Advertisement
০৯ মে ২০২৪

সার্ভার বিকল, শিকেয় অনলাইনে পুজো

একরকম ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ করে ‘অনলাইনে’ মদনমোহনের পুজোর উদ্বোধন করা হয়েছিল। তার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। অভিযোগ, অনলাইনে এক দিনও পুজো দিতে পারেননি কেউ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও দুরে বসে মদনমোহনের আরাধনা সম্ভব হয়নি ভক্তদের। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন মদনমোহন দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডও।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২১
Share: Save:

একরকম ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রায় এক লক্ষ টাকা খরচ করে ‘অনলাইনে’ মদনমোহনের পুজোর উদ্বোধন করা হয়েছিল। তার পর কেটে গিয়েছে পাঁচ মাস। অভিযোগ, অনলাইনে এক দিনও পুজো দিতে পারেননি কেউ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও দুরে বসে মদনমোহনের আরাধনা সম্ভব হয়নি ভক্তদের। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন মদনমোহন দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডও। ট্রাস্ট জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণেই অনলাইন পুজো ঠিকমতো চালু করা যায়নি। সেক্ষেত্রে কেন পাঁচ মাসেও ব্যবস্থা নেওয়া হল না সে প্রশ্ন উঠেছে। অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা করাতে গিয়ে লাখ টাকা জলে দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন অনেকেই।

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান তথা কোচবিহারের জেলাশাসক পি ঊল্গানাথন জানিয়েছেন, “সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় সমস্যা হয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির সার্ভার বসাতে হবে। সেক্ষেত্রে তিন লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে। সে জন্য একটু দেরি হচ্ছে। তবে শীঘ্রই আমরা অনলাইনে পুজো চালু করব।” দেবোত্তরের আরেক সদস্য কোচবিহারের মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা জানান, যে সংস্থা মদনমোহনের অনলাইন পুজোর ব্যবস্থা করেছে তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছে।

দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রের খবর, গত ২৯ মে মদনমোহন মন্দিরে অনলাইন পুজোর উদ্বোধন করা হয়। কলকাতার একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে অনলাইনে পুজোর ব্যবস্থা করার জন্য বরাত দেওয়া হয়। সেই সংস্থার তরফে মে মাসে কাজ শেষ করা হয়েছে বলে দেবোত্তরকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তার ভিত্তিতেই অনলাইন পুজো চালু করা হয় বলে সূত্রের খবর। একই সঙ্গে অনলাইনে পুজোর নিয়মকানুনও জানিয়ে দেয় দেবোত্তর ট্রাস্ট। বলা হয়,অনলাইনে নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে হবে। বেশ কিছু তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে জানাতে হবে। এর পরে নির্দিষ্ট সময়ে গোত্র, নাম উল্লেখ করে পুজো দেবেন পুরোহিত। গোটা দৃশ্য ভিডিওতে তুলে ভক্তদের ইমেলে পাঠানো হবে। পার্সেলের খরচ দিলে পুজোর শুকনো প্রসাদ, প্রসাদী ফুল পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ওই তথ্যে আরও জানানো হয়, পাঁচশো টাকা থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত পুজো দেওয়া যাবে। কিন্তু, গোড়াতেই গলদ থাকায় কারও অনলাইনে পুজোর ইচ্ছে এখনও পুরণ হয়নি বলে ট্রাস্টই মানছে।

‘অনলাইন’ এ পুজোর ওই হালে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাম - বিজেপি দুই শিবিরই। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মন্ত্রী অনন্ত রায়ের অভিযোগ, “তৃণমূল সরকারের সমস্ত কাজই পরিকল্পনাহীন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা। যদি কোনও সংস্থা ওই কাজ করতে না পারে তা হলে তাঁকে বরাত দেওয়া হল কেন?” তৃণমূল ছেড়ে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতা কুমার রাজীব নারায়ণ ওই ঘটনার তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন,“কোন সংস্থাকে কী প্রক্রিয়ায় বরাত দেওয়া হয়েছে তা সামনে আসা দরকার। সে জন্য তদন্ত চাই।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “সিপিএম, বিজেপির ওই সব কথার মানে হয় না। অনলাইনে পুজো চালু হয়েছে। প্রযুক্তিগত ত্রুটি থাকলে তা ঠিক করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE