নিয়োগে দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম এবং স্বজনপোষণের তদন্তে এ বার বিশ্বভারতীর অধিকর্তা, আধিকারিক, প্রাক্তন ও বর্তমান অধ্যাপকদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করল সিবিআই। সোমবার সিবিআই-এর অতিরিক্ত পুলিশসুপার শান্তনু করের নেতৃত্ব পাঁচ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল শান্তিনিকেতনে আসেন। ঘণ্টা তিনেকের কিছু বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ওই সকল ব্যক্তিদের। যদিও, তদন্তে অগ্রগতি এবং জেরার প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে চাননি শান্তনুবাবু।
বিশ্বভারতী ও সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে দফায় দফায় বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় দফতরের দোতলার সভাকক্ষ এবং পদ্মভবন লাগোয়া ওই দফতরের নতুন ভবনে যান পাঁচ সদস্যের তদন্তকারী দল। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব দেবাসিশ চক্রবর্তীর সঙ্গে রবিবার কথা বলে প্রয়োজন মোতাবেক এ দিন কিছু নথি চেয়ে নেন। কেন্দ্রীয় দফতরের সভা কক্ষে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। ঘণ্টা তিনেকের কিছু বেশি সময় ধরে চলে সেই পর্ব। সিবিআই সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বর্তমান অধিকর্তা তথা তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মণিমুকুট মিত্র, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবব্রত দাশগুপ্ত, পদার্থবিদ্যার প্রাক্তন অধ্যাপক প্রিতম প্রসাদ রায়, তুলনামূলক ধর্ম ও দর্শনের বর্তমান অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম এবং আধিকারিক প্রশান্ত মেশরমকে। যাঁরা নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়, কমিটি এবং আর্থিক লেনদেন বিষয়ে যুক্ত ছিলেন।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন বরখাস্ত উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে, নিয়োগে অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি, পদোন্নতি, স্বজনপোষণ-সহ বহু অভিযোগ জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে। নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নানা সুবিধা সুযোগ পাইয়ে দেওয়া, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে নিয়োগ, পদ তৈরি সহ স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি করে। তাঁদের রিপোর্টে বরখাস্ত হন সুশান্ত। সিবিআই তদন্তের আর্জিতে, সংশ্লিষ্ট সব স্তরে দ্বারস্থ হয়েছিল জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি। যার জেরে আর্থিক অসঙ্গতি, নিয়োগে দুর্নীতি-সহ নানা অনিয়ম বেনিয়মের অভিযোগে তদন্তে নেমেছে সিবিআই।
চলতি বছর এই নিয়ে তিন বার সিবিআই এল শান্তিনিকেতনে।
প্রথমবার ২৪ মে এসে বিভিন্ন দফতর, সুশান্তবাবুর বাড়ি-সহ একাধিক জায়গা ঘুরে তথ্য ও নথি সংগ্রহ করেছিল দেশের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা। ২৮ জুন এসে নিয়োগ, আর্থিক লেনদেন সহ বহু নথি সংগ্রহ করেছিল একটি প্রতিনিধি দল। এবং সোমবার ফের পাঁচ সদস্যের দল জিজ্ঞাসাবাদে শান্তিনিকেতন আসে। তবে এ সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে বিশ্বভারতীর কোনও অধিকর্তা ও অধ্যাপকেরা মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy