E-Paper

সংসার চলবে কেমন করে, প্রশ্ন মন্ত্রীকে

এ দিনও মৃত দু’জনের বাড়িতে রান্না বন্ধ ছিল। পাশের বাড়ি থেকে ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল। প্রতিবেশীরা পাশে থাকার চেষ্টা করছেন দুই পরিবারের।

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৩ ০৯:২১
An image of crowd

মৃত পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিবারের পাশে মন্ত্রী। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

তিন দিনের ব্যবধানে পাইকর থানার চার পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু। এই ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বহু প্রশ্ন উঠছে এলাকায়। মঙ্গলবার বিকেলে চার শ্রমিকের বাড়ি যান ক্ষুদ্র মাঝারি ও বস্ত্র মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, মুরারইয়ের বিধায়ক মোশারফ হোসেন, বিডিও (মুরারই ২) মহম্মদ নাজির হোসেন ও পাইকর থানার ওসি শেখ কাবুল আলি। মন্ত্রীর আশ্বাস, ‘‘শিশুদের পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়া হবে। মৃতদের পরিবারের পাশে আছি।’’

শনিবারই ওড়িশায় সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে মৃত্যু হয় পাইকর থানার নয়াগ্রামের দুই যুবকের। দু’টি দেহ যেদিন গ্রামে পৌঁছয় সেই সোমবারই দুই কিলোমিটার দূরে পাশের গ্রামের বাসিন্দা দুই পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুর খবর আসে। মুম্বইয়ের কান্দিভলিতে নির্মাণের কাজ করছিলেন আফিউদ্দিন শেখ ও ছোটু শেখ। পাইকরের থানার লক্ষ্মীডাঙা গ্রামের ওই দুই যুবক তেরো তলা থেকে কোমরের বেল্ট ছিঁড়ে পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দু’জনের মৃত্যু হয়।

ওই দুই শ্রমিকের পরিবারের দাবি, অন্য শ্রমিক ও স্থানীয়দের একাংশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, বহুতল নির্মাণের যে বাঁশের কাঠামো বানানো হয়েছিল তা বর্ষার জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে বেল্ট ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছিল তাও বেশ কয়েক বছরের পুরনো। অনেকেই নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। গ্রামের বাসিন্দারা এই দুর্ঘটনার জন্য নির্মাণ সংস্থাকে দায়ী করেছেন। দেহ গ্রামে পৌঁছে দেওয়া ও ক্ষতিপূরণের দাবিও জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত দেহ ময়নাতদন্ত হয়নি বলে পরিবার জানায়। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘সোমবার মৃত্যু হয়েছে। কবে ময়নাতদন্ত হবে আর কবে দেহ বাড়িতে আসবে?’’

এ দিনও মৃত দু’জনের বাড়িতে রান্না বন্ধ ছিল। পাশের বাড়ি থেকে ছোট ও বৃদ্ধদের জন্য খাবার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল। প্রতিবেশীরা পাশে থাকার চেষ্টা করছেন দুই পরিবারের। মঙ্গলবার বিকেলে মন্ত্রী ও বিধায়ক চার পরিবারের বাড়ি দিয়ে পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সরকারি সাহায্য ও খামে ভরে টাকা দিতে দেখা যায়।

মৃত ছোটুর বাবা আয়রাতি শেখ মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, ‘‘সংসার কেমন ভাবে চলবে? দেহ নিয়ে আসার টাকা নেই। প্রশাসন সাহায্য না করলে না খেয়ে মরতে হবে।’’ উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘রাজ্য থেকে কত পরিযায়ী শ্রমিক ভিন্‌ রাজ্যে আছেন তার কোনও নথি ছিল না। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য পরিযায়ী কল্যাণ বোর্ড রাজ্য সরকার তৈরি করেছে। সেই বোর্ডে বিধায়ক আছেন। তিনি দেখবেন। এ ছাড়াও সকল সরকারি সুযোগ সুবিধে ও দেহ নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Death Migrant Workers

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy