‘হাজার পনেরো টাকা পেলে কোলের ছেলেটাকে দিয়ে দিতাম!’
— বৃহস্পতিবার সকালে এমন কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন রামপুরহাট হাসপাতালের কাছের তেলেভাজার দোকানে উপস্থিত লোকজন। শুরু হয়ে যায় মুখ চাওয়াচায়ি। মা হয়ে এ কেমন কথা! সেই ভিড় থেকেই কারও সংশয়, ‘পাচারকারী নয় তো।’ একপ্রস্ত মারধরও হয়। শেষে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এবং, সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে বিক্রি করার চেষ্টার অভিযোগে ওই তরুণী এবং তাঁর মাকে আটক করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জেনেছে, বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কের জেরে সদ্য মা হয়েছেন ওই তরুণী। সদ্যোজাত ছেলের আবার অপুষ্টিজনিত সমস্যা রয়েছে। তারই চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর অঞ্চল থেকে মায়ের সঙ্গে হাসপাতালে এসেছিলেন ওই বধূ। চিকিৎসককে দেখানোর পরে কাছের এক তেলেভাজার দোকানে বসেছিলেন ওঁরা। সেখানেই কথায় কথায় ‘ছেলে বিক্রির’ কথা পাড়েন। ওই তরুণী পুলিশকে জনিয়েছেন, বছর চারেক আগে তাঁর স্বামী ছেড়ে চলে যায়। আগের পক্ষের তিন বছরের একটা মেয়ে আছে।
সম্প্রতি গ্রামেরই পড়শি এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক হয়। সে-ও এখন তরুণীকে ছেড়ে চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় সদ্যোজাত ছেলেকে নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না তাঁরা। থানায় বসে ওই তরুণী বলেন, ‘‘অভাবের সংসার। একপ্রকার বাধ্য হয়েই ভেবেছিলাম ছেলেটার দায়ভার যদি কেউ নিত। সেটাই ওই দোকানে বসে লোকজনকে বলেছিলাম।’’ তরুণীর মা অবশ্য পুলিশের কাছে ভুল স্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অভাবের তাড়নাতেই এমনটা হয়েছে। আমরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছি।’’
রামপুরহাটের এসডিপিও ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে আমাদের মনে হয়েছে অভাব তার উপরে অপুষ্ট শিশু। সব মিলিয়ে দুঃশ্চিন্তায় শিশুবিক্রির কথা বলে ফেলেছিলেন। আমরা বুঝিয়েছি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ছেলেকে ওনারাই মানুষ করবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy