Advertisement
০২ মে ২০২৪

স্থায়ী হেলিপ্যাডের জন্য জমি বাছাই

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হেলিকপ্টার পরিষেবার জন্য স্থায়ী হেলিপ্যাড বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো, কাজ শুরু হল বসিরহাটে। মঙ্গলবার দুপুরে বসিরহাটে আসেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা। প্রায় এক ঘণ্টা মাপজোকে পরে ঠিক হয়, বসিরহাট ১ ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া পঞ্চায়েতের পাতিলাচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে (বেদেপোতার মাঠ) গড়ে তোলা হবে স্থায়ী হেলিপ্যাড।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০২:৪০
Share: Save:

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হেলিকপ্টার পরিষেবার জন্য স্থায়ী হেলিপ্যাড বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো, কাজ শুরু হল বসিরহাটে।

মঙ্গলবার দুপুরে বসিরহাটে আসেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা। প্রায় এক ঘণ্টা মাপজোকে পরে ঠিক হয়, বসিরহাট ১ ব্লকের নিমদাঁড়িয়া-কোদালিয়া পঞ্চায়েতের পাতিলাচন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে (বেদেপোতার মাঠ) গড়ে তোলা হবে স্থায়ী হেলিপ্যাড।

প্রশাসনের ওই দলে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বিজিত ধর, পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার রাজা চট্টোপাধ্যায়, মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি তথা ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ ঘোষ, বসিরহাট থানার আইসি গৌতম মিত্র, ডিআইবি-র ইন্সপেক্টর অমিত নন্দী-সহ অনেকে। এক পাশে ফসলি জমির পরে ট্রেন লাইন, অন্য দিকে বসতি পেরিয়ে টাকি রাস্তা। ওই রাস্তার বাঁক থেকে ডান দিকে দেড়শো মিটার এগোলেই বেদেপোতার মাঠ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মাঠেই গড়ে তোলা হবে স্থায়ী হেলিপ্যাড। যাত্রীদের বিশ্রামাগার, বসার জায়গা, শৌচালয়, কাউন্টার-সহ আরও বেশ কিছু পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। টাকি রাস্তার সঙ্গে সংযোগকারী রাস্তাও চওড়া করা হবে।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো এখানে স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি হলে এক দিকে স্টেশন অন্য দিকে বড় রাস্তা থাকায় সুন্দরবন ভ্রমণকারীদের বিশেষ সুবিধা হবে। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে পাতিলাচন্দ্র আসার পরে নিকটবর্তী স্টেশন থেকে ট্রেনে, নয় তো গাড়িতে টাকি হয়ে হাসনাবাদ যেতে বড়জোর মিনিট কুড়ি সময় লাগবে। টাকিতে ইছামতী নদীর অন্য পাড়ে বাংলাদেশের শোভা দেখতে পাবেন পর্যটকেরা। হাসনাবাদ নদী পেরিয়ে নেবুখালি হয়ে সোজা চলে যাওয়া যাবে একবারে সামসেরনগর কিংবা হেমনগর। সুন্দরবনের কিনারায় কুড়েখালি, রায়মঙ্গল নদীর ধারেও পৌঁছনো যাবে। এ সব কথা মাথায় রেখে পাতিলাচন্দ্রের ওই মাঠকে উপযুক্ত বলে মনে করছেন বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।

বিভিন্ন সময়ে নেতা-মন্ত্রী কিংবা ভিআইপি ব্যক্তিদের হেলিকপ্টারে আসার জন্য হেলিপ্যাড করার প্রয়োজন পড়ে। সে জন্য বিস্তর খরচ হয়। স্থায়ী হেলিপ্যাড থাকলে সেই খরচও কমবে বলে জানিয়েছেন আধিকিকেরা। বিজিতবাবু বলেন, ‘‘হেলিপ্যাড তৈরির জন্য ২১/২১ মিটার জায়গা লাগবে। এরপরে নিরাপত্তার জন্য আরও ৪১ মিটার করে চার দিকে জায়গা ফাঁকা রাখা জরুরি। এ সবের পর আরও একশো মিটার করে জায়গা দরকার। এখানে ওই পরিমাণ জায়গা পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে না।’’ বিজিতবাবুর বক্তব্য, এখানে তৈরি হেলিপ্যাড সরকারি কাজে লাগবে। তা ছাড়া, কোন সংস্থা যাত্রী পরিষেবা দিতে চাইলে ব্যবহার করতে পারবে। এতে পর্যটনের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধা হবে। আয়লার মতো কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়লে দ্রুত গ্রামের মানুষকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাবে।

পূর্ত দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার রাজা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘হেলিকপ্টার নামার জন্য হেলিপ্যাড ছাড়াও যাত্রী-পরিষেবার জন্য প্রয়োজনীয় আরও জায়গা পাওয়া গিয়েছে। সরকারি জায়গা হওয়ায় আরও সুবিধা হয়েছে। দু’চার দিনের মধ্যে এখানকার সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট দফতরকে রিপোর্ট পাঠানোর পরে আর্থিক অনুমোদন করা হবে। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই হেলিপ্যাডের কাজ শুরু হবে।’’

কী বলছেন গ্রামের মানুষ? প্রাথমিক বিস্ময়টুকু সামলে আকবর আলি মিস্ত্রি, রেজাউল গাজিরা বলেন, ‘‘হেলিপ্যাড হলে রাস্তা হবে। গ্রামের সঙ্গে শহরের যোগাযোগ উন্নতি হবে। আখেরে গ্রামের ভাল হবে।’’

বসিরহাটের পরে ওই দলটি স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরির জায়গা দেখতে বনগাঁয় যায়। গাইঘাটার দেবীপুরে সরকারি কৃষি খামারের জমি ঘুরে দেখেন দলের সদস্যেরা। মাপজোকও করা হয়। বিজিতবাবু বলেন, ‘‘এই জেলায় দু’টি স্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরি হবে। একটি বসিরহাটে অন্যটি বনগাঁয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE