Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
কমিশনে যাচ্ছে ফ্রন্ট

মন্ত্রীর চাপে ভোটের প্রচারে সরকারি কর্মীরা

সরকারি দফতরকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের ভোটের প্রচার করার অভিযোগ ২৪ ঘন্টা আগেই উঠেছিল, এ বার সরকারি অফিসারেরা কেন তাতে সামিল হচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের চাপেই অফিসারেরা ভোটের প্রচারে যোগ দিচ্ছেন বলে রবিবার দুপুরে জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে বাম নেতারা অভিযোগ করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৭
Share: Save:

সরকারি দফতরকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের ভোটের প্রচার করার অভিযোগ ২৪ ঘন্টা আগেই উঠেছিল, এ বার সরকারি অফিসারেরা কেন তাতে সামিল হচ্ছেন, সেই প্রশ্ন তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্ট। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের চাপেই অফিসারেরা ভোটের প্রচারে যোগ দিচ্ছেন বলে রবিবার দুপুরে জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে বাম নেতারা অভিযোগ করেছেন।

ফ্রন্টের দাবি, সম্প্রতি রাজ্য সরকার হাইকোর্ট এবং নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, আগামী ২৫ এপ্রিল রাজ্যের অন্য পুরসভার সঙ্গে শিলিগুড়িতে ভোট হবে। ফ্রন্টের দাবি, কাজেই ভোটের প্রক্রিয়া সরকারি ভাবে শুরু হয়ে গিয়েছে। সেখানে গত শনিবার এসজেডিএ-র ডাকা উন্নয়ন সংক্রান্ত নাগরিক সভা রাজনৈতিক সভায় পরিণত করা হয়। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মঞ্চে বসানো হয়। আর সরকারি অফিসারেরা তাতে যোগ দিয়ে নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। মূলত পুরসভার সচিব সপ্তর্ষি নাগ এবং এসজেডিএ-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক আর বিমলার দিকেই বামেদের তরফে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।

জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “ওই দুই অফিসার নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। ওঁদের অপসারণের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনে যাচ্ছি। মন্ত্রীর নির্দেশেই সরকারি দফতর, সরকারি অফিসারদের ব্যবহার করে ভোটের প্রচার শুরু হয়েছে।” অশোকবাবুর দাবি, “কোনও কোনও সরকারি অফিসারকে না কি তৃণমূলের প্রার্থী করা হবে, তাই তাঁরাও নাকি এসব করছেন বলে শোনা যাচ্ছে। এটা পুরোপুরি অনৈতিক কাজ।”

বামেদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু। তিনি বলেন, “অযৌক্তিক অভিযোগ করা হচ্ছে।। ২৫ এপ্রিল ভোটের দিনের প্রস্তাব করা হয়েছে। আর তা নিয়ে চূড়ান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করবে নির্বাচন কমিশন। ততদিন নির্বাচনী বিধি লাগু হয় না। অশোকবাবু দুই দশক মন্ত্রী ছিলেন, উনি এটা জানেন না দেখে খারাপ লাগছে।” মন্ত্রী জানান, অফিসারদের কোনও চাপ দেওয়ার বিষয় নেই। ভোট, নির্বাচন সংক্রান্ত আইন সরকারি অফিসারেরা ভালই বোঝেন।

এই প্রসঙ্গে পুর সচিব এবং এসজেডিএ-র সিইও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

দলীয় সূত্রের খবর, পুরভোটকে সামনে রেখেই তৃণমূল প্রচারে নেমেছে। দেওয়াল লিখন, প্রার্থী বাছাই, নাগরিক সভা, কনভেনশন করা হচ্ছে। ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় সরকারিভাবে উন্নয়ন সংক্রান্ত নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে। পাশাপাশি, বিজেপি এবং কংগ্রেসও ঘর গোছানো শুরু করেছে। এই অবস্থায় রাজনৈতিকভাবে প্রচারের জন্য বামেদের তরফেও কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসের প্রথম দিকেই শিলিগুড়ি পুরসভার বামেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে হবে বলে এদিন অশোকবাবু জানিয়েছেন।

অশোকবাবু জানান, শরিকেরা প্রার্থী বাছাই করে ফ্রন্টে আলোচনা চলছে। প্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে এলাকার মানুষের সঙ্গেও কথা হচ্ছে। আগামী মাসের প্রথম দিকেই ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় বুথ সম্মেলন হবে। রাজ্য নেতৃত্ব সেখানে থাকবেন। এই সময়ের মধ্যেই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া হবে। তৃণমূলের-কংগ্রেস জোটের পুরবোর্ড কী করেছে, তার খতিয়ানের পাশে ক্ষমতায় ফ্রন্ট থাকাকালীন যে কাজ হয়েছে তার তালিকা রেখে বাড়ি বাড়ি প্রচার হবে। সেখানে সোশাল মিডিয়ার ব্যবহারও হবে। তৃণমূল হঠাও স্লোগানকে সামনে রেখেই ভোট হবে।

সারদা, এসজেডিএ-র দুর্নীতির টাকা এবং সারদার টাকায় তৃণমূল পুরভোট করবে বলে বাম নেতারা এদিন অভিযোগ করেছেন। অশোকবাবু বলেন, “দুর্নীতির টাকা শুধু নয়, ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। সব দিয়ে ভোট হবে। এসবের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ির স্বার্থে বামেরা লড়বে।” যা শুনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেছেন, “আমরা দলীয় তহবিলের টাকায় ভোট করি। ঠিকাদার, দুর্নীতির টাকায় নয়। ওটা যাঁরা আগে করেছেন, তাঁরাই এসব মন্তব্য করতে পারেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

siliguri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE