আচমকা বন্ধ হওয়া ‘হিমূল’ খোলানোর দাবিতে দাবি উঠল নানা মহলে।
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি জেনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব হিমূল চালু করানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার প্রথম থেকেই এই ধরনের সমবায় ভিত্তিক শিল্পের পুনরুজ্জীবনের পক্ষপাতি। উত্তর দিনাজপুরের স্পিনিং মিলকে ঘিরে নতুন প্রকল্পের কথা ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন। এ দিনই হিমূলের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসককে হিমূলের জন্য আর্থিক অনুদানের বিষয়টি দেখার নির্দেশ দিয়েছি।”
আজ, শনিবার দুপুরে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্টের নেতারা হিমূলে যাবেন। ফন্ট সূত্রের খবর, হিমূলের কর্মী, অফিসারদের সঙ্গে কথা বলার পর একটি রিপোর্ট তৈরি করা হবে। আগামী ১২ মার্চ রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত সিংহ-র শিলিগুড়িতে আসার কথা। তাঁর মাধ্যমেই সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হবে। অশোকবাবু বলেন, “রাজ্যের সর্বত্র কোটি কোটি টাকা প্রকল্পের ঘোষণা করা হলেও, উত্তরবঙ্গের এই সরকারি শিল্পের জন্য কোনও আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে না। শুধু কর্মীরা নন, এর জন্য জড়িত প্রায় ২০ হাজার দুধ সরবরাহকারী পরিবার বিপাকে পড়েছেন।”
তৃণমূলের অভিযোগ, বাম আমলে রাজ্য সরকারের উদাসীনতার জেরেই হিমূল রুগণ হয়ে পড়েছে। গৌতমবাবু বলেন, “সব কিছু নিয়েই রাজনীতি করাটা কয়েকজনের স্বভাব। এটা মানুষ ভাল চোখে দেখেন না।”
যদিও বামেদের দাবি, গত ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত হিমূলের জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করেন। ভোটের জন্য সেই টাকা আটকে যায়। নতুন সরকার এসে সেই টাকা বিভিন্ন খাতে বকেয়া শোধের জন্য হিমূলকে দেয়। এ ছাড়া মাত্র ৮ লক্ষ টাকা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে বিদ্যুতের কাজের জন্য হিমূলকে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন ওয়েস্ট বেঙ্গল কো-অপারেটিভ মিল্ক প্রোডিউসার্স ফেডারেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দেবব্রত চক্রবর্তী ফোন করেন হিমূলের কার্য নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) পেম্বা শেরিং শেরপাকে টেলিফোন করেন। পেম্বা বলেন, “হিমূলের বিস্তারিত রিপোর্ট কলকাতায় পাঠিয়েছি। আর্থিক সমস্যাই বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
হিমূল যে এলাকায় সেই মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শঙ্কর মালাকার ওই দাবি তুলে বলেন, “আমরাও আন্দোলনের প্রস্ততি নিচ্ছি।” কংগ্রেস বিধায়ক জানান, ২০-২৫ কোটি টাকা এককালীন দেওয়া হলে হিমূলকে ঘুরে দাঁড় করানো সম্ভব।
হিমূলের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরাও জানিয়েছেন, দু’বছরে ৩৫ জনের উপর কর্মী, অফিসার অবসর নিয়েছেন। কিন্তু তা পিএফের ২০ লক্ষ, গ্র্যাচুইটির ১ কোটি ২৯ লক্ষ ও লিভ এনক্যাশমেন্টের ৫৬ লক্ষ টাকা বাকি। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পক্ষে প্রবীর চক্রবর্তী বলেন, “আমরা দুরবস্থার মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছি। আমাদের আশা করছি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী ব্যবস্থা নেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy