Advertisement
০৬ মে ২০২৪

রাস্তা আটকে রেলিং, পার্কিংয়ে ভোগান্তি

শহরের ব্যস্ত রাস্তার ধারের অনেকটা অংশ লোহার রেলিং দিয়ে আটকে রাখছে বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। হিলকার্ট রোড, বিধান রোড, সেবক রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তার দু’ধারে চোখ ফেললেই ওই দৃশ্য দেখা যায়। বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের মতো এলাকাতেও একই দৃশ্য। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাম আমলে অভিযোগ জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি।

শিলিগুড়ির চার্চ রোডের মুখে রাস্তা দখল করে ব্যারিকেড।

শিলিগুড়ির চার্চ রোডের মুখে রাস্তা দখল করে ব্যারিকেড।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ০০:৪৫
Share: Save:

শহরের ব্যস্ত রাস্তার ধারের অনেকটা অংশ লোহার রেলিং দিয়ে আটকে রাখছে বেশ কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। হিলকার্ট রোড, বিধান রোড, সেবক রোডের মতো ব্যস্ত রাস্তার দু’ধারে চোখ ফেললেই ওই দৃশ্য দেখা যায়। বিধান মার্কেট, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের মতো এলাকাতেও একই দৃশ্য। এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, বাম আমলে অভিযোগ জানালেও কোনও সুরাহা হয়নি। বাম সমর্থিত কংগ্রেস পুরবোর্ড কিংবা তৃণমূল-কংগ্রেস বোর্ডের আমলেও রাস্তা দখলের প্রবণতা কমেনি। কিন্তু পুরবোর্ড প্রশাসকের হাতে যাওয়ার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব শহরবাসীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ-অভিযোগের কথা মাথায় রেখে জবরদস্তি করে রাস্তার দু’ধারের পার্কিংয়ের জায়গায় দখল রুখতে নিজেই পথে নেমেছেন।

শনিবার সকালে পুরসভা লাগোয়া কোর্ট মোড় থেকে অনেকটা রাস্তা হেঁটে সামগ্রিক পরিস্থিতি দেখেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। হাসপাতালের উল্টোদিকে একাধিক ওষুধের দোকানের সামনে রেলিং দিয়ে রাস্তার ধারের পার্কিংয়ের জায়গা আটকানো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। সঙ্গে থাকা পুর-কমিশনারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। তখনই রেলিং তুলে দেন ওই ব্যবসায়ীরা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, “শহরের রাস্তায় কোথায় পার্কিং করা যাবে, তা নির্দিষ্ট করা রয়েছে। সেখানে নির্ধারিত ফি দিয়ে পার্কিং করানো যায়। অথচ অনেক রাস্তায় দেখা যাচ্ছে, রেলিং দিয়ে পুরসভার নির্দিষ্ট করে দেওয়া পার্কিংয়ের জায়গা আটকে রেখেছে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। এটা একেবারেই বেআইনি। শহরের কোথাও রেলিং দিয়ে রাস্তার ধারের পার্কিং আটকানো যাবে না। তা হলেই পুরসভা ব্যবস্থা নেবে।”


শিলিগুড়ি হাসপাতালের সামনে ব্যারিকেড সরিয়ে দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।

বস্তুত শিলিগুড়ি শহরে হিলকার্ট রোড, সেবক রোড, বিধান রোডে ব্যবসায়ীদের একাংশ তাঁদের দোকানের সামনের বেশ কিছুটা অংশ জবরদস্তি করে দখল করে রাখেন বলে অভিযোগ। হাসমিচক থেকে শুরু করে সেবক মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে মাঝেমধ্যেই লোহার রেলিং দিয়ে ব্যবসায়ীরা আটকে রেখেছেন। বিধি অনুযায়ী, ওই সব এলাকায় আমজনতা ফি দিয়ে পার্কিং করতে পারে। কিন্তু, ব্যবসায়ীদের একাংশের জবরদস্তি আটকে রাখার জেরে আমজনতার ভোগান্তি হয়। বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কের সামনেও রেলিং দিয়ে পার্কিংয়ের জায়গা আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে। সে জন্য পুরসভার কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে পুর কমিশনার নিজেই মানছেন। তা হলে কী ভাবে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ আমজনতার পার্কিংয়ের জায়গা নিজেরা দখল করে রাখতে পারছে, সেই প্রশ্ন তুলে ভুক্তভোগীরা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। বিধান মার্কেটে আবার দোকানদারদের একাংশ রাস্তার ধার দখল করে জিনিসপত্র সাজিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ। অনেকে আবার রাস্তার উপরে নিজেদের যানবাহনও রাখেন। ক্রেতা কিংবা জরুরি কাজে বিধান মার্কেটে গিয়ে কোনও দোকানের সামনে যানবাহন রাখলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর রোষের মুখে পড়তে হয় বলেও ভুক্তভোগীদের অনেকের অভিযোগ। অথচ সেই ব্যবসায়ী নিজের যানবাহন ওই দোকানের সামনেই রাস্তার ধারে রেখে দেন।


শিলিগুড়ির সেবক রোডের মুখে রাস্তা দখল করে ব্যারিকেড।

পুরসভার কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, “কোনও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে লোহার ব্যারিকেড, নো-পার্কিং বোর্ড রাস্তার ধারে বসানোর অনুমতি পুরসভা দেয়নি। ওই সব বোর্ড তুলে নিতে বলা হয়েছে। না হলে পুরসভা আইনি ব্যবস্থা নেবে। ওই ধরনের বোর্ড, রেলিং, ব্যারিকেড— সব বাজেয়াপ্ত করা হবে।”

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE