এক পাতা ব্যথাহর ট্যাবলেট, হজমের গোলমাল সারাতে পাঁচটা বড়ি বা কাটাছেঁড়ায় পট্টি কিনতে চাইলে কার্ড কী ভাবে কাজে লাগবে? সেটা কি সম্ভব?
সম্ভব যে নয়, সরাসরি জানিয়ে দিচ্ছেন ওষুধ বিক্রেতারা। অসুবিধার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্য দফতরে চিঠি দিয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলও। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তাদের আর্জি, ‘ক্যাশলেস’ বা নগদহীন ব্যবস্থার প্রস্তাব অবাস্তব। যে-ভাবেই হোক, এটা আটকান।
নোট বাতিল এবং নগদ-ঘাটতিতে কৃষি থেকে শিল্প সবই মার খাচ্ছে। তবে ‘ক্যাশলেস’ বা নগদহীন ব্যবস্থার প্রস্তাবে সব থেকে আতান্তরে পড়েছেন সম্ভবত রোগী এবং ওষুধের দোকানদারেরা। কেননা যখন ওষুধের প্রয়োজন দেখা দেয়, পত্রপাঠ সেটা না-পেলেই নয়। অথচ নগদ-ঘাটতির জেরে সেই ওষুধ যথাসময়ে রোগীর হাতে পৌঁছচ্ছে না। এই ধরনের অভিযোগে ইতি টানতে দেশের সব ওষুধের দোকানে ‘ক্যাশলেস’ ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ১৩ ডিসেম্বর দেশের সব ওষুধ বিক্রেতা সংগঠনকে এই প্রস্তাব দিয়ে চিঠি লেখেন ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া জি এন সিংহ।
কিন্তু এ রাজ্যের বিক্রেতারা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের পক্ষে এখনই এই ব্যবস্থা মানা সম্ভব নয়। একই বক্তব্য জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোল কর্তারা।
ক্যাশলেস কেনাকাটার জন্য প্রথমেই যে-দু’টি জিনিসের প্রয়োজন, সেগুলো হল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আর কার্ড। অথচ অনেক গ্রামেই ব্যাঙ্ক নেই। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই অর্ধেকের বেশি গ্রামবাসীর। রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোলার চিন্তামণি ঘোষ বলেন, ‘‘শহরেই তো কার্ড ব্যবহার করা মানুষের সংখ্যা যথেষ্ট কম। গ্রামে অবস্থাটা আরও খারাপ। কার্ডে দাম নেওয়ার কথা বললে মানুষ কি তা শুনবেন? সামান্য কয়েক টাকার ওষুধ কেনেন যাঁরা, তাঁদের কী হবে?’’ একই বক্তব্য ওষুধ বিক্রেতা সংগঠন বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের। সংগঠনের সম্পাদক সুবোধ ঘোষের কথায়, ‘‘গ্রামের দোকানে জ্বরজারি বা পেট খারাপের ওষুধ কিনতে গিয়ে যদি কেউ শোনেন যে, নগদ নয়, কার্ডে দাম দিতে হবে, তা হলে দোকানদারেরা তো স্রেফ মারধর খাবেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy