Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
পোষা ময়ূরের মৃত্যু

তৃণমূল বিধায়ক বলেই কি হল না মামলা, প্রশ্ন

বাড়িতে ময়ূর পুষে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন আগেই। বৃহস্পতিবার তারই একটি মারা যাওয়ায় ‘জাতীয় পাখি’র ‘অবমাননা’র প্রশ্ন তুলে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করার দাবি তুললেন বিরোধীরা। তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার শাসক দলের বিধায়ক। সাকিন: বড়জোড়ার শাল জঙ্গল ঘেরা খাঁড়ারি গ্রাম।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪৬
Share: Save:

বাড়িতে ময়ূর পুষে বিতর্কে জড়িয়ে ছিলেন আগেই। বৃহস্পতিবার তারই একটি মারা যাওয়ায় ‘জাতীয় পাখি’র ‘অবমাননা’র প্রশ্ন তুলে তাঁর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করার দাবি তুললেন বিরোধীরা।

তিনি আশুতোষ মুখোপাধ্যায়, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার শাসক দলের বিধায়ক। সাকিন: বড়জোড়ার শাল জঙ্গল ঘেরা খাঁড়ারি গ্রাম।

দিন কয়েক আগে বিভাগীয় বৈঠকে যোগ দিতে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ে এসেছিলেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। সেখানেই সাংবাদিকেরা তাঁকে জানিয়েছিলেন, আশুতোষবাবু তাঁর বাড়ির উঠোনে রীতিমতো খাঁচা গড়ে এক জোড়া ময়ূর পুষেছেন। সব শুনে বনমন্ত্রী স্থানীয় বনাধিকারিকদের এ ব্যাপারে খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। বিধায়ক অবশ্য দাবি করেছিলেন, তিনি ময়ূর দু’টিকে নাকি উদ্ধার করে বাড়িতে এনেছিলেন! তবে মন্ত্রীর তৎপরতার কথা কানে যেতেই, বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই দলীয় কর্মীকে দিয়ে মোটরসাইকেলে চাপিয়ে বন দফতরের বেলিয়াতোড় রেঞ্জ অফিসে ময়ূর দু’টিকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন আশুতোষবাবু। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে—বিধায়কের পাঠানো ময়ূর দু’টির একটি ‘মৃত অবস্থাতেই’ এসে পৌঁছেছিল তাঁদের কাছে। ময়নাতদন্তের পরে প্রাণী চিকিৎসকেরা জানান, সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে সেটি। এখন প্রশ্ন, শখ করে বাড়িতে কি ময়ূর পোষা যায়? বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, বন-আইনে শিডিউল-১ তালিকাভুক্ত ময়ূর। পোষ্য করে বাড়ির চৌহদ্দিতে তাকে রাখতে গেলে বন দফতরের বিশেষ অনুমতি চাই। না হলে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করতে পারে বন দফতর।

আশুতোষবাবু যে অনুমতির ধার ধারেননি, তা বনাধিকারিকেরাই আড়ালে কবুল করেছেন। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হল না কেন? বনকর্তাদের কাছে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। বনমন্ত্রীর দায়সারা জবাব, ‘‘এ ব্যাপারে যা পদক্ষেপ করার বন দফতর করবে।” বন দফতরের কর্তা-কর্মীদের একাংশ বলে দিচ্ছেন, চারপাশে যা ঘটছে, তার পরে স্রেফ ময়ূর পোষার জন্য শাসকদলের বিধায়কের বিরুদ্ধে মামলার কথা তাঁরা ভাবতে পারছেন না।

গ্রামবাসীদের এক অংশ জানান, বছর দুয়েক আগে তিনটি ময়ূর শাবক বাড়িতে আনেন তৃণমূলের ওই বিধায়ক। বছর খানেক আগে কুকুরের কামড়ে একটি মারা যায়। বাড়ির উঠোনেই খাঁচা তৈরি করে অন্য দু’টিকে রেখেলেন তিনি। বিধায়ক অবশ্য দাবি করছেন, “বড়জোর মাস খানেক আগে ওই ময়ূর দু’টিকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে এসেছিলাম। বন দফতরকে সে কথা জানিয়েওছিলাম। তবে, একটি ময়ূর অসুস্থ হয়ে পড়ায় বন দফতরের কাছে পাঠিয়েছিলাম। আমার হেফাজতে কিন্তু ময়ূর মারা যায়নি।” জেলা তৃণমূলের একাংশ আবার দাবি করছেন, উদ্ধার নয়, সোনামুখী এলাকা থেকে তিনটি ময়ূর শাবক কিনেছিলেন আশুতোষবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE