ইলিশের বাজার।—ফাইল চিত্র।
বর্ষা নামতেই ফের বাঙালির পাতে উঠতে শুরু করেছে ইলিশ। কোচবিহারে আবার কেউ কেউ বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদও পেতে শুরু করেছেন। সীমান্তের বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, প্রতিদিনই প্লাস্টিকে মোড়া প্যাকেটে বরফ ভর্তি করে কিছু ইলিশ এ পারে চলে আসছে। তার মধ্যে কিছু ভাগাভাগি হয়ে যাচ্ছে সীমান্তে। কিছু চলে যাচ্ছে স্থানীয় বাজারে। তার দামও স্থানীয় ইলিশের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি।
দিনহাটা থেকে শুরু করে মেখলিগঞ্জের সীমান্ত এলাকায় ওই বাংলাদেশি ইলিশ পেতে অনেকেই ঘোরাফেরা করছেন। বাংলাদেশের ওই ইলিশ সরাসরি চ্যাংরাবান্ধা দিয়ে আমদানি করার ব্যবস্থার দাবি তুলেছেন স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা। ইতিমধ্যে চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, এখন একটি বাংলাদেশি ইলিশ পেতে হলে এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এর পরেও প্রতিদিন তা পাওয়া যায় না। আগাম বরাত দিয়ে রাখতে হয়। গীতালদহের বাসিন্দা মইনুল হক বলেন, “বাংলাদেশের ইলিশ পাতে পড়লে মন জুড়িয়ে যায়। খাওয়ার পরেও বার বার হাত শুঁকে আনন্দ নেওয়া যায়। দুই দিন আগে বাজার থেকে কিনেছি। দাম একটু বেশি।”
চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অজয় প্রসাদ বলেন, “ইলিশের চাহিদা রয়েছে, বাজারও রয়েছে। সে কথা জানিয়ে আমরা আমদানির ইচ্ছার কথা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছি। সেক্ষেত্রে এখানে একটি স্বাদ পরীক্ষার ল্যাবরেটোরি প্রয়োজন। আশা করছি এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নেবেন।” বাসিন্দারাও ওই ব্যাপারে একমত। কোচবহার শহরের বাসিন্দা প্রাথমিক শিক্ষক বিল্লোল সরকার জানান, ‘‘ভাল ইলিশ পেতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বাংলাদেশের ইলিশের জন্য তো দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয়। কখনও কখনও তা বাজারে মেলে।’’ তিনি বলেন, “ওই মাছ চ্যাংরাবান্ধা নিয়ে আসার ব্যবস্থা হলে অনেক ভাল হবে। আশা করি সেক্ষেত্রে পদ্মার ইলিশ যেমন বাজারে পাওয়া যাবে, দামও কম থাকবে।”
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে জানা যায়, বাংলাদেশের ইলিশের খোঁজে অনেকেই বাজার তোলপাড় করেন। বর্তমানে কোচবিহারে যে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে তাঁর বড় অংশ আসছে ওড়িশা ও ডায়মন্ডহারবার থেকে। ওই ইলিশের ওজন তিনশো থেকে চারশো গ্রাম। কেজি প্রতি চারশো টাকা দরে বাজারে ওই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। আবার এর মধ্যে যে ইলিশগুলি একটু ভাল মানের, ওজনে বেশি সেগুলি বাংলাদেশের ইলিশ বলে বিক্রি করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে। পাইকারি মাছ ব্যবসায়ী রবীন দাস বলেন, “দু’দিন ধরে প্রচুর ইলিশ এসেছে। সব সময় তা পাওয়া যায় না। বাংলাদেশের ইলিশ পাই না।’’
দিনহাটার গীতালদহ, সিতাই, মেখলিগঞ্জের চ্যাংরাবান্ধা এলাকায় অবশ্য ওই ইলিশ মাছ পাওয়া যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ওই ইলিশ। এক হাজার টাকা থেকে শুরু হচ্ছে। তার উপরেও দর যাচ্ছে। বিএসএফের নজর এড়িয়ে ইলিশও ঢুকছে ছোট ছোট প্যাকেটে।
সীমান্তের এক মাছ ব্যবসায়ী জানান, ওপাশ থেকে সরাসরি বাজারে ওঠে ইলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy