Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ভোট মিটতেই ভিড় বাড়ছে উত্তরবঙ্গে

লোকসভা ভোট প্রভাব ফেলেছিল উত্তরবঙ্গের গ্রীষ্মকালীন পর্যটনে। দু’দফার ভোট পর্ব মিটে যেতে, এ বার ফের পর্যটক সমাগমের আশা করছেন উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরেরা। গত মার্চ মাসের গোড়া থেকেই ভোটের কারণে সরকারি অতিথি নিবাসের সিংহ ভাগই নির্বাচন কমিশনের ‘বুকিং’ ছিল। কমিশনের ‘ভাড়া’ থাকায়, কমে গিয়েছিল বেসরকারি গাড়ির সংখ্যাও। যার প্রভাব পড়েছিল গ্রীষ্মের পর্যটন মরসুমেও। উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স, তরাই এবং পাহাড়, তিন এলাকাতেই ভোটের কারণে পর্যটকের সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে ট্যুর অপারেটরেরা জানিয়েছেন।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৪ ০১:৩৪
Share: Save:

লোকসভা ভোট প্রভাব ফেলেছিল উত্তরবঙ্গের গ্রীষ্মকালীন পর্যটনে। দু’দফার ভোট পর্ব মিটে যেতে, এ বার ফের পর্যটক সমাগমের আশা করছেন উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরেরা। গত মার্চ মাসের গোড়া থেকেই ভোটের কারণে সরকারি অতিথি নিবাসের সিংহ ভাগই নির্বাচন কমিশনের ‘বুকিং’ ছিল। কমিশনের ‘ভাড়া’ থাকায়, কমে গিয়েছিল বেসরকারি গাড়ির সংখ্যাও। যার প্রভাব পড়েছিল গ্রীষ্মের পর্যটন মরসুমেও। উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স, তরাই এবং পাহাড়, তিন এলাকাতেই ভোটের কারণে পর্যটকের সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছিল বলে ট্যুর অপারেটরেরা জানিয়েছেন।

সরকারি ভাবে এপ্রিল থেকে জুন মাস গ্রীষ্মকালীন পর্যটনের মরসুম ধরা হয়। যদিও ট্যুর অপারেটরেরা জানান, সাধারণত মার্চ মাসের শুরু থেকেই ডুয়ার্স-তরাইতে পর্যটকেরা আসা শুরু করে। সেই মতো দার্জিলিঙে পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হয়। মার্চের শুরুতে দার্জিলিঙে অধিকাংশ হোটেলে পর্যটক ভিড় শুরু হয়। মাঝপথে ভোট মরসুম বাধ সেধেছে বলে ট্যুর অপারেটররা জানান। ভোট ঘোষণার পর থেকেই, জেলা প্রশাসনের তৎপরতা শুরু হয়। কমিশনের বিভিন্ন দল থেকে ঘনঘন পর্যবেক্ষক, আধিকারিকরা আসতে শুরু করেন। তার জেরে সরকারি বন বাংলো থেকে বিলাসবহুল রিসর্ট প্রশাসনের থেকে চিঠি দিয়ে ‘সংরক্ষণ’ করে রাখা হয়। বেসরকারি রিসর্টগুলি ব্যবহারে তেমন কোনও নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও, ভোট পরিচালনার জন্য গাড়ি প্রশাসন নেওয়ায়, পর্যটকদের ব্যবহারের গাড়ির সংখ্যাও কমে আসে। যার জেরে গাড়ি ভাড়াও অনেকটাই চড়া থাকে। এই জন্য পর্যটকদের সংখ্যা কমে বলে ট্যুর অপারেটররা জানান।

এ ভোট ঘোষণার পরে চাপরামারি, গরুমারা, চিলাপাতার বিভিন্ন সরকারি বাংলো-রিসর্ট কমিশনের ‘দখলে’ চলে যায় বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। জলপাইগুড়ি এবং দার্জিলিং জেলার বেসরকারি গাড়ির অন্তত ৫০ শতাংশ প্রশাসনের থেকে ভাড়া নেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গের অন্যতম ট্যুর অপারেটর সম্রাট সান্যাল বলেন, “ভোট শেষ হলে গাড়ির অভাব মিটবে। সরকারি বাংলো ব্যবহারের বিধিনিষেধ থাকবে না। ভোটের কারণে মার্চ-এপ্রিল মাসে পর্যটকের সংখ্যা অন্তত ৫০ শতাংশ কমে যায়। ভোটপর্ব মিটতেই, আগামী সপ্তাহের জন্য বুকিং শুরু হয়েছে।”

উত্তরবঙ্গের ট্যুর অপারেটরদের একটি সমন্বয় সংগঠনের সদস্য ভাস্কর দাস। ভাস্করবাবু বলেন, ‘‘ভোটের জন্য মূলত স্থানীয় ও ভিনরাজ্যের পর্যটকের সংখ্যা কমে যায়। অনেক আগে থেকে বুকিং থাকে বলে বিদেশি পর্যটকদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না হলেও, এ বারে ভোটের কারণে দক্ষিণবঙ্গ বা ভিন্ন রাজ্যের পর্যটক সংখ্যা উত্তরবঙ্গে প্রায় ছিল না বলেলেই চলে। ভোট মিটেছে, ফের পর্যটকদের আশা শুরু হবে বলে আশা করছি।” দক্ষিণবঙ্গের ভোটের কারণেও প্রভাব পড়েছে ডুয়ার্সের পর্যটনে। ইস্টার্ন ডুয়ার্স রিসর্ট ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বলা হয়েছে, কলকাতা এবং দক্ষিণবঙ্গে ভোটের কারণে আগামী ২০ থেকে ৩০ এপ্রিলের যাবতীয় বুকিং বাতিল হয়ে গিয়েছে। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি পার্থসারথি রায় বলেছেন, “এপ্রিল মাসের শুরু থেকেই বুকিঙে মন্দা শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে টানা ছুটি থাকায় বেশ কিছু বুকিং হয়েছে, কিন্তু আগামী দু’সপ্তাহের সব বুকিং বাতিল হয়েছে। রিসর্টে পর্যটক নেই বললেই চলে। ভোট পর্ব মিটলেই আবার পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

anirban roy tourist
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE