উত্তর দিনাজপুরে ফের ‘ধাক্কা’ কংগ্রেসের। চেয়ারম্যান-সহ ১০ কাউন্সিলরের তৃণমূলে যোগদানের সিদ্ধান্তের ফলে তাদের হাতছাড়া হতে চলেছে ডালখোলা পুরসভা।
প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির অনুগামী বলে পরিচিত উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের কংগ্রেস বিধায়ক গোলাম রব্বানি দেড় মাস আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এ বারে তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন জেলায় দীপাদেবীর আরেক অনুগামী বলে পরিচিত ডালখোলা পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ডালখোলা শহর কংগ্রেস সভাপতি সুভাষ গোস্বামী। সুভাষবাবুর সঙ্গে ডালখোলা পুরসভার আরও নয় জন কংগ্রেস কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার সুভাষবাবু ওই নয় কংগ্রেস কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েকদিনের মধ্যে কলকাতায় প্রদেশ তৃণমূলের দফতরে গিয়ে ১০ জন আনুষ্ঠানিকভাবে দলবদল করবেন। জেলার চারটি পুরসভা রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, ইসলামপুর ও ডালখোলা, সবকটিতেই ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। এই দলবদলের পরে ১৬ ওয়ার্ডের ওই পুরসভা তৃণমূলের দখলে আসবে।
সুভাষবাবুর যুক্তি, “ডালখোলা শহরের সার্বিক উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করবে। তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা চলছে। শহরের স্বার্থেই আমরা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” তিনি জানান, এলাকায় সিপিএমের সাংসদ। উন্নয়নের টাকা পাওয়া নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কংগ্রেসের সাংসদ না থাকায় সমস্যা তো আছেই। তা ছাড়া সিপিএম পুরসভা দখলের চেষ্টা করছে। তাই সবদিক চিন্তা করেই আমরা তৃণমূলে যাচ্ছি। জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, “উন্নয়নের জন্যই ওঁরা তৃণমূলে যোগ দিতে চেয়েছেন। আমরা ওঁদের স্বাগত জানাচ্ছি।”
উল্লেখ্য, গত লোকসভা নির্বাচনে গোলাম রব্বানি ও সুভাষবাবু গোয়ালপোখর ও ডালখোলা এলাকায় দীপাদেবীর নির্বাচনী প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন। গত ২১ জুলাই কলকাতায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের অনুষ্ঠানে গিয়ে গোলাম রব্বানি তৃণমূলে যোগ দেন। তারপরে সুভাষবাবু দলত্যাগের সিদ্ধান্ত জানানোর পরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ এনেছেন দীপাদেবী। তাঁর কথায়, “পুরসভা দখল করতে তৃণমূল প্রলোভন দেখিয়ে ও চাপ সৃষ্টি করে ডালখোলায় দলবদল করাচ্ছে। তবে যাঁরা দল ছাড়বেন বলে তাঁরা কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছেন। কাউন্সিলর পর না ছেড়ে এভাবে দল ছাড়াটা মানুষের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।” যদিও প্রলোভন বা চাপের কথা অস্বীকার করেছেন সুভাষবাবু।
২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডালখোলা পুরসভা নির্বাচন হয়। মোট ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১০টি ওয়ার্ড দখল করে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। বামফ্রন্ট চারটি ও তৃণমূল দু’টি ওয়ার্ডে জয়ী হয়। সুভাষবাবুদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করেছে বামফ্রন্ট। জেলা বামফ্রন্টের সচিব তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব পাল বলেন, “মানুষের নজর ঘুরিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কলঙ্ক ঢাকতেই সুভাষবাবুরা কৌশলে সিপিএমের নামে কুৎসা রটাচ্ছেন। আর আমাদের সাংসদ উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করেন না।”
সুভাষবাবুদের দলবদল প্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, “দীপাদেবী যতদিন সাংসদ ছিলেন, ততদিন সুভাষবাবুরা ক্ষমতার লোভে কংগ্রেসে ছিলেন। দীপাদেবী হেরে যেতেই তাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন। আসলে ওঁরা ক্ষমতা ছাড়া থাকতে পারেন না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy