Advertisement
২০ মে ২০২৪

পঞ্জিছুট পরিবার চাইছে নবান্নের সাহায্য

এই বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসন অবশ্য কিছু বলতে চাননি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।”

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৩৯
Share: Save:

কারও নাওয়া-খাওয়া বন্ধ। কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইতিউতি। অনেকের কাছেই স্পষ্ট নয়, কেন তাঁদের মেয়ের নাম অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নেই। আবার কেউ কেউ ক্ষোভের সঙ্গে জানান, এনআরসি-র জন্যে নথি জোগাড় করতে হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে। এ বারে একযোগে কোচবিহারের সেই সকল পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, হয় তাঁদের ঘরের মেয়েদের নাম তুলতে অগ্রণী ভূমিকা নিক পশ্চিমবঙ্গ সরকার বা কোচবিহার প্রশাসন। নতুবা তাঁদের পরিবারকেও ভারতীয় নয় বলে ঘোষণা করে দেওয়া হোক।

এই বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসন অবশ্য কিছু বলতে চাননি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “এই বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলবেন।” মোয়ামারির বাসিন্দা মহম্মদ আজিজ বলেন, “কিছুই ভাল লাগছে না। কেন মেয়ের নাম নেই কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। কারণও সঠিক ভাবে জানানো হয়নি।”

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, ১৯৭৪ সালে কোচবিহারে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে জেলা প্রশাসনের রেকর্ড রুম পুড়ে যায়। সেখানে থাকা সমস্ত পুরনো নথি পুড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হয় বহু মানুষকে। অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নাম তোলার জন্য নথি সংগ্রহে নেমে সেই সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। অনেক আবেদন-নিবেদনেও সেই রেকর্ড নতুন করে কলকাতা থেকে আনার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। উল্টে সাধারণ মানুষকে ছুটতে হয়েছে কলকাতায়। সেই সময় থেকেই প্রশাসন ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সামনে চলে আসে বাসিন্দাদের।

সিপিএমের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সেই নথিপত্র কেন প্রশাসন সমস্ত দফতরে আনার ব্যবস্থা করল না। কেনই বা তা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত রাখা হবে না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। এ বারে আবার নথি চাইলে যাতে সে ব্যবস্থা করা হয়, সে দাবি করা হয়েছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা বলেন, “এনআরসি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। কোচবিহারের প্রত্যেকটি মানুষের যাতে ওই নাগরিকপঞ্জিতে নাম থাকে সে দায়িত্ব প্রশাসনকে নিতে হবে।”

কোচবিহারের কয়েক হাজার পরিবারের মেয়ের বিয়ে হয়েছে অসমে। যাদের মধ্যে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারাও রয়েছেন। তাঁদের একটি বড় অংশের নাম নেই অসমের নাগরিকপঞ্জিতে। এমনকি অভিযোগ, প্রয়োজনীয় নথি জমা দেওয়ার পরেও কোনও কাজ হয়নি। সেই সব বাসিন্দারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ছিটমহল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “প্রশাসন বা সরকার প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি পঞ্চায়েত স্তরে পাঠানোর ব্যবস্থা করুক। সে ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা থাকার কারণ নেই।”

তৃণমূলের কোচবিহার জয়হিন্দ বাহিনীর সভাপতি প্রবাল গোস্বামী বলেন, “সমস্ত নথি জমা দেওয়ার পরেও অসমের নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই কোচবিহার থেকে বিয়ে হয়ে যাওয়া প্রচুর মেয়ের। অনেক পরিবার উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন। আমরা এই নিয়ে আইনি পথে লড়াই করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NRC Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE