E-Paper

পুরভবন চত্বরে সিরাপের শিশির স্তূপ, উঠছে প্রশ্ন

স্থানীয়দের একাংশের আশঙ্কা ঝালদা শহরের তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ কাশির সিরাপের নেশায় বুঁদ হচ্ছে। সিরাপের দাম কম, গন্ধ ছড়ায় না। সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ে তরুণ তুর্কিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১৬
কাশির সিরাপের খালি বোতলের স্তুপ |ঝালদা পুরভবন চত্বরের একটি ছাদে |

কাশির সিরাপের খালি বোতলের স্তুপ |ঝালদা পুরভবন চত্বরের একটি ছাদে | ছবি-দেবাশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় |

স্তূপাকারে জমে কাশির সিরাপের বোতল। ঝালদার পুরভবন চত্বরে নির্মীয়মান দ্বিতলের ছাদেই দেখা গেল এমন ছবি। তাহলে কি সকলের অগোচরে কাশির সিরাপের নেশার আড্ডা জমছে ঝালদা পুর ভবন চত্বরেই? প্রশ্ন তুলছেন শহরবাসীর একাংশ।

বাস স্ট্যান্ড থেকে পুরভবন লাগোয়া লিহির বাঁধ ধরে এগোলেই দেখা যেত কাশির ওষুধের শিশি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এ বার সেই শিশির পাহাড় মিলেছে পুরভবন চত্বরে পুরসভারই একটি নির্মীয়মান দ্বিতলের ছাদে। নেশাড়ুদের ঘাঁটি কি তবে পুরসভা চত্বর? যদিও এ নিয়ে পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়ালের দাবি, “বোতলগুলির ধরন দেখে বোঝা যাচ্ছে অনেক দিনের পুরনো। আগে সন্ধ্যার পরে পুরভবনের গেট খোলা থাকত। সেই সুযোগে নেশাড়ুদের আসরও বসত এই চত্বরে। কিন্তু এখন তা সম্ভব নয়। এখনঅফিসের সময় পেরলেই গেটে তালা পড়ে যায়। তাই আসর বসার প্রশ্নই উঠে না।”

তাঁর আরও দাবি, “নির্মাণ কাজের জন্য সাফাই করতে গিয়ে এখনও পর্যন্ত দু’ট্রাক্টর সিরাপের বোতল ফেলা হয়েছে। এখনও আরও বাকি।”

তবে স্থানীয়দের একাংশের আশঙ্কা ঝালদা শহরের তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ কাশির সিরাপের নেশায় বুঁদ হচ্ছে। সিরাপের দাম কম, গন্ধ ছড়ায় না। সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ে তরুণ তুর্কিরা। স্থানীয় অসিত কান্দু বলেন, “শিকড়টা গভীরে ছড়িয়ে গিয়েছে। পুরোপুরি উপড়ে ফেলতে হলে সামাজিক সচেতনতা দরকার।” পুলিশেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড থেকে চোরাপথে কাশির সিরাপ আসছে ঝালদায়। তা অবৈধ ভাবে বিক্রি হচ্ছে। শহরের কয়েকটি ওষুধের দোকানের বিরুদ্ধে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই লুকিয়ে ওই সিরাপ বিক্রির অভিযোগও ওঠে। এমনকি কাশির সিরাপ বেচতে গিয়ে অতীতে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন কোনও কোনও ঘরের বধূও।

এলাকার কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি বিপ্লব কয়ালের দাবি, “সিরাপের রমরমা রুখতে পুলিশ মাঝে মধ্যেই অভিযান চালায়। ধরপাকড়ের পরে মামলা-মোকদ্দমাও হয়। তবু সমূলে উৎপাটন সম্ভব হয়নি।” সমাজের স্বার্থে সবাইকে একযোগে পথে নামার ডাক দিয়েছেন তিনি।

পুলিশও জানিয়েছে, সচেতনতা প্রচারের পাশাপাশি কাশির সিরাপের কারবার রুখতে আরও কড়া অভিযানের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। নজর রাখা হচ্ছে কয়েকটি ওষুধের দোকানের উপরে। সিরাপের নেশার ঘোর কাটিয়ে কবে ফিরবে ঝালদা শহরের হুঁশ, অপেক্ষায় বাসিন্দারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jhalda Municipality

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy