Advertisement
E-Paper

বিতর্ক জমালেন প্রণব আর অমর্ত্য

ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম বা সকলের জন্য ন্যূনতম বেতন-এর পক্ষে অনেক দিনই সওয়াল করছেন অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন। রবিবার বিশ্বভারতীতে প্রথম অশোক রুদ্র স্মারক বক্তৃতায় ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আর্থিক নিরাপত্তাকে ‘অধিকার’ হিসেবে স্বীকৃতির উপর জোর দিলেন।

এক মঞ্চে: শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনে অশোক রুদ্র স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রণব বর্ধন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং অমর্ত্য সেন। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

এক মঞ্চে: শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনে অশোক রুদ্র স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে প্রণব বর্ধন, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং অমর্ত্য সেন। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী

স্বাতী ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৪
Share
Save

ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম বা সকলের জন্য ন্যূনতম বেতন-এর পক্ষে অনেক দিনই সওয়াল করছেন অর্থনীতিবিদ প্রণব বর্ধন। রবিবার বিশ্বভারতীতে প্রথম অশোক রুদ্র স্মারক বক্তৃতায় ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আর্থিক নিরাপত্তাকে ‘অধিকার’ হিসেবে স্বীকৃতির উপর জোর দিলেন। এবং অচিরেই জমে উঠল তর্ক। প্রধান বক্তার বিপক্ষে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অমর্ত্য সেন।

প্রণবের যুক্তি, রাষ্ট্রের থেকে দৈহিক নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সব নাগরিকের আছে। তা হলে আর্থিক নিরাপত্তার অধিকারই বা থাকবে না কেন? প্রতিটি নাগরিককে একটা নির্দিষ্ট অর্থ অনুদান দিতে হবে সরকারকে। ধনী-গরিব বাছতে গেলেই বাদ পড়বে বহু দরিদ্র।

এর উত্তরে অমর্ত্যের বক্তব্য, ইউরোপ-আমেরিকায় সবার জন্য অনুদান তিনিও সমর্থন করেন। কিন্তু ভারতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যবণ্টন ব্যবস্থার উন্নতির জন্য আরও টাকা দরকার। সরকার যদি অনুদানে খরচ করে বেশি, তা হলে তাতে টান পড়তে পারে। আর, হাতে টাকা এলে লোকে বেসরকারি পরিষেবার দিকে ঝোঁকে। ফলে আরও অবহেলিত হবে সরকারি পরিষেবা।

প্রণবের উত্তর, সরকারি পরিষেবার বরাদ্দে টান পড়বে কেন? ভর্তুকির আওতা থেকে বাদ দিতে হবে ধনীকে। কর মকুব করা বন্ধ করতে হবে, নতুন কর বসাতে হবে বা বাড়াতে হবে। তাঁর হিসেব, এ ভাবে মোট জাতীয় উৎপাদনের দশ শতাংশ অবধি বাঁচানো সম্ভব। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো আর ন্যূনতম আর্থিক অনুদান, এই চারটি খাতে সে টাকা সমান ভাগ করে দিলেই হল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি দরিদ্রদের জন্য ‘ইউনিভার্সাল বেসিক ইনকাম’ চালু করার প্রস্তাবের উল্লেখ করেছেন। তাই নিয়ে প্রণবের বিদ্রুপ, এ যেন পতির পুণ্যে সতীর পুণ্য। বাছাই করতে গেলেই দুর্নীতি হবে। তাঁর দাবি, সর্বজনীন অনুদানকে দারিদ্রমোচন প্রকল্প বলে নয়, দেখা দরকার অধিকার হিসেবে। অবশ্য অধিকার ঘোষণা করলেই হয় না। প্রয়োজন আন্দোলন। শ্রমিক সংগঠনগুলি সরব না হলে অসংগঠিত শ্রমিকদের নিরাপত্তা দিতে সরকার ধনীর উপর কর বসাতে পারবে না, বলেন প্রণব।

স্মারক বক্তৃতায় সাধারণত প্রশ্নোত্তর হয় না। মঞ্চে বিতর্কও দেখা যায় না। কিন্তু স্মরণ যে হচ্ছে অর্থনীতির অধ্যাপক ও লেখক অশোক রুদ্রের। তর্ক জুড়ে নতুন চিন্তা উস্কে দিতে যাঁর জুড়ি ছিল না। হঠাৎই বাষট্টি বছরে প্রয়াত হয়েছিলেন বিশ্বভারতীর এই অধ্যাপক। যাঁর নতুন চিন্তার ক্ষমতা অতুলনীয়, মনে করেন অমর্ত্য সেন। ‘‘আমার মনে হয়, শেষ যাত্রাতেও যমের সঙ্গে তর্ক করতে করতে গিয়েছেন অশোক রুদ্র,’’ বললেন প্রণবও।

Pranab Bardhan Debate Amrtya Sen Unversal Basic Income

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}