Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বৃদ্ধাশ্রমে স্মৃতি ফিরিয়ে দিল পিঠে

মঙ্গলবার বিকেল বাঁকুড়া শহরের উপকণ্ঠে বিকনা এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে কাটালেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে চলল পিঠে খাওয়া।

মিষ্টি-মুখ। বাঁকুড়ার বিকনায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

মিষ্টি-মুখ। বাঁকুড়ার বিকনায়। ছবি: অভিজিৎ সিংহ

নিজস্ব সংবাদদাতা
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৩০
Share: Save:

এক সময় তাঁরাই মকর সংক্রান্তির দিন চালগুঁড়ি, নারকেল নিয়ে পিঠে তৈরি করতে বসতেন। ছেলেপুলেদের পাতে তুলে দিতেন পুরপিঠে, পাটিসাপটা, মালপোয়া, ক্ষীরপিঠে। এখন তাঁদেরই ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম। স্মৃতিতে কাতর মানুষগুলোকে এ বার বৃদ্ধাশ্রমেই পিঠে খাওয়ানোর সুযোগ করে দিল বাঁকুড়ার মহিলাদের একটি সংগঠন।

মঙ্গলবার বিকেল বাঁকুড়া শহরের উপকণ্ঠে বিকনা এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সঙ্গে কাটালেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে চলল পিঠে খাওয়া।

ওই বৃদ্ধাশ্রমের বছর আশির এক আবাসিক বৃদ্ধা বলেই ফেললেন, “সকাল থেকেই মনটা খুব খারাপ ছিল। এক সময় এই মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বাড়িতে পিঠে তৈরি করার ধুম পড়ে যেত। কিন্তু, এখন সে দিন আর নেই। অনেক বছর পরে মন ভরে পিঠে খেলাম।”

প্লেটে সাজানো গুড়ের সঙ্গে গড়গড়ে, দুধ পুলি বা পাটিসাপটার মতো পিঠে মুখে পুরতে পুরতে একই কথা বলে যাচ্ছিলেন অনেকেই। সত্তরোর্ধ্ব এক আবাসিকের কথায়, “মকর সংক্রান্তির দিন মানেই সকাল সকাল স্নান সেরে বাড়িতে পিঠে খেতে বসা। কত স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছিল। এ দিন সকাল থেকেই ভাবছিলাম হয়তো এ বারও পিঠে খাওয়া হবে না। যাক মনের স্বাদ মিটল।”

শুধু পিঠে খাওয়াই নয়, ওই সংগঠনের সদস্যাদের সঙ্গে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও যোগ দিলেন আবাসিকেরা। কেউ শোনালেন গান, কেউ আবার স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শোনালেন।

উদ্যোক্তা সংগঠনের সম্পাদক সমাপ্তি মুখোপাধ্যায় ও অন্যতম সদস্যা কবিতা সেনদত্ত ও বলেন, “বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের একটা সুন্দর বিকেল উপহার দিতে চেয়েছিলাম আমরা। তিন দিন আগেই এই পরিকল্পনা হয়। সদস্যেরা নিজের বাড়িতেই পিঠে বানিয়ে এনেছিলেন। তাঁরাও খেয়ে তৃপ্তি পেয়েছেন। এটাই আমাদের বড় পাওনা।”

এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের শিক্ষক অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের আনন্দ দিতে আগেও এখানে আমরা রবীন্দ্রজয়ন্তী পালন করেছিলাম। আবাসিকেরাও নিজেরা নাটক পরিবেশন করেছিলেন। নিজেদের আনন্দ এই বয়স্ক মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়াটা আমাদের কাছে সৌভাগ্যের।” বৃদ্ধাশ্রমের তরফে উজ্জ্বল গঙ্গোপাধ্যায় জানান, আশ্রমের সমস্ত আবাসিক একটা অন্যরকম দিন উপহার পেলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cake Old Age Home Bankura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE