শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই তিনি পরিচিত। তৃণমূলের বহু মিটিং-মিছিলে বিদ্বজ্জন হিসেবে কবি সুবোধ সরকারকে দেখা গিয়েছে। সে সব জায়গায় তিনি শাসকদলের সপক্ষে নানা মন্তব্য করেছেন। সেই সুবোধই এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থী অনশনকারীদের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লিখলেন। যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
গত রবিবার ফেসবুকে সুবোধ লেখেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ আপনি একটু দেখুন। ছেলেমেয়েগুলো এত দিন না খেয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। আপনি বহু গভীর সমস্যার সমাধান করেছেন। কাঁধে ঋণের পাহাড় নিয়ে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। আপনি ওদের দিকে তাকালে, কালকেই আমরা একটা সুন্দর সকাল পেতে পারি।’
এর আগে ওই বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার আবেদন জানিয়েছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। রবিবার ওই কর্মপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, অনশনকারীদের প্রতি সরকারের উদাসীনতা হৃদয়হীনতা ও নিষ্ঠুরতায় পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: দায়িত্বে রত্না, ভোটের কাজ থেকে অপসারিত শোভন মুখ ঢেকেছেন ঔদাসীন্যে
তবে সুবোধ ওই চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়ানোয় সরব হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার একটা বড় অংশ। শাসকদলের ঘনিষ্ঠ হয়ে তিনি এমন একটা বিষয়ে লিখেছেন বলে সোশ্যাল মিডিয়ার একটা অংশ যদিও তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। কিন্তু, অন্য একটা অংশ তাঁর সমালোচনাও করছে। তাদের মতে, সুবোধের লেখা আসলে ঘটনার গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে। কারণ, ওই লেখায় তিনি চাকরিপ্রার্থীদের সপক্ষে বলার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসাই বেশি করেছেন। ওই অংশটির দাবি, ঋণের বোঝা নিয়ে রাজ্য কেমন চালাচ্ছেন মমতা, সেটাকে এই বিষয়ের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে ঘটনার গুরুত্ব কমাতে চেয়েছেন। আসলে তাঁর উদ্দেশ্যই ছিল বিষয়টিকে লঘু করে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করা।
সুবোধ যদিও এ সব মন্তব্যে গুরুত্ব দিতে নারাজ। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘চাকরিপ্রার্থীদের অনশনের বিষয়টি অত্যন্ত মানবিক। এক জন শিক্ষক হিসাবে আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটা আন্তরিক অনুরোধ করেছি। এ বিষয়ে বিতর্ক মোটেই কাম্য নয়। সোশ্যাল মিডিয়া তো সব নিয়েই কথা বলে। সেখানে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি আমার সমালোচনাও করা হয়েছে। সেই সমালোচনাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না। আমি জানি, আমি কী করেছি।’’
আরও পড়ুন: ‘অত্যন্ত গুরুতর’, রাজীব জেরার রিপোর্ট দেখে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির
মুখ্যমন্ত্রীকে খোলা চিঠি লেখাটা সম্পূর্ণ ভাবেই অরাজনৈতিক বলে জানাচ্ছেন সুবোধ। যদিও তাঁর ‘খারাপ লাগা’ অন্যত্র। কারণ, সোশ্যাল মিডিয়ায় যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই তাঁর পূর্ব পরিচিত। সুবোধের কথায়: ‘‘দুঃখের বিষয় হল সমালোচকদের একটা বড় অংশ তথাকথিত প্রগতিশীল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের ভাষা এত নিচু হয়ে গিয়েছে যে, এক কালে এদের সমর্থন করতাম এটা ভাবতেই খারাপ লাগে।’’