Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সাঁওতালি ভাষা অবহেলিত, বিক্ষোভ আদিবাসীদের

সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে প্রকাশ্য বিক্ষোভ সমাবেশ করলেন আদিবাসীরা। সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সর্বভারতীয় সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর উদ্যোগে এ দিন দিনভর ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কের সামনে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

শহরে আদিবাসীদের সশস্ত্র জমায়েত। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

শহরে আদিবাসীদের সশস্ত্র জমায়েত। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবিতে বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে প্রকাশ্য বিক্ষোভ সমাবেশ করলেন আদিবাসীরা।

সাঁওতাল সম্প্রদায়ের সর্বভারতীয় সর্বোচ্চ সামাজিক সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর উদ্যোগে এ দিন দিনভর ঝাড়গ্রাম শহরের রবীন্দ্রপার্কের সামনে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ছিলেন সংগঠনের সর্বভারতীয় প্রধান কর্মকর্তা (দিশম পারগানা) নিত্যানন্দ হেমব্রম। সমাবেশে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান, দার্জিলিংয়ের মতো বিভিন্ন জেলা থেকে আদিবাসী মানুষজন যোগ দেন। ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ও অসম থেকেও আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিরা হাজির ছিলেন। তিন, ধনুক, টাঙি, বল্লমের মতো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মিছিল করে সমাবেশে যোগ দেন কয়েক হাজার আদিবাসী নারী-পুরুষ। উদ্যোক্তাদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে একাধিক আদিবাসী সংগঠনের নেতারাও সমাবেশে হাজির ছিলেন।

অরাজনৈতিক এই কর্মসূচিতে সমালোচনার মূল লক্ষ্য অবশ্য ছিল রাজ্য সরকার। সমাবেশ চলাকালীন আদিবাসী সমাজের কয়েকজন প্রতিনিধি ঝাড়গ্রাম এসডিও অফিসে গিয়ে মহকুমাশাসক নকুলচন্দ্র মাহাতোর কাছে ২৪ দফা দাবি সম্বলিত প্রতিনিধিমূলক স্মারকলিপি জমা দেন। সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে লেখা ওই স্মারকলিপির মূল দাবিগুলি হল, সরকারি একলব্য স্কুলের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়া চলবে না। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত সাঁওতালি ভাষা জানা শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকস্তরে যথেষ্ট সংখ্যায় স্কুল চালু করতে হবে। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়স্তর পর্যন্ত পৃথক সাঁওতালি এডুকেশন বোর্ড গঠন ও সাঁওতালি সিলেবাস কমিটি গঠন করতে হবে। সাঁওতালি পার্শ্বশিক্ষকদের কার্যকালের মেয়াদ ৬০ বছর পর্যন্ত করতে হবে। প্রতিটি স্কুলে বাধ্যতামূলক ভাবে আদিবাসী হস্টেল চালু, সমস্ত সরকারি অফিস-আদালতে সাঁওতালি ভাষাকে মান্যতা দিতে হবে। সাঁওতালি মাধ্যমে শিক্ষক শিক্ষণ কলেজ ও প্রতিষ্ঠান গড়তে হবে। যে সব কলেজে সাঁওতালি ভাষায় পঠন পাঠন চালু রয়েছে, সেখানে স্থায়ী প্রফেসর, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ও অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর নিয়োগ করতে হবে। এ ছাড়াও বেশ কিছু উন্নয়নমূলক, সামাজিক ও ধর্মীয় দাবিও করা হয়েছে। এ দিন পুলিশের অনুমতি ছাড়াই এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল।

ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রধান কর্মকর্তা (জেলা জগ পারগানা) রবিন টুডু বলেন, “পুলিশের কাছে লিখিত অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। পুলিশ অনুমতি দেয়নি। নিজেদের অস্তিত্বরক্ষার স্বার্থে সমাবেশ করেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

protest march santhali language jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE