Advertisement
E-Paper

জামিন প্রত্যাশিতই ছিল, সরব বিরোধীরা

এক জনের অপেক্ষা পাঁচ মিনিটের! আর এক জনকে বসতে হল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা! কিন্তু পরিণতি দু’জনেরই এক। পুলিশ এবং বিরোধীদের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত শাসক দলের দুই নেতা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাপস পাল জামিন পেয়ে গেলেন সহজেই। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতকে সোমবার এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিয়েছে সিউড়ি জেলা আদালত। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপসও কৃষ্ণনগরের জেলা সদর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৫ ১৭:৩৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

এক জনের অপেক্ষা পাঁচ মিনিটের! আর এক জনকে বসতে হল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা! কিন্তু পরিণতি দু’জনেরই এক। পুলিশ এবং বিরোধীদের হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত শাসক দলের দুই নেতা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাপস পাল জামিন পেয়ে গেলেন সহজেই। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতকে সোমবার এক হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দিয়েছে সিউড়ি জেলা আদালত। কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ তাপসও কৃষ্ণনগরের জেলা সদর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন। রাজ্য প্রশাসন যে ভাবে চলছে, তাতে দু’জনের জামিনই ‘প্রত্যাশিত’ ছিল বলে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, এ রাজ্যে আইনের শাসন বলে আদৌ কি কিছু আছে আর?

দু’বছর আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময় বীরভূমের অনুব্রত দলের কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছিলেন, নির্দল প্রার্থীদের যে প্রশাসনের পুলিশ সাহায্য করবে, তাদের উপরে বোমা মারুন! আর গত বছর লোকসভা ভোটের পরে নিজের কেন্দ্রের অন্তর্গত চৌমুহা গ্রামে গিয়ে সাংসদ তাপস হুমকি দিয়েছিলেন, সিপিএমের সমর্থকদের বাড়িতে ‘ছেলে পাঠিয়ে রেপ করিয়ে’ দেওয়া হবে! দু’জনের মন্তব্য নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসন গোড়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করেনি। শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়। কিন্তু তার পরেও পুলিশ দু’জনের নামে অপেক্ষাকৃত লঘু ধারা দিয়েছে বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। সেই কারণেই ‘আইনের শাসন’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তারা।

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘ওঁদের বাড়িতে গিয়ে জামিন দিয়ে আসা হয়নি, এটাই তো বিরাট ব্যাপার! পুলিশ জেনেশুনেই লঘু ধারা দিয়েছিল। তার থেকে ওঁরা সহজেই জামিন পেয়েছেন। শাসক দলে থাকলে এখানে সাত খুন মাফ!’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, তাপসের বিরুদ্ধে রাজ্য প্রশাসন কি আদৌ ব্যবস্থা নিতে আগ্রহী ছিল? তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েই দলে ক্ষমা পেয়ে গিয়েছিলেন তাপস। তাঁর বিরুদ্ধে কেন ফৌজদারি মামলা শুরু হবে না, এই নিয়ে আদালতে আবেদন হওয়ার পরে তার বিরুদ্ধে পাল্টা আবেদন পর্যন্ত দাখিল করেছিল রাজ্য সরকার। সুতরাং, তাপস যে শেষ পর্যন্ত আত্মসমর্পণ করলেই জামিন পাবেন, তা জানাই ছিল বলে তাঁদের দাবি। এই সূত্রেই প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘‘এটা তো গট আপ গেম হচ্ছে! আইন বাঁচানোর জন্য তৃণমূলের সরকার নাম কা ওয়াস্তে তদন্ত করছে। কিন্তু তাদের পুলিশ এমন চার্জশিট দিচ্ছে, যাতে জামিনের রাস্তা পরিষ্কার থাকে। শাস্তি কোথাও হচ্ছে না।’’ একই ভাবে বিজেপি-র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘আইনের শাসন বলে আর কিছু নেই। তৃণমূলের শাসনে পুলিশ চলছে! পুলিশ এখন শাসক দলের অন্যতম শাখা সংগঠন। তার ফল যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে!’’

শাসক দলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ অবশ্য মুখ খোলেননি। তবে তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার মন্তব্য, ‘‘জামিন তো দিয়েছে আদালত। পাঁচ মিনিটে হল, না পাঁচ ঘণ্টায় হল, তা নিয়ে বিতর্ক করে লাভ আছে? আর এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কই বা কী!’’

anubrata mondal trinamool tmc tapas paul mamata bandopadhyay cpm Congress bjp
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy