Advertisement
০২ মে ২০২৪

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হামলায় জামিন ধৃতদের, ক্ষোভ

ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে হামলার ঘটনায় ধৃত মদ্যপ দুই যুবক জামিনে ছাড়া পেলেন সোমবার। গত শুক্রবার রাতে কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়ির ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে ছবি তোলা ও ডাক্তারদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে এ দিন তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারদের একাংশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কামাখ্যাগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:৫৩
Share: Save:

ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঢুকে হামলার ঘটনায় ধৃত মদ্যপ দুই যুবক জামিনে ছাড়া পেলেন সোমবার। গত শুক্রবার রাতে কুমারগ্রামের কামাখ্যাগুড়ির ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে ছবি তোলা ও ডাক্তারদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে এ দিন তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারদের একাংশ।

ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পুলিশ লঘু ধারায় মামলা করেছে। (২৯০ ধারা, মাতলামির অভিযোগে যে ধারা প্রয়োগ হয়)। অথচ অভিযুক্তরা ডাক্তারকে হেনস্থা, মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীদের গালিগালাজ এবং লেবার রুম ও মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকে মহিলা রোগীদের ছবিও তুলেছেন বলে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন। তা জেনেও পুলিশ কেন শুধু মাতলামির ধারা প্রয়োগ করল, তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যদিও পুলিশের ব্যাখ্যা, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ করতে দেরি করায় প্রথমে অভিযুক্তদের ২৯০ ধারায় আদালতে পাঠানো হয়। লিখিত অভিযোগ পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে ৪৪৮, ৩৫৩, ৫৫৪সি, ৪২৭, ৫০৬, ৩৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে। কামাখ্যাগুড়ির পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লিখিত অভিযোগ সঠিক সময়ে না জমা পড়ায় এ সমস্যা হয়েছে। তবে অভিযুক্তদের ফের ধরা হবে।

তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকার বলেন, লিখিত অভিযোগ না পেলেও পুলিশ নিজে থেকেই তদন্ত করে মামলা শুরু করতেই পারত। তৃণমূলের কুমারগ্রাম ব্লক সভাপতি দুলাল দে বলেন, “পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিক। এ ধরনের কাজ কোনও ভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা চিকিত্‌সকদের পাশে আছি। হাসপাতালে অবিলম্বে সন্ধ্যা থেকে পুলিশ পিকেট বসানোর দাবি জানাচ্ছি।” তৃণমূলের আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “দল এমন কাজ সমর্থন করে না। অভিযুক্তরা যাতে শাস্তি পায় তার দাবি জানাচ্ছি।”

শুক্রবার রাতে ওই দুই যুবক মদ্যপ অবস্থায় পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে যান। ওই সময় জরুরি বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঠাকুর। প্রথমেই তাঁর মাথায় জ্যাকেট ফেলে দেওয়া হয়। চিকিত্‌সক ও নার্সকে গালি দেন তাঁরা। চিকিত্‌সক প্রতিবাদ করতেই তাঁর জামার কলার ধরে ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মহিলা বিভাগ ও লেবার রুমের দরজা লাথি মেরে খুলে মোবাইলে মহিলা রোগীদের ছবি তোলে ওই দুই যুবক। খবর পেয়ে কামাখ্যাগুড়ি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে ওই যুবকদের গ্রেফতার করে। কৃষ্ণেন্দুবাবুর অভিযোগ, “আমরা ঘটনার দিন রাতেই পুলিশকে বিস্তারিত জানিয়েছি। তবুও কেন পুলিশ শুধুমাত্র ২৯০ ধারায় মামলা করল, বুঝতে পারছি না। আমরা চাই, অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তি হোক। আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও দেখা হোক।” আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়সবাল বলেন, “এ ব্যপারে আর কোনও অভিযোগ মেলেনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সঠিক ধারায় মামলা করা হয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি পলাশ দে-র দাবি, অভিযুক্ত দুই যুবক তৃণমূল সমর্থক। তাই পুলিশ ওদের বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করেছে। সিপিএমের জোনাল সম্পাদক বীরেন বর্মন বলেন, “অভিযুক্তরা তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিত। তৃণমূলের চাপেই অভিযুক্তদের বাঁচানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE