Advertisement
০২ মে ২০২৪

চলবে না ‘পুশব্যাক’, বার্তা মুসলিম-মঞ্চে

‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনে’র ডাকে সোমবার পার্ক সার্কাস থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে ভিড়ের ধাক্কায় বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য অবরুদ্ধ হয়ে গেল শহর। মিছিল শেষে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে প্রতিবাদ সভাতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়।

সুজন চক্রবর্তী এবং পীর ত্বহা সিদ্দিকি। ছবি: সংগৃহীত

সুজন চক্রবর্তী এবং পীর ত্বহা সিদ্দিকি। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

উপলক্ষ মায়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপরে অত্যাচারের প্রতিবাদ। কিন্তু তার নামে আসলে হল মোদী-বিরোধী জমায়েত। বিপুল ভিড়ে ঠাসা সমাবেশ থেকে সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতৃত্বের পাশাপাশি রাজ্যের বিরোধী নেতারাও হুঁশিয়ারি দিলেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। মোদী সরকারের ‘পুশব্যাক’ নীতির কড়া প্রতিবাদ হল সেই মঞ্চ থেকে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর নীতি মানতে না চাইলেও তৃণমূলের কাউকে অবশ্য সেখানে দেখা গেল না।

‘সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনে’র ডাকে সোমবার পার্ক সার্কাস থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিলে ভিড়ের ধাক্কায় বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য অবরুদ্ধ হয়ে গেল শহর। মিছিল শেষে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে প্রতিবাদ সভাতেও ছিল উপচে পড়া ভিড়। সেই মঞ্চ থেকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, ফুরফুরা শরিফের পীর ত্বহা সিদ্দিকি এবং যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামারুজ্জামান নিশানা করেছেন মোদী সরকারকেই। রোহিঙ্গা-প্রশ্নকে উপলক্ষ করে মোদী বিরোধী বার্তা দেওয়াই এই সংখ্যালঘু সমাবেশের নেপথ্য উদ্দেশ্য ছিল বলে রাজনৈতিক শিবিরের অভিমত। ওই সমাবেশে অংশ না নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য তথা জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীও পৃথক ভাবে জানিয়েছেন, তাঁরা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহে নামবেন।

আরও পড়ুন: নরেন্দ্রর পথেই, দাবি মোদীর

মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে উৎপীড়িত হয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমেরা আশ্রয় নিচ্ছেন বাংলাদেশে। সেখান থেকে প্রতিবেশী কিছু দেশেও আশ্রয়ের খোঁজে ঢুকছেন তাঁরা। কেন্দ্রের মোদী সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ঢুকে পড়া রোহিঙ্গাদের ‘পুশব্যাক’ করে ফেরত পাঠানো হবে। সেই সিদ্ধান্ত মানা হবে না বলে ঠিক করেছে মমতা সরকার। প্রতিবাদ সভা থেকে এ দিন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবুও বলেন, ‘‘রোহিঙ্গারা বিরিয়ানি, মাংস, পোলাওয়ের জন্য এ দেশে আসছেন না। তাঁরা আসছেন প্রাণ বাঁচাতে। ভারত চিরকাল পীড়িতকে আশ্রয় দিয়েছে। মোদী সরকার এখন ভারতের সেই সংস্কৃতিকে ভেঙে দিতে চাইছে।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজনবাবুও হঁশিয়ারি দিয়েছেন, ‘‘জোর করে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠালে এই জনতা আপনাকেও ( মোদী) ফেরত পাঠাবে!’’ পাশাপাশিই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অধীরবাবুর অনুরোধ, আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য উদ্বাস্তু কার্ডের ব্যবস্থা করা হোক।

ত্বহা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাঁরা শান্তিপূর্ণ পথেই প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু অত্যাচার বন্ধের বার্তা মায়ানমার সরকারকে দেওয়া না হলে শহরে বাণিজ্যিক দূতাবাস থেকে তাঁরা ইট খুলে আনতে পারেন! কামারুজ্জামানের কটাক্ষ, ‘‘মোদীজি আপনি গরু, ঘোড়া, ছাগল যে কোনও কাউকে মা বলতে পারেন! কিন্তু মানবিকতা ভুলে যাবেন না।’’

পরে জমিয়তে নেতা সিদ্দিকুল্লাও বলেন, ‘‘বাংলাদেশে যাতে রোহিঙ্গাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়, তার জন্য সরকারকে অনুরোধ জানাব। আমরা ত্রাণ সংগ্রহ করব।’’ ফেরত পাঠানোর নীতির প্রতিবাদ করেছে এসইউসি-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE