Advertisement
০৪ মে ২০২৪
West Bengal Lockdown

‘লকডাউন’-এর মধ্যেও পুজোয় অনড় দুই কমিটি

উদ্যোক্তারা দাবি করছেন, তাঁরা যাবতীয় সতর্কতা মেনেই যাবতীয় আয়োজন করছেন। 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বিষ্ণুপুর ও পাড়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২০ ০২:৫৬
Share: Save:

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে চলছে ‘লকডাউন’। খুব দরকার না পড়লে বাড়ির বাইরে না বেরোতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে পুরুলিয়া আর বাঁকুড়ার দু’জায়গায় বারোয়ারি বাসন্তীপুজোর আয়োজনের খবর এল। প্রশাসনের দাবি, পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে সামাজিক ভাবে পুজোর আয়োজন স্থগিত রাখার আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু উদ্যোক্তারা দাবি করছেন, তাঁরা যাবতীয় সতর্কতা মেনেই যাবতীয় আয়োজন করছেন।

দাবি করলেও বিষ্ণুপুর নিমতলা ষোলোআনা কমিটি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কী ভাবে পুজো কররবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কমিটির সম্পাদক লালু ঘোষ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সপ্তমীর পুজো শুরুর আগে পাঁচ জন ঘট ভরতে যাবেন কৃষ্ণবাঁধে। সঙ্গে থাকবেন দু’জন ঢাকি।’’ তিনি জানান, বাঁশের প্যান্ডেল হয়েছে। তাতে আর কাপড় ঝোলানো হবে না। পুজোর দিনগুলিতে মন্দিরে থাকবেন দুই পুরোহিত। বাইরে থাকবেন এক জন।

কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, ভক্তদের ভিড় যাতে না হয়, তা দেখতে রাখা হচ্ছে পাঁচ জন স্বেচ্ছাসেবককে। কমিটির তরফে তাঁদের পরিচয়পত্রও দেওয়া হয়েছে। লালুবাবু বলেন, ‘‘এক জন-দু’জন করে ভক্ত পুজোর সরঞ্জাম নিয়ে যাবেন। তবে মন্দিরে ঢোকা নিষিদ্ধ। আমরা মাইকে সেই সব নির্দেশ ঘোষণা করে দিয়েছি।’’ জমায়েত না করার বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে মণ্ডপের সামনে।

মন্দিরের পুরোহিত দুর্গাদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, “অষ্টমীর পুজোয় কয়েকহাজার মানুষের ভিড় হয়। এ বছর হবে না। মাইক বাজবে না। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না। দেবীর আরাধনা মানুষ বাড়িতে বসেই করবেন।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, দোলের দিন থেকেই নিমতলার বাসন্তীপুজোর প্রতিমা তৈরি শুরু হয়ে যায়। সারা বছর এলাকার মানুষ পুজোর অপেক্ষায় থাকেন।

স্থানীয় বাসিন্দা তাপস পাল, দীনবন্ধু গড়াই, শুভজিৎ দত্তেরা বলেন, ‘‘আমরা বুঝতে পারছি। কিন্তু বাচ্চাদের নিয়েই চিন্তা। পুজোর ঢাক বাজলে ওদের বাড়িতে আটকে রাখব কী করে?’’ মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল জানান, কোনও জমায়েত হবে না বলে পুজো কমিটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতি দিকে প্রশাসন নজর রাখব।’’

অন্য দিকে, পাড়া থানার দুবড়া গ্রামের দুবড়া ষোলোআনা কমিটিও বাসন্তীপুজো করছে। এ বার ওই পুজো তিন বছরে পড়ল। পুজো কমিটির সম্পাদক অশোক দত্তের কথায়, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী এই বছর পুজোটা করতেই হবে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, এলাকার বাসিন্দাদের ভাবাবেগে আঘাত লাগার আশঙ্কায় পুজো বন্ধ করা হয়নি।

উদ্যোক্তারা জানান, বেশ কিছু শর্তসাপেক্ষে অনুমতি মিলেছে। পুজো করবেন তিন জন পুরোহিত। সঙ্গে থাকবেন শুধু এক জন কর্মকর্তা। পুজো শেষ হওয়ার পরেই মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হবে। চার-পাঁচ জন ট্রাক্টরে করে প্রতিমা নিরঞ্জন করে আসবেন। অশোকবাবুর দাবি, পুজোর সময়ে যাতে লোকজন মন্দিরে ভিড় না করেন সেই ব্যাপারে কয়েক দিন ধরে গ্রামে মাইক নিয়ে প্রচার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Basanti Puja Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE