Advertisement
০৫ মে ২০২৪

দুই নাবালিকার বিয়ে বন্ধ

রাত পোহালেই বিয়ে হয়ে যেত দুই নাবালিকার। খবর পেয়ে বিয়ের আগের দিন ফের দুই নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। শনিবার বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার গোরাকাটা ও বিষ্ণুপুর থানার তেঁতুলাড়া গ্রামের ঘটনা। দুই পরিবারের কাছ থেকেই লিখিত মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খাতড়া শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৬ ০১:১৪
Share: Save:

রাত পোহালেই বিয়ে হয়ে যেত দুই নাবালিকার। খবর পেয়ে বিয়ের আগের দিন ফের দুই নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। শনিবার বাঁকুড়ার সিমলাপাল থানার গোরাকাটা ও বিষ্ণুপুর থানার তেঁতুলাড়া গ্রামের ঘটনা। দুই পরিবারের কাছ থেকেই লিখিত মুচলেকা নিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে।

বাঁকুড়া জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর সজল শীল শনিবার জানান, রবিবার রাতে সিমলাপাল থানার গোরাকাটা গ্রামের বছর পনেরোর এক আদিবাসী কিশোরীর সঙ্গে ওই এলাকার এক যুবকের বিয়ে দেওয়া হবে বলে খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ব্লক অফিসে এবং সিমলাপাল থানায় জানানো হয়। এ দিন সকালে চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি ও ব্লকের এক আধিকারিক পুলিশ নিয়ে ওই গ্রামে হাজির হন। পাত্রীর যে এখনও বিয়ের বয়স হয়নি তা মেয়েটির অভিভাবকদের তাঁরা বুঝিয়ে এখন বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। কিন্তু তাঁরা প্রথমে বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হননি। পরে আইনি সমস্যার কথা জানানোর পরে তাঁরা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন।

তিনি জানান, বিষ্ণুপুরের তেঁতুলাড়া গ্রামের বছর ষোলোর এক স্কুলছুট কিশোরীরও বিয়ে ঠিক হয়েছিল। আজ রবিবার ওই কিশোরীর সঙ্গে বিষ্ণুপুরের এক যুবকের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। খবর পেয়ে এ দিন দুপুরে ওই গ্রামে ব্লক আধিকারিক ও পুলিশ নিয়ে চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধিরা যান। মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা বিয়ে বন্ধ করেন। জেলা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর জানিয়েছেন, ১৮ বছরের আগে ওই দুই কিশোরীর বিয়ে দেওয়া হবে না বলে পরিবারের লোকজন লিখিত মুচলেকা দিয়েছেন।

এত কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে অপরাধ সে কথা মেনে নিয়েছেন ওই দুই কিশোরীর বাবা। তবে তাঁদের দাবি, ভাল পাত্র পেয়ে দুই পরিবারই এই বিয়েতে রাজি হয়েছিলেন। তাই তাড়াতাড়ি বিয়েটা দিতে চেয়েছিলেন। প্রশাসনের কথা মেনে তবে এখন আর তাঁরা বিয়ে দিচ্ছেন না।

এ দিকে, কমবয়সী যে সব মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের অধিকাংশেরই নাম কন্যাশ্রী প্রকল্পে নথিভুক্ত। তা সত্ত্বেও কিছু এলাকার মানুষ যে কমবয়েসে ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তা বারবারই প্রকাশ্যে আসছে। খবর পেলে প্রশাসনের তরফে বিয়ে বন্ধ করা হচ্ছে। সব নাবালিকার বিয়েই যে আটকানো যাচ্ছে, তাও জোর দিয়ে প্রশাসনের আধিকারিকরা বলতে পাচ্ছেন না।

এই অবস্থায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেমেয়েদের বিয়ে দেওয়া যে অনুচিত ও বেআইনি কাজ তা বোঝাতে এ বার প্রচার অভিযানে নেমেছে জেলা চাইল্ড লাইন। সজলবাবু জানিয়েছেন, শনিবার সকালে খাতড়ার তেঁতুলচিটা গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে ‘বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ’ শীর্ষক একটি সচেতনতা শিবির করা হয়।

শিবিরে ছেলেদের ২১ বছর ও মেয়েদের ১৮ বছরের আগে বিয়ে দিলে শারীরিক ভাবে কত ক্ষতি হয় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। শিবিরে খাতড়ার মহকুমাশাসক অভিষেক তিওয়ারি-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। শিবিরে হাজির ছিল এলাকার অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির প্রায় ১০০ জন পড়ুয়া ও মহিলারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

child marrige bishnupur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE