পর্যটকদের টানতে এ বার পুজোর আগে কোচবিহার রাজবাড়ি ‘এলইডি’ আলোয় সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যেই একাধিক সংস্থার সঙ্গে প্রশাসনের কর্তাদের প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। প্রশাসনের কর্তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আলোকসজ্জিত নয়া চেহারায় সেজে ওঠা রাজবাড়ির মডেল তৈরি করে দেখানোর কথা বলেছেন।
সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে একই সঙ্গে পুজোর আগে মদনমোহন মন্দিরে মূল প্রবেশপথ লাগোয়া রাস্তা জুড়ে ‘এলইডি’ আলোকতোরণ বসানো হবে। রাজবাড়ির গম্বুজ খিলান থেকে শুরু করে সামনের আঙিনা সবটাই বাহারি রঙিন আলোকচ্ছটায় উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “রাজবাড়ি শহরের অন্যতম আকর্ষণ। এলইডি আলোয় একেবারে নতুন চেহারায় ওই প্রাসাদটিকে তুলে ধরা হবে। আগ্রহী সংস্থাগুলিকে মডেল তৈরি করে তা দেখাতে বলা হয়েছে।”
কোচবিহারের মহারাজা নৃপেন্দ্র নারায়ণের আমলে ১৮৮৭ সালে বিশালাকার এই রাজবাড়ি তৈরি হয়। ১৯৮২ সালে প্রাসাদটি ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ দফতর অধিগ্রহণ করে। প্রতি বছর প্রাসাদ দেখার টানে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের তো বটেই বিদেশের পর্যটকেরাও কোচবিহারে আসেন। গত তিন মাস ধরে গোটা প্রাসাদ চত্বর সন্ধ্যা হলেই অন্ধকারে ডুবে থাকছে। প্রাসাদের আলোকসজ্জায় দুই দফায় মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করা হয়েছিল। ১৯৯৮-এ কলকাতার একটি সংস্থার মাধ্যমে রাজপ্রাসাদ সাদা আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়। বছর পাঁচেকের মধ্যে সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তা বিকল হয়ে পড়ে। ২০০৯ সালে রাজ্য পর্যটন দফতর প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে নানা রঙের আলোয় রাজবাড়ি সাজিয়ে তোলে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এক ঘণ্টা করে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি, সবুজ বাহারি নানা আলো ঠিকরে পড়ত প্রাসাদের গম্বুজ থেকে আঙিনা সর্বত্র। ২০১২ সাল থেকে যন্ত্রাংশে জল ঢুকে সে সব বিকল হয়ে পড়ে। পুরনো সাদা আলো মেরামতি করে জ্বালানো হলেও তিন মাস ধরে তাও বিকল হয়েছে।
প্রতিবার বিপুল টাকা খরচ করে আলোকসজ্জার পর রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো হয় না বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বার বরাত পাওয়া সংস্থাকে ৫ বছর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে আলোচনা চলছে। হেরিটেজ সোসাইটির সম্পাদক অরূপজ্যোতি মজুমদার বলেন, “সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই রাজবাড়ির আঁধার ঘোচেনি। রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।”
মদনমোহন বাড়ির জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছে। রাজবাড়ির জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং পর্যটন দফতরের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy