Advertisement
E-Paper

ই-শ্রম কার্ড করে দেওয়ার নামে শ্রমিকদের তথ্য হাতানোর অভিযোগ, বাঁকুড়ায় গ্রেফতার ১০

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৪০

—ফাইল চিত্র।

ই-শ্রম কার্ড করে দেওয়ার নামে রেলের ঠিকাদারের অধীনে কর্মরত শ্রমিকদের কাছ থেকে তথ্য হাতানোর অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়ার ছাতনা থানার পুলিশ। নিজেদেরকে রেলের শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি দাবি করে ওই দশ জন বাঁকুড়ার ঝাঁটিপাহাড়ি স্টেশনের সাইডিংয়ে কর্মরত শ্রমিকদের বিভিন্ন নথি ও বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছিল বলে অভিযোগ। বুধবার ধৃতদের বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করে ছাতনা থানার পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন আগে ঝাঁটিপাহাড়ি স্টেশন লাগোয়া সাইডিংয়ে ঠিকাদারের অধীনে কর্মরত শ্রমিকদের কাছে হাজির হন ভাল পোশাক পরা ১০ জন । তাঁরা নিজেদের রেলের শ্রমিক সংগঠনের কর্মী হিসাবে পরিচয় দিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপ জমান। এর পরেই ই-শ্রম কার্ড তৈরি করলে শ্রমিকেরা বিভিন্ন ধরনের সরকারি সুযোগসুবিধা পাবেন, এই দাবি করে শ্রমিকদের ই-শ্রম কার্ড তৈরি করে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। শ্রমিকদের একটা বড় অংশ ওই ১০ জনের কথায় বিশ্বাস করে তাঁদের হাতে নিজেদের আধার কার্ড ও প্যান কার্ডের তথ্য তুলে দেন। অভিযোগ, শ্রমিকদের কাছ থেকে বায়োমেট্রিক তথ্যও সংগ্রহ করেন অভিযুক্তেরা । পুলিশের ধারণা, গত কয়েক দিনে প্রায় ২০০-২৫০ জন শ্রমিকের তথ্য এ ভাবে সংগ্রহ করে নেন ১০ জনের ওই দল। মঙ্গলবার বিকেলের দিকে ওই ১০ জনের আচরণে শ্রমিকদের প্রাথমিক সন্দেহ হয়। তাঁরা ওই ১০ জনের পরিচয় নিশ্চিত করতে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। স্থানীয়দের দাবি, এতেই অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেন ১০ জন। সন্দেহ তীব্র হওয়ায় শ্রমিকেরাই ছাতনা থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়। অভিযোগ, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন ওই দশ জন। নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করার ব্যাপারে তাঁদের বেশ কয়েক ঘণ্টা সময়ও দেয় পুলিশ। কিন্তু তার পরেও ওই ১০ জন ব্যক্তি নিজেদের পরিচয় নিশ্চিত করতে না পারায় তাঁদের সকলকে আটক করা হয়। পরে শ্রমিকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত ১০ জনকেই গ্রেফতার করে ছাতনা থানার পুলিশ। ধৃত ১০ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করে হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত ১০ জনের মধ্যে দু’জনের বাড়ি পুর্ব বর্ধমান, এক জনের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা ও বাকি সাত জনের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন গ্রামে। ধৃত ১০ জনের আসল পরিচয় জানার চেষ্টা চালানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের তথ্য হাতানোর পিছনে তাঁদের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে ওই ১০ জন কমবেশি অন্তত ২৫০ শ্রমিকের বিভিন্ন নথি ও বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছিল বলে আমাদের ধারণা। শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ঝাঁটিপাহাড়িতে যায়। কোন নথি বা অনুমতির ভিত্তিতে ওই দশ জন এ ভাবে শ্রমিকদের কাছে তথ্য সংগ্রহ করছে, তা জানতে চাওয়া হয়। তাঁদের বেশ কয়েক ঘণ্টা সময়ও দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সময়ের মধ্যে কোনও নথি বা অনুমতি দেখাতে না পারায় তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’ ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী রঞ্জিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘ধৃতেরা প্রত্যেকেই ভদ্র এবং নির্দোষ। তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অসৎ উদ্দেশ্যে তথ্য সংগ্রহের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy