চলছে বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরে বেপরোয়া যান চলাচল রুখতে উদ্যোগী হল প্রশাসন। পুলিশের অনুপস্থিতিতেও যাতে বেপরোয়া গাড়ির চালকদের ধরা যায় তারজন্য ‘স্পিড গান’ বা ‘স্পিড রাডার’ বসানোর প্রস্তাব দিলেন রাজ্যের এডিজি (ট্রাফিক) কুন্দন লাল টামটা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। দু’ঘন্টার বৈঠকে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন তাঁরা। ‘স্পিড গান’ বসানোর ব্যপারে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর কথাও ঠিক হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, ‘স্পিড গান’ বা ‘স্পিড রাডার’ ব্যবস্থার মাধ্যমে পথ চলতি গাড়ির গতি মাপা সম্ভব হবে। নির্ধারিত মাত্রার থেকে বেশি গতিতে গাড়ি চললে ওই যন্ত্রে লাগানো ক্যামেরাই গাড়ির ছবি তুলে নেবে। পরে তা দেখে গাড়ি চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। এবং সেই মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। লক্ষাধিক টাকা মূল্যের এই যন্ত্রগুলি বসানোর জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি ও উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ কর্তারা সেই পরিকল্পনার বিষয়টি জানালে তারপরই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
‘স্পিড গান’ বা ‘স্পিড রাডার’ ব্যবস্থা চালু করতে হলে রাস্তা সম্প্রসারণ প্রয়োজন বলেও মনে করেন এডিজি। এ ব্যাপারেও সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে তিনি জানান। এডিজি ট্রাফিক বলেন, “ট্রাফিকের সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নতুন কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কথা বলা হবে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, রাজ্য সড়ক কর্তৃপক্ষ, পূর্ত দফতর মহকুমা ও ব্লক স্তরের প্রশাসনের সঙ্গে। কারণ রাস্তার কারণে বহু দুর্ঘটনা ঘটছে। আগে সেদিক থেকে নিশ্চিত হতে হবে।” তারপর বাকি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান তিনি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর প্রবণতা বন্ধ করতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে দিয়ে চালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা ভাবনা হচ্ছে। এদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন, ডিসি সদর, অংমু গ্যামসো পাল, ডিসি ট্রাফিক শ্যাম সিংহ, উত্তর দিনাজপুরের এসপি সৈয়দ ওয়াকার রাজা, এবং জলপাইগুড়ির এএসপি জেমস কুজুর।
ট্রাফিক আইন অমান্য করলে জরিমানার উপরেও জোর দেওয়ার বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। শিলিগুড়িতে জরিমানার হার কমিশনারেট হওয়ার পরেও বাড়ানো হয়নি। হাওড়ার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “কমিশনারেট হওয়ার আগে হাওড়া থেকে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের মামলায় ১ কোটি টাকা বার্ষিক আয় ছিল। কমিশনারেট হওয়ার পরে বছরেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ কোটিতে। শিলিগুড়িতে সেই অঙ্ক ১ কোটি টাকার কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে।” আবার ট্রাফিক আইন ঠিকমত মানা হচ্ছে কি না তা দেখার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত কর্মীর অভাব রয়েছে বলেও এডিজি স্বীকার করেন। ঘাটতি পূরণের জন্য ইতিমধ্যেই শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট থেকে আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশ কমিশনার জগমোহন। তা না মেলা পর্যন্ত বিকল্প ব্যবস্থার কথাও তাঁরা ভাবছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy