Advertisement
০২ মে ২০২৪

ভাইপো নিয়ে প্রশ্ন কাকাকে

ভাইপোর কাজের ফিরিস্তি দিচ্ছেন কাকা। গ্রামেগঞ্জে-বন্দরে হাতজোড় করে চলার পথে কখনও উড়ে আসছে প্রশ্ন। গত পাঁচ বছরে কী কী করলেন? কাকা উত্তর দিলেনওকেন আমাদের সাংসদ (ভাইপো) তো সব থেকে বেশি টাকা খরচ করেছেন। রাস্তা, স্কুল, সেতু সবেতেই টাকা দিয়েছেন।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৫
Share: Save:

ভাইপোর কাজের ফিরিস্তি দিচ্ছেন কাকা। গ্রামেগঞ্জে-বন্দরে হাতজোড় করে চলার পথে কখনও উড়ে আসছে প্রশ্ন। গত পাঁচ বছরে কী কী করলেন? কাকা উত্তর দিলেনওকেন আমাদের সাংসদ (ভাইপো) তো সব থেকে বেশি টাকা খরচ করেছেন। রাস্তা, স্কুল, সেতু সবেতেই টাকা দিয়েছেন। বিরোধীরা প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেনসাংসদ থাকাকালীন দিনহাটায় প্রাসাদপ্রতিম বাড়ি তৈরি করেছেন নৃপেনবাবু? কাকা উত্তর দিচ্ছেননৃপেনবাবু বিধায়ক ছিলেন, সাংসদ ছিলেন, প্রচুর কৃষি জমি রয়েছে। তাঁর একটা বাড়ি তৈরি করা নিয়ে এত কথা ঠিক নয়। তাহলে এ বার প্রার্থী বদল কেন? কাকুর উত্তর দল বলবে। আর দল বলছে, নৃপেনবাবু ভাল সংগঠক। এই সময় সাংসদ নয়, সংগঠক হিসেবে প্রয়োজন তাঁর। নৃপেনবাবু বলেন, “হয়ত কোনও নেতার পছন্দ নই। তাই প্রার্থী নই।”

ভাইপো হলেন নৃপেন রায়। বিদায়ী সাংসদ। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। কাকা-দীপক রায়। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে বামফ্রন্ট তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থী। সিতাইয়ের বাসিন্দা ওই দুজনের মধ্যে রক্ত-সম্পর্ক নেই। পাড়াতুতো কাকা-ভাইপো। সম্পর্ক কি রকম তা ব্যাখ্যা দিলেন দীপকবাবুই। দীপকবাবুর বাবা বোধমোহনবাবুকে মামা ডাকতেন নৃপেনবাবুর বাবা বৈদ্যনাথবাবুকে। সেই সূত্রেই তাঁরা কাকা-ভাইপো।

ভোট প্রচারে বার হয়ে ভাইপোকে নিয়েই এমনই নানা প্রশ্ন ভেসে আসছে কাকার কাছে। দীপক বলেন, “প্রচারে বেরিয়ে গত পাঁচ বছরে আমাদের সাংসদের সফলতা তুলে ধরছি। মানুষ জানতে চাইলে উত্তর দিচ্ছি। তৃণমূলের কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরছি। মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন।” নৃপেনবাবু বলেন, “সাংসদ হিসেবে আমি কী কী কাজ করেছি, তা মানুষ জানেন। দল যেখানে দায়িত্ব দিয়েছে, সেই কাজ করছি। মানুষকে সব জানাচ্ছি।”

নৃপেনবাবুর বাবা বৈদ্যনাথ রায় সিতাইয়ের ফব নেতা ছিলেন। পরে নৃপেনবাবু দলের হাল ধরেন। সেখান থেকেই রাজনৈতিক উত্থান হয় তাঁর। বিধায়ক থেকে সাংসদ পর্যন্ত হন। তিনি সিতাইয়ে দলের শেষ কথা হয়ে উঠেন। তিনি গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই পরিস্থিতি পাল্টাতে শুরু করে। দীপকবাবু সিতাই থেকে বিধায়ক পদে লড়েন। জোট প্রার্থী কংগ্রেসের কেশব রায়ের কাছে তিনি হেরে যান। তার পর থেকেই ক্ষোভ জমা হতে থাকে। অভিযোগ ওঠে, সংগঠনের কাজ না করে তিনি দিল্লিতে সময় দেন বেশি। দিনহাটায় তাঁর তৈরি করা বাড়ি নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। তিনি দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন। লোকসভা ভোটে তাঁকে না দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেয় দল। ঘোষণা করে দেওয়া হয় দীপক রায়ের নাম। সম্পর্কে কাকা হলেও বয়সে দীপকবাবু নৃপেনবাবুর থেকে ছোট।

প্রচারেও নৃপেনবাবুকে সিতাই, শিতলখুচির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে রাখা হয়। নৃপেন অনুগামীদের অভিযোগ, “নৃপেন রায়কে দলে কোণঠাসা করার জন্যই ওই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “নৃপেন বাবুকে সংগঠক হিসেবে প্রয়োজন। সে জন্যই নতুন প্রার্থী করা হয়েছে। এতে অন্য কিছু খুঁজতে যাওয়া অর্থহীন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

loksabha election namitesh ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE