিশদে জানানো হবে।” মন্ত্রীর দাবি, প্রশাসক বসার পরে পুরসভায় যা কাজ হয়েছে তার নজির সাম্প্রতিক অতীতে নেই। যে প্রকল্পগুলি নেওয়া হয়েছিল, তার ৯০ শতাংশের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে তিনি দাবি করেছেন।
তথাগতের আশ্বাস। ২০১৬ সালে দল রাজ্যে ক্ষমতা দখল করলে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির আশ্বাস দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে মঙ্গলবার রায়গঞ্জের সুভাষগঞ্জে একটি জনসভায় ওই আশ্বাস দেন তথাগতবাবু। তিনি বলেন, “এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল রায়গঞ্জ না কল্যাণীতে তৈরি হবে, তা নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। দলের তরফে উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে জনমত সংগ্রহের কাজ শুরু হচ্ছে। উন্নত পরিষেবার স্বার্থে রায়গঞ্জে একটি এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি হওয়া দরকার।” তিনি দাবি করেন, “২০১৬ সালে বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় আসলে রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির ব্যাপারে উপযুক্ত সরকারি পদক্ষেপ করা হবে।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের কটাক্ষ, “বিধানসভা ভোটের আগে রাজনৈতিক স্বার্থে বিজেপি নেতারা দুমুখো নীতি নিয়ে বাসিন্দাদের বিভ্রান্ত করছেন।” জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, রায়গঞ্জ ও ইসলামপুরে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল শুরু হয়েছে। তাঁর কটাক্ষ, “ভোট এলেই নেতাদের এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির কথা মনে পড়ে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy