ফৈজুল্লাহ
কৌশলটা একেবারে জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-র সদস্যদের মতো। বাংলাদেশ থেকে অবৈধ ভাবে ভারতে ঢুকে এ দেশের কোনও মহিলাকে বিয়ে করে ডেরা বাঁধা এবং তার পরে শ্বশুরকে বাবা বলে পরিচয় দিয়ে আধার ও প্যান কার্ড তৈরি করা। তখন কে বলবে, সে ভারতীয় নাগরিক নয়! এমনই এক সন্দেহভাজন বাংলাদেশিকে শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুর থেকে গ্রেফতার করেছেন বলে সিআইডি-র স্পেশ্যাল অপারেশনস গ্রুপ-এর গোয়েন্দাদের দাবি।
বাদুড়িয়া-বসিরহাটের সাম্প্রতিক অশান্তিতে বাংলাদেশ সীমান্তের ও পার থেকে কিছু লোক এসে মদত জুগিয়েছিল বলে গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি। সেই অনুসন্ধানের সূত্র ধরেই ফৈজুল্লাহ নামে এই বাংলাদেশির হদিস পাওয়া যায়। বেআইনি ভাবে ঢুকে ১০ বছর ধরে ভারতে রয়েছে সে। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বেআইনি ভাবে ভারতে আসার পরে ফৈজুল্লাহকে এখানে থাকার ব্যাপারে সাহায্য করেন দত্তপুকুরের নুর মহম্মদ। পরে নুরের মেয়েকে বিয়ে করে সে। আধার ও প্যান কার্ড পেতে ভুয়ো নথি পেশ করার সময়ে নুর ও তাঁর স্ত্রী নিজেদের ফৈজুলের বাবা-মা হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা। নুর এখন পলাতক। খাগড়াগড় বিস্ফোরণে নিহত, সন্দেহভাজন জেএমবি জঙ্গি শাকিল গাজিও ভারতে ঢুকে নদিয়ার এক তরুণীকে বিয়ে করে এবং শ্বশুরকে বাবা বলে পরিচয় দিয়ে ভোটার কার্ড জোগাড় করেছিল।
ঘোলা থানায় রুজু হওয়া একটি মামলার অভিযুক্ত হিসেবে ফৈজুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার তাঁকে ব্যারাকপুর আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে ৮ দিন সিআইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। দত্তপুকুর থেকে অল্প দূরে বাগপুলের কাছে যেখানে ভাড়া থাকত ফৈজুল্লাহ, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে শনিবার ফৈজুল্লাহের দু’টি আলাদা তারিখের জন্ম-শংসাপত্র, ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের দু’টি পাসপোর্ট ও একটি পরিচয়পত্র, ভারতের দু’টি স্কুল সার্টিফিকেট, আধার ও প্যান কার্ড উদ্ধার করেছে সিআইডি।
ভারতে এত দিন কী করেছে ফৈজুল্লাহ? সিআইডি সূত্রের খবর, বছর আঠাশের ওই যুবক পেশায় শিক্ষক। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অসম, মুম্বই-সহ দেশের বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা ও ধর্মীয় ভাবধারার প্রচার করেছে। এই কাজে সে কোনও নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়েছিল কি না, তার প্রচারে কোনও রকম উস্কানি ছিল কি না, কী উদ্দেশ্যে সে ভুয়ো নথি দিয়ে আধার ও প্যান কার্ড জোগাড় করেছিল— এ সব খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy