কংগ্রেসকে হারাতে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট গড়ে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে লড়তে চেয়েছিল সমাজবাদী পার্টি। কিন্তু বামফ্রন্ট সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সমাজবাদী পার্টি এককভাবে প্রার্থী দিতে বাধ্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার রায়গঞ্জ কেন্দ্রের প্রার্থী সুদীপরঞ্জন সেনের সমর্থনে এক জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই দাবি করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মত্স্য মন্ত্রী কিরণময় নন্দ। এ দিন রায়গঞ্জের বন্দর শ্মশানকলোনি মাঠে ওই সভা হয়।
কিরণময়বাবু বলেন, “১৫ বছর ধরে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্র কংগ্রেস দখলে। তার পরেও দেশের অন্যতম পিছিয়ে পড়া জেলা হিসেবে চিহ্নিত উত্তর দিনাজপুর। রায়গঞ্জের কংগ্রেস সাংসদ বিধায়করা জেলার সার্বিক উন্নয়ন করতে পারেননি। উন্নয়নের স্বার্থে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো মুলায়ম সিংহ যাদব সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে রায়গঞ্জ কেন্দ্রটি সমাজবাদী পার্টিকে ছাড়ার প্রস্তাব দেন। মুলায়ম রায়গঞ্জে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট চাইলে সিপিএম সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।”
এই বিষয়ে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বামফ্রন্ট প্রার্থী মহম্মদ সেলিম জানান, বামফ্রন্ট সরকারের আমলে সমাজবাদী পার্টি বামফ্রন্টের শরিক ছিল। কিন্তু রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতা দখল করার পর সমাজবাদী পার্টি বামফ্রন্টের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেনি। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি জেলায় বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট না করে এককভাবে প্রার্থী দিয়েছিল। তাই কে কী বলছেন তা নিয়ে মাথা ঘামাতে চাই না। তবে কিরণময়বাবু বলেন, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামফ্রন্ট দলীয় শক্তির বিচারে আমাদের আসন না ছাড়ায় আমরা এককভাবে লড়েছি।”
এ দিন কংগ্রেস ও বিজেপি-র কড়া সমালোচনা করেন কিরণময়বাবু। তিনি বলেন, “কংগ্রেস ও বিজেপি দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িতাকে উস্কানি দিচ্ছে। নির্বাচন জেতার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। আমাদের নির্বাচনে হারা জেতা বড় কথা নয়। গত বিধানভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ থেকে হেরেও পালাইনি।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত জানান, নির্বাচনে রাজনৈতিক সুবিধা পেতে কিরণময়বাবু কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা অভিযোগ করছেন। দলের তরফে এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হবে। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরীর কটাক্ষ, “সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেসকে জেতাতে ময়দানে নেমেছে। পরজীবী দলের কথার গুরুত্ব নেই।”
জনসভা শেষ হওয়ার পরে কর্মী সমর্থকদের উত্সাহ বাড়াতে মঞ্চে গান পরিবেশন করেন প্রার্থী সুদীপবাবু ও প্রয়াত সংগীত শিল্পী মান্না দে-র ভাইপো সুদেব দে। এর পর বেলা ২টা নাগাদ কিরণময়বাবুকে এক হুডখোলা জিপে চািপেয়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে মিছিল করে কর্ণজোড়ায় গিয়ে জেলাশাসক স্মিতা পান্ডের কাছে মনোনয়ন জমা দেন সুদীপরঞ্জনবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy