Advertisement
E-Paper

বর্ষা নামতেই পাহাড়ে শুরু ধসের দুর্ভোগ

বর্ষা শুরু হতেই দার্জিলিং পাহাড়ের নানা এলাকায় ধস নামতে শুরু করেছে। ভোগান্তি হয়েছে বাসিন্দাদের। সোমবার শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পঙের রাস্তায় ৩১ (এ) জাতীয় সড়কে রাম্ভির কাছে ধস নামে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধস সরানোর পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বড় মাপের ধস না হওয়া সত্ত্বেও তা সরাতে দেরি হয়েছে। প্রশাসন ও জিটিএ-র তরফে ধস মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি হচ্ছে বলেই এমন ঘটছে বলে নিত্যযাত্রীদের অনেকের অভিযোগ।

রেজা প্রধান

শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:৩৬
চোদ্দ মাইলে ধস। ছবি: রবিন রাই।

চোদ্দ মাইলে ধস। ছবি: রবিন রাই।

বর্ষা শুরু হতেই দার্জিলিং পাহাড়ের নানা এলাকায় ধস নামতে শুরু করেছে। ভোগান্তি হয়েছে বাসিন্দাদের।

সোমবার শিলিগুড়ি থেকে কালিম্পঙের রাস্তায় ৩১ (এ) জাতীয় সড়কে রাম্ভির কাছে ধস নামে। প্রায় ৩ ঘণ্টা ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ধস সরানোর পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্থানীয় বাসিন্দা ও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, বড় মাপের ধস না হওয়া সত্ত্বেও তা সরাতে দেরি হয়েছে। প্রশাসন ও জিটিএ-র তরফে ধস মোকাবিলায় আগাম ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি হচ্ছে বলেই এমন ঘটছে বলে নিত্যযাত্রীদের অনেকের অভিযোগ।

গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-র বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের এগজিকিউটিভি ডিরেক্টর কেশাঙ্গ ভুটিয়া বলেন, “রাজ্য সরকার বিপর্যয় মোকাবিলার দায়িত্ব বেশির ভাগ নিজের কাছেই রেখেছে। আমাদের হস্তান্তর করেনি। ব্লক পর্যায়ে কিছু কাজ আমাদের দেওয়া হয়েছে। সেটা করা হচ্ছে।” জিটিএ-র তরফেও প্রশাসনকে ধস নামলে, দ্রুত তা সরানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের বিপর্যয় মোকাবিলার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অনিন্দ্য সরকারের বক্তব্য, “গত দুই তিন বছর বড় ধরনের কোনও ধসের ঘটনা পাহাড়ে হয়নি। আমরা আশা করছি, এ বছরও তেমন কিছু ঘটবে না।” এর পরেই তিনি জানান, প্রতিটি ব্লক এবং মহকুমায় পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত করা হয়েছে। কিছু ঘটলে দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে ব্লকে বিশেষ দল তৈরি থাকছে। উদ্ধার কাজের জন্য তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। লাইফ জ্যাকেট, দড়ি, বড় হাতুড়ি, গ্লাভস, স্ট্রেচার, কুঠার, গাইতি, সার্চ লাইট, মাইক সেট, মই, জেনারেটর, লক কাটার, বৈদ্যুতিক করাত, ড্রিলের মতো বিভিন্ন জিনিস দেওয়া হয়েছে।

অসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের অভিজ্ঞ কর্মী গোপাল রাই জানান, প্রতিটি মহকুমায় ৩০০ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও রয়েছে। কালিম্পং এবং দার্জিলিঙে নতুন অনেককেও সম্প্রতি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া, এ বছর উদ্ধার কাজের জন্য নতুন বিভিন্ন সরঞ্জাম দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে সার্চ ক্যামেরা।

বস্তুত, পাহাড়ে ফি বছরই বড় মাপের ধস নামে। জেলা প্রশাসনের তরফে তবুও বিষয়টিকে হালকা করে দেখা হচ্ছে কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও। এমনকী, জিটিএ-র অন্দরেও জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। তবে পূর্ত দফতর ধসের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। কারণ, ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। পাগলাঝোড়া, তিনধরিয়ার মতো এলাকা গত তিন বছর ধরে ধস বিধ্বস্ত হয়ে রয়েছে। এখনও সেগুলি মেরামত করা হচ্ছে।

৫৫ নম্বর পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক বিভাগের আধিকারিক জানান, তিনধরিয়া এবং পাগলাঝোড়াতে ধস বিধ্বস্ত জায়গাগুলি মেরামতির কাজ চলছে। আরও কিছু সময় দরকার সেই কাজ শেষ হতে। ৩০ জুনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সারিয়ে গয়াবাড়ি এবং মহানদীর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির মধ্যে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক পুরোপুরি ঠিক হওয়ার আশা করছেন তারা। পূর্ত দফতরের এক কর্তা জানান, প্রতি বছর বড় মাপের ধস নামে বলেই জাতীয় সড়ক অনেক জায়গায় বেহাল হয়ে পড়ছে।

পথের বিপদ

• পাগলাঝোরা: ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক কার্শিয়াং থেকে ১০ কিলোমিটার। বছরে দু’-তিন বার ধস নামে। ২০১০ এর জুলাই মাসে দুবার বড় ধস নামে। মেরামতির কাজ চলছে।

• তিনধারিয়া: ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক কার্শিয়াং থেকে ১৮ কিলোমিটার। বর্ষাকালে প্রায়ই ধস নামে। ২০১৩ সালে এখানে বড় ধরণের ধস নামে। তারও মেরামতি অসম্পূর্ণ।

• লিকুভির: ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক কালিম্পং থেকে ১৫ কিলোমিটার। বর্ষাকালে নিয়মিত ধস নামে। সাম্প্রতিককালে বড় ধরণের কোনও ধস নামার খবর নেই।

• ২৭ মাইল: ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক কালিম্পং থেকে ২৫ কিলোমিটার। বৃষ্টি হলেই ধস নামে। সাম্প্রতিককালে বড় ধসের খবর নেই। এদিন ভোর সাড়ে চারটেয় ধস নামে।

• বিশ মাইল: ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক কালিম্পং থেকে ৩৫ কিলোমিটার। এখানে ধস নিত্য ঘটনা। প্রায়ই রাস্তা বন্ধ হয়। কিছুক্ষণ পরে খুলেও যায়। তবে বড় ধসের খবর নেই।

• পাঙ্খাবাড়ি: শিলিগুড়ি থেকে কার্শিয়াং যাওয়ার বিকল্প রাস্তা বর্ষা এলেই এই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হত বিপজ্জনক রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত করে। বর্তমানে রাস্তা নতুন করে তৈরি হওয়ার পরে প্রবণতা কিছুটা কম হলেও। ধস নামে মাঝে মধ্যেই।

reja pradhan darjeeling land slide monsoon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy