বিভাগীয় তদন্তের নামে হিমূলের উৎপাদন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। সংস্থার চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসকে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। সেই মতন বুধবার বিকালে অবশেষে বাজারে হিমূলের দুধ মেলে। মঙ্গলবারই সংস্থার আর্থিক অস্বচ্ছতা নিয়ে তদন্ত শুরু করেই সংস্থার মুখ্য কার্য নির্বাহী আধিকারিক (সিইও) মৌখিক নির্দেশ দিয়ে হিমূলের উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ। এতে বুধবার সকালে শহরের কোথাও হিমূলের দুধ মেলেনি।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “হিমূলের চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। হিমূলের উৎপাদন বন্ধ থাকার তো কথা নয়। দুধ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বলা হয়েছে।” মন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার দার্জিলিঙে ছিলাম। জেলাশাসকের সঙ্গে বিস্তারিত কথা হয়েছে। এখনও অবধি কয়েক দফায় হিমূলকে টাকা দেওয়া হয়েছে। তা কীভাবে কোন খাতে খরচ হবে তাও বলা ছিল। অথচ দায়িত্ব থাকা অফিসারেরা তা কিছু ক্ষেত্রে করেননি বলে শুনেছি। কয়েকজন অফিসারকে শোকজ করা হয়েছে। কেউ দোষী হলে অবশ্য শাস্তি পাবেন।
দুধ বন্ধের হিমূল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, “বিভাগীয় তদন্ত হতেই পারে। তবে উৎপাদন বন্ধ করার মত সিদ্ধান্ত অনুচিত। এতে সংস্থাটির পাশাপাশি বাসিন্দারা দুধ না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে হিমূলে অচলাবস্থা চললেও সংস্থা পুনরুজ্জীবনে দ্রুত কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না তা বোঝা যাচ্ছে না।”
হিমূল সূত্রের খবর, চলতি বছরেই কর্মীদের পিএফের প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা জমা না দেওয়ায় হিমূলের পাঁচটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সিজ করে দেন পিএফ কর্তৃপক্ষ। সেই সময় দুধের বকেয়াও ছিল প্রায় ৫২ লক্ষ টাকা। সরকার হিমূলকে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। সেখান থেকে পিএফের বকেয়া মেটানো হয়। বাকি টাকা দিয়ে নানা বকেয়া ছাড়াও বিহার ও শিলিগুড়ি মহকুমার নানা এলাকা থেকে দুধ আনার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সংস্থার তৎকালীন সিইও পদ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে বিভিন্ন মহলে আবেদনও করেন। এতে সেই সময় সংস্থার কাজকর্ম চালাচ্ছিলেন সংস্থার ওই তিন অফিসার। তাঁদের আর্থিক লেনদেনের ক্ষমতা না থাকলেও তাঁরা তা করেন বলে অভিযোগ। এমনকি, নগদেও টাকা খরচ হয়। সম্প্রতি হিমূলের সিইও পদে বসেছেন দার্জিলিঙের অতিরিক্ত জেলাশাসক রচনা ভকত।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সিইও সংস্থার হিসাবপত্র খতিয়ে দেখতে গিয়ে নানা অস্বতা দেখতে পান বলে অভিযোগ। এর পরেই মঙ্গলবার নথিপত্র পরীক্ষা পর তিনজন অফিসারকে শোকজ করে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। মন্ত্রী সংস্থার চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেওয়ার পর বিকালে বাজারে দুধ আসে। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে হিমূলের দুধ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকার কথা রয়েছে। যদিও হিমূল কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy